স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডা. সামন্ত লাল সেনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন ঢাকায় নিযুক্ত ভারপ্রাপ্ত ব্রিটিশ হাইকমিশনার ম্যাট ক্যানেল। এ সময় বাংলাদেশের চিকিৎসা ক্ষেত্রে সহায়তা করতে তার দেশের আগ্রহের কথা স্বাস্থ্যমন্ত্রীকে জানান ব্রিটিশ হাই কমিশনার।
রবিবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রীর দফতরে এ সাক্ষাৎকার অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় স্বাস্থ্য শিক্ষা বিভাগের সচিব আজিজুর রহমান ও স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক টিটু মিয়া স্বাস্থ্যমন্ত্রীর সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন।
সাক্ষাৎকালে ব্রিটিশ হাই কমিশনার বাংলাদেশের স্বাস্থ্য খাতের নানা উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ডের প্রশংসা করেন। করোনা মহামারিতে বাংলাদেশ বিশ্বের অনেক দেশের চেয়ে ভালো করেছে বলে জানান ব্রিটিশ হাই কমিশনার। বর্তমানে যুক্তরাজ্যে ৭ লাখ বাংলাদেশি রয়েছে বলেও উল্লেখ করেন তিনি। অনেক শিক্ষার্থী যুক্তরাজ্যে মেডিক্যালে পড়ালেখা করতেও যাচ্ছেন বলে জানান ব্রিটিশ হাই কমিশনার।
ব্রিটিশ হাই কমিশনার বাংলাদেশের চিকিৎসা ক্ষেত্রে সহায়তা করতে তার দেশের আগ্রহের কথা জানান স্বাস্থ্যমন্ত্রীকে। স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডা. সামন্ত লাল সেন এ প্রসঙ্গে ব্রিটিশ হাই কমিশনারের উদ্দেশে বলেন, ‘যুক্তরাজ্যের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক অনেক গভীর। বাংলাদেশ বর্তমানে উন্নয়নের অগ্রযাত্রায় এগিয়ে যাচ্ছে। বাংলাদেশের স্বাস্থ্য খাতেও ব্যাপক উন্নতি শুরু হয়েছে। করোনাকালেও বাংলাদেশে হাজার হাজার চিকিৎসক, নার্স নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। করোনা মোকাবিলায় বাংলাদেশ বিশ্বে পঞ্চম স্থান এবং দক্ষিণ এশিয়ায় চ্যাম্পিয়ন হয়েছে। বাংলাদেশে এখন দরকার চিকিৎসক, নার্সদের উপযুক্ত প্রশিক্ষণ দেওয়া।’
স্বাস্থ্যমন্ত্রী ব্রিটিশ হাই কমিশনারের কাছে চিকিৎসক ও নার্সদের উচ্চতর প্রশিক্ষণের জন্য বাংলাদেশে একটি বিশেষ প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট স্থাপনের অনুরোধ জানালে এটিকে গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনা করবে তার সরকার বলে জানান ব্রিটিশ হাই কমিশনার।
ব্রিটিশ হাই কমিশনার উভয় দেশের চিকিৎসক ও নার্সদের বেশি করে অঅিজ্ঞতা বিনিময়ের কথা বলেন। একইসঙ্গে যুক্তরাজ্য থেকে বাংলাদেশে অভিজ্ঞ চিকিৎসক ও নার্স পাঠানোর কথাও জানান তিনি।
আলোচনায় বাংলাদেশ ও যুক্তরাজ্য আরও টেকনোলিক্যাল সহায়তা বৃদ্ধি ও ভোকেশনাল ট্রেনিংয়ের ব্যাপারেও তাদের মাঝে কথা হয়। বাংলাদেশে যত্রতত্র অ্যান্টিবায়োটিকের ব্যবহার কমানো নিয়ে আরও কাজ করতে হবে বলে জানান ব্রিটিশ হাই কমিশনার। অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহার কমাতে বহুমাত্রিক উদ্যোগ বাংলাদেশ হাতে নিয়েছে বলে ব্রিটিশ হাই কমিশনারকে আশ্বস্ত করেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডা. সামন্ত লাল সেন।
আগামী ১০ বছরে বিশ্বে কোভিডের মতো আবারও কোনও পেন্ডামিক চলে আসতে পারে বলে চিকিৎসা ক্ষেত্রে বাংলাদেশের গবেষণা আরও বাড়ানো যায় কিনা সে ব্যাপারে ভাবার পরামর্শ দেন ব্রিটিশ হাই কমিশনার ম্যাট ক্যানেল। উভয় দেশে ভ্যাকসিন সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধি করা, স্বাস্থ্যসেবার হার বৃদ্ধি করা, চিকিৎসক এবং স্বাস্থ্যকর্মীদের প্রশিক্ষণ বিনিময় করা নিয়েও কথা বলেন তারা।