থ্যালাসেমিয়া পেশেন্টস অ্যান্ড প্যারেন্টস ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের আত্মপ্রকাশ

থ্যালাসেমিয়া রোগে আক্রান্ত মানুষদের কল্যাণে যাত্রা শুরু করলো বাংলাদেশ থ্যালাসেমিয়া পেশেন্টস অ্যান্ড প্যারেন্টস ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন। শনিবার (১০ মে) জাতীয় প্রেস ক্লাবের জহুর হোসেন হলে এক সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে তাদের আত্মপ্রকাশ ঘটে। এই সংগঠনটির লক্ষ্য থ্যালাসেমিয়া রোগীদের জীবনমান উন্নয়ন, সচেতনতা বৃদ্ধির মাধ্যমে প্রতিরোধ গড়ে তোলা এবং রোগীদের অধিকার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে কাজ করা।

এই আয়োজনে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন— বাংলাদেশ মেডিক্যাল ইউনিভার্সিটির হেমাটোলজি বিভাগের সাবেক চেয়ারম্যান প্রফেসর ডা. এবিএম ইউনুস, অনকোলজি সোসাইটি অব বাংলাদেশের মহাসচিব প্রফেসর ডা. একেএম আমিরুল মোরশেদ খসরু, বাংলাদেশ মেডিক্যাল ইউনিভার্সিটির শিশু হেমাটোলজি ও অনকোলজি বিভাগের চেয়ারম্যান  প্রফেসর ডা. মো. আনোয়ারুল করিম, ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের হেমাটলজি বিভাগের প্রফেসর ডা. তাসনিম আরা, বাংলাদেশ মেডিক্যাল ইউনিভার্সিটির প্রসূতি ও স্ত্রীরোগ বিভাগের প্রফেসর ডা. রেজাউল করিম কাজল, হেমাটোলজি সোসাইটি অব বাংলাদেশের সেক্রেটারি জেনারেল ডা. মো. আদনান হাসান মাসুদ প্রমুখ।

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের উপদেষ্টা প্রফেসর ডা. বেলায়েত হোসেন। 

তিনি জানান, হিমোগ্লোবিন ইলেক্ট্রোফরেসিস নামক রক্তপরীক্ষার মাধ্যমে থ্যালাসেমিয়া বাহক শনাক্তকরণ এবং বাহকে-বাহকে বিবাহ বন্ধ করা থ্যালাসেমিয়া প্রতিরোধের সহজতম উপায়। আবার দুজন বাহকের মধ্যে বিবাহ হয়ে গেলেও তাদের অনাগত সন্তান যেন থ্যালাসেমিয়া নিয়ে জন্ম নিতে না পারে সেজন্য গর্ভস্থ ভ্রূণের প্রি-ন্যাটাল ডায়াগনোসিস পরীক্ষার মাধ্যমে গর্ভের সন্তান থ্যালাসেমিয়ায় আক্রান্ত কিনা তা নিশ্চিত হওয়া থ্যালাসেমিয়া প্রতিরোধের আরেকটি উপায়।

সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি, থ্যালাসেমিয়া আক্রান্ত হয়েও সংগ্রামী জীবন অতিবাহিত করা কামরুন নাহার মুকুল বাংলাদেশ শিশু হাসপাতালের থ্যালাসেমিয়া সেন্টারে কাউন্সেলর হিসেবে কর্মরত আছেন। তিনি বলেন, “ব্যক্তিগত পর্যায়ে আমি গত দুই দশক ধরে থ্যালাসেমিয়া রোগীদের পাশে থাকার চেষ্টা করছি। আজ এই সংগঠনের মাধ্যমে আমরা আরও সুসংগঠিতভাবে সারা দেশে কাজ করতে পারবো।“ তার দীর্ঘদিনের সহযোদ্ধা ও সহকর্মীদের একত্রিত করে গঠিত হয়েছে এই সংগঠন।

সরকারের কাছে সংগঠনটির দাবিগুলোর মধ্যে আছে—  বাংলাদেশের প্রতিটি রক্ত পরিসঞ্চালন কেন্দ্রে থ্যালাসেমিয়া রোগীদের জন্য নিরাপদ রক্ত পরিসঞ্চালন, থ্যালাসেমিয়া রোগীদের জন্য বিনামূল্যে বা ভর্তুকি মূল্যে সকল প্রকার ওষুধপ্রাপ্তি নিশ্চিতকরণ, সরকারিভাবে বাংলাদেশের সকল থ্যালাসেমিয়া রোগীর রেজিস্ট্রেশন এবং পরিচয়পত্র প্রদান। এছাড়াও সকলের জাতীয় পরিচয়পত্রে ব্লাডগ্রুপের পাশাপাশি হিমোগ্লোবিন ইলেক্ট্রোফরেসিস রিপোর্ট বাধ্যতামূলকভাবে অন্তর্ভুক্তকরণ, প্রতিটি সরকারি হাসপাতালে অন্তত ২টি বেড সহযোগে থ্যালাসেমিয়া কর্নার স্থাপন, দেশের সব জনগণকে বাহক পরীক্ষা (হিমোগ্লোবিন ইলেক্ট্রোফরেসিস টেস্ট) বাধ্যতামূলক করা। বিশেষ করে স্কুল-কলেজে ভর্তির সময় ছাত্রছাত্রীদের জন্য হিমোগ্লোবিন ইলেক্ট্রোফরেসিস টেস্ট বাধ্যতামূলক করা, প্রতিটি বিভাগীয় শহরে ডিএনএ ল্যাব স্থাপন এবং প্রিন্যাটাল ডায়াগনোসিসের সুযোগ বাড়ানো।