জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী বলেছেন, গত ১৪ বছরে দেশের স্বাস্থ্য খাতে অভূতপূর্ব উন্নয়ন হয়েছে। আগে যেসব রোগের জন্য রোগীরা বিদেশ যেতেন, বর্তমানে সেসব রোগের চিকিৎসা দেশেই হচ্ছে। ফলে অর্থ ও সময় ব্যয় করে চিকিৎসার জন্য রোগীদের আর বিদেশ যেতে হয় না।
মঙ্গলবার (২৮ নভেম্বর) রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের প্রথম পুনর্মিলনীতে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী বলেন, ‘আমাদের চিকিৎসা ব্যবস্থা যথেষ্ট উন্নতি লাভ করেছে। চিকিৎসকদের দক্ষতাই এর বড় উদাহরণ। ব্যয়বহুল অসংখ্য পরীক্ষা-নিরীক্ষা দেশে স্বল্পমূল্যে করা হচ্ছে। বিভিন্ন জটিল রোগের চিকিৎসাসহ শত শত জটিল অপারেশন দেশেই করা হচ্ছে। এমনকি কিডনি, লিভার, বোনমেরো ট্রান্সপ্লান্ট, হৃদরোগের বাইপাস ও নিউরোসার্জারিসহ অনেক চিকিৎসা এখন দেশেই হচ্ছে।’
তিনি বলেন, ‘অনেক চ্যালেঞ্জ থাকা সত্ত্বেও স্বাস্থ্যসেবা মানুষের দোরগোড়ায় এবং অনেক স্বল্প মূল্য পৌঁছানো সম্ভব হয়েছে। গত ১৪ বছরে সারা দেশে ৬ শতাধিক হাসপাতাল নির্মাণ, হৃদরোগ, ক্যানসার, নিউরো সায়েন্সসহ বিশেষায়িত অসংখ্য হাসপাতাল নির্মাণ হয়েছে। গ্রামাঞ্চলে প্রায় ১৮ হাজার কমিউনিটি ক্লিনিক ও ইউনিয়ন স্বাস্থ্য সেবা কেন্দ্র চালু করা হয়েছে। কমিউনিটি ক্লিনিক থেকে ৩০ ধরনের ওষুধ বিনামূল্যে দিচ্ছে সরকার।’
স্পিকার বলেন, ‘দেশে বর্তমানে ১১৫টি মেডিক্যাল কলেজ রয়েছে। অথচ, ২০০৯ সালেও মেডিক্যাল কলেজ ছিল মাত্র ৫০টি। শিক্ষার্থীদের জন্য এমবিবিএস আসন ছিল ২ হাজার ৫০টি। বর্তমানে ১০ হাজার ৭৮৯টিতে উন্নীত হয়েছে। সরকারি বেসরকারি ডেন্টাল কলেজের সংখ্যা ১৩টি থেকে ৩৭টিতে বৃদ্ধি পেয়েছে। পাঁচটি মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন করা হয়েছে। ২০ হাজার চিকিৎসক ও ৪০ হাজার নার্স-মিডওয়াইফ নিয়োগ দিয়েছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকার।’
সভাপতির বক্তব্যে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের র্যাংকিংয়ের উন্নয়নে অ্যালামনাই অ্যাসোশিয়েশন, জার্নাল ইনডেক্সিং, গবেষণা বৃদ্ধি, সাধারণ জরুরি বিভাগ চালু অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। বর্তমান প্রশাসন দায়িত্ব নেওয়ার পর সবগুলোই পূরণ করেছে। বঙ্গবন্ধুর হাতেই স্বাস্থ্য খাতের উন্নয়ন, তার কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাতেই তা কলেবরে বৃদ্ধি পেয়ে পূর্ণতা পেয়েছে। আমরা আশা করি, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শতায়ু লাভ করবেন এবং তার নেতৃত্বেই ২০৪১ সালের মধ্যে স্বাস্থ্য খাতসহ সব ক্ষেত্রে বাংলাদেশ উন্নত দেশের মর্যাদায় অধিষ্ঠিত হবে।’
বিশেষ অতিথি হিসেবে শিল্প মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব ও অ্যালানাই অ্যাসোসিয়েশনের সদস্য জাকিয়া সুলতানা দেশের স্বাস্থ্য খাতের অগ্রগতি, উন্নয়ন ও করণীয় বিশদভাবে তুলে ধরেন।
অনুষ্ঠানে শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন– বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (গবেষণা ও উন্নয়ন) অধ্যাপক ডা. মো. মনিরুজ্জামান খান। স্বাগত বক্তব্য রাখেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের সদস্য সচিব অধ্যাপক ডা. মো. শহীদুল্লাহ। অনুষ্ঠানে আরও ছিলেন সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো. নজরুল ইসলাম, অধ্যাপক ডা. কনক কান্তি বড়ুয়া, অধ্যাপক ডা. মাহমুদ হাসান, বর্তমান উপ-উপাচার্য (অ্যাকাডেমিক) অধ্যাপক ডা. একেএম মোশাররফ হোসেন, উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. ছয়েফ উদ্দিন আহমদ, সাবেক উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো. শহীদুল্লাহ শিকদার, অধ্যাপক ডা. মুহাম্মদ রফিকুল আলম, অধ্যাপক ডা. মো. রুহুল আমিন মিয়া, বর্তমান ডিন অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ হোসেন, অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ আলী আসগর মোড়ল, অধ্যাপক ডা. আবু নাসার রিজভী, অধ্যাপক ডা. দেবব্রত বনিক, অধ্যাপক ডা. দেবতোষ পাল, ইউজিসির অধ্যাপক ডা. সজল কৃষ্ণ ব্যানার্জী, প্রক্টর অধ্যাপক ডা. মো. হাবিবুর রহমান দুলাল প্রমুখ।