‘স্বাস্থ্য বাজেটের চেয়ে ১০ গুণ বেশি মূল্যের সেবা দেয় সরকারি হাসপাতাল’

স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেছেন, স্বাস্থ্য বাজেটে আমাদের ৪২ হাজার কোটি টাকা খরচ হলেও তার ১০ গুণ বেশি মূল্যের সেবা দেয় সরকারি হাসপাতাল। অর্থাৎ ৪ লাখ কোটি টাকার সমান সেবা দেয় সরকার।

মঙ্গলবার (১২ ডিসেম্বর) দুপুরে রাজধানীর হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে সার্বজনীন স্বাস্থ্য সুরক্ষা দিবসের অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।

জাহিদ মালেক বলেন, ‘আমাদের স্বাস্থ্য বাজেট ৪০-৪২ হাজার কোটি টাকা। ৪২ হাজার কোটি টাকা দিয়ে আমরা স্বাস্থ্য সেবা দিয়ে থাকি। কিন্তু এই সেবার বেসরকারি খরচ কত পড়ে সেটা কি আমরা ভেবে দেখেছি? সরকারি হাসপাতালে বেড খরচ শূন্য, প্রাইভেটে গেলে পাঁচ হাজার টাকা বেডের চার্জ। চিকিৎসকের ফি আছে ২ হাজার টাকা, এখানে শূন্য। অপারেশন, ওষুধ, বেসরকারিতে চার্জ থাকলেও সরকারিতে শূন্য। অর্থাৎ আমাদের ৪২ হাজার কোটি টাকা খরচ হলেও তার ১০ গুণ বেশি মূল্যের সেবা দেয় সরকারি হাসপাতাল।’

সরকারি হাসপাতালের সেবার মূল্যায়ন হয় না মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘এখন রোগী প্রতি মাথাপিছু ব্যয় ৬০ ডলার। সরকারি সেবা দেওয়া হয় আমার মতে ২৫০ ডলারের। যেহেতু সরকার ফ্রি দিচ্ছে, তাতে আমি মনে করি, অনেক টাকার সেবা সরকারি হাসপাতাল থেকে দেওয়া হয়ে থাকে। কিন্তু সেটার মূল্যায়ন আমরা করি না।’

তিনি বলেন, ‘আমাদের আগামীতে চেষ্টা করতে হবে, যাতে পুরোপুরি সার্বজনীন স্বাস্থ্য সুরক্ষা আমরা করে ফেলতে পারি। এটার একটা পাইলট স্কিম চলছে, স্বাস্থ্য সুরক্ষা কর্মসূচি। এটাকেই হয়তো সারা দেশে ছড়িয়ে দেওয়া যাবে। আমরা ফান্ডিংয়ের বিষয়ে আলোচনা করছি। ফান্ডিং ছাড়া তো হবে না। কারণ, সরকার ইতোমধ্যে ৪০-৪২ হাজার কোটি টাকা দিচ্ছে। সবার সঙ্গে মিলে কাজ করতে হবে। যতটুকু চেষ্টা করার এই ১০ বছরে সবার সঙ্গে মিলে করেছি। করোনা ফেস করছি, উন্নতি যতটুকু করার আমরা চেষ্টা করেছি সীমিত বাজেটের মধ্যে।’

স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা অনেকাংশে দেশের মানুষকে হেলথ কভারেজ দিয়েছি। যেমন-প্রাইমারি হেলথ কেয়ার বাংলাদেশে ফ্রি, ইপআই’র ভ্যাকসিন কভারেজ ফ্রি, সরকারি হাসপাতালে স্বাস্থ্য সেবা মোটামুটি ফ্রি। ওখানে চিকিৎসক-নার্সদের ফি দিতে হয় না, বেডের চার্জ নাই, অপারেশন চার্জ নাই, খাবার চার্জ নাই। সরকারি হাসপাতাল দরিদ্র রোগীদের চিকিৎসা বেশি দিয়ে থাকে। একটি নির্দিষ্ট গ্রুপের মানুষ বেসরকারি হাসপাতাল এবং বিদেশে চিকিৎসা নিতে যায়। তাছাড়া বেশিরভাগই সরকারি হাসপাতালের চিকিৎসা নেয়।’        

অনুষ্ঠানে আরও ছিলেন– বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার আবাসিক প্রতিনিধি বর্ধন জং রানা, স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের সচিব জাহাঙ্গীর আলম, স্বাস্থ্য শিক্ষা বিভাগের সচিব আজিজুর রহমান, স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. এবিএম খুরশীদ আলম, পরিবার পরিকল্পনা অধিদফতরের মহাপরিচালক সাহান আরা বানু, স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. মো. টিটু মিয়া, স্বাস্থ্য অর্থনীতি ইউনিটের মহাপরিচালক ড. মো. এনামুল হক প্রমুখ।