স্বাস্থ্যমন্ত্রীর ঝটিকা অভিযান: পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তাকে সাময়িক বরখাস্ত

স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডা. সামন্ত লাল সেন আকস্মিক সফরে যান সিলেটের জৈন্তাপুর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে। বুধবার (৬ মার্চ) তার এই সফরের সময় কর্মস্থলে ছিলেন না জৈন্তাপুর উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা (ভারপ্রাপ্ত) কর্মকর্তা রেন্টু পুরকায়স্থ। অনুমোদন ছাড়াই কর্মস্থলে অনুপস্থিত থাকার কারণে তাকে সাময়িক বরখাস্ত করার নির্দেশ দেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী। এ সংক্রান্ত চিঠি ইতোমধ্যে জারি করা হয়েছে।

অভিযানকালে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জৈন্তাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের অপারেশন থিয়েটার, পুরুষ ও মহিলা ওয়ার্ড রুম, স্টাফ কোয়ার্টারসহ বিভিন্ন কক্ষ ঘুরে দেখেন। তিনি রোগীদের সঙ্গে কথা বলেন এবং তাদের চিকিৎসার খোঁজ নেন। পরিদর্শনকালে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে বেশ কিছু অনিয়ম দেখতে পান স্বাস্থ্যমন্ত্রী। সেখানে কমপ্লেক্স চত্বরে চিকিৎসকদের ব্যক্তিগত চেম্বারের স্থান পরিবর্তন সংক্রান্ত বিজ্ঞাপন দেখে বিস্ময় প্রকাশ করে উপস্থিত স্বাস্থ্য কর্মকর্তাদের কারণ ব্যাখ্যা করার নির্দেশ দেন।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী সেখানে হাত পরিষ্কার করতে হ্যান্ড স্যানিটাইজার চাইলে উপস্থিত কর্মকর্তারা সেটি দিতে ব্যর্থ হন। পরে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘একটি সরকারি স্বাস্থ্যকেন্দ্র চলছে, অথচ সেখানে কোনও হ্যান্ড স্যানিটাইজার ব্যবহার করা হয় না। এটি কীভাবে হতে পারে? একটি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সরকার কোটি কোটি টাকা ব্যয় করে ওই উপজেলার মানুষদের স্বাস্থ্যসেবা দেওয়ার জন্য। কিন্তু স্বাস্থ্যসেবা যারা দেবেন তারা যদি দায়িত্বশীল না থাকেন তাহলে তো সাধারণ মানুষ উপকৃত হবেন না।’

স্বাস্থ্যমন্ত্রী স্বাস্থ্যকেন্দ্রটির ইমার্জেন্সি রুম অত্যন্ত ছোট দেখতে পেয়ে এটি বড় করার নির্দেশনা দেন। অপারেশন থিয়েটার থাকার পরও সেগুলোতে কোনও রোগীর অপারেশন হতে না পারার কারণে মন্ত্রী এসময় উপস্থিত কর্মকর্তাদের প্রতি উষ্মা প্রকাশ করেন।

পরে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বিশ্বনাথ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স পরিদর্শন করেন। তিনি এই স্বাস্থ্যকেন্দ্রের কার্যক্রমে সন্তোষ প্রকাশ করেন। মন্ত্রী বলেন, ‘আমি কোনও মিডিয়ায় স্বাস্থ্যকেন্দ্র নিয়ে নেতিবাচক খবর দেখতে চাই না। স্বাস্থ্যকেন্দ্র মানুষের স্বাস্থ্যসেবার জন্য। কাজেই মানুষ যেন সঠিক সেবা পায়, রোগীরা যেন অসম্মানিত না হয়, সেটি সবার আগে সবাইকে খেয়াল করতে হবে।’

স্থানীয় সংসদ সদস্য ও প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী শফিকুর রহমান চৌধুরী, স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক এবিএম খুরশীদ আলম, বিএমএ মহাসচিব এহতেশামুল হক চৌধুরী, সিলেট বিভাগীয় পরিচালক (স্বাস্থ্য), জেলা সিভিল সার্জনসহ অন্যান্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এসময় স্বাস্থ্যমন্ত্রীর সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন।