অভিযোগ রয়েছে, সরকার প্রতি বছর এ দ্বীপ থেকে কোটি টাকা রাজস্ব আদায় করলেও এটি রক্ষায় তেমন কোনও পদক্ষেপ নেয়নি। দুদিন ধরে দ্বীপে ব্যাপক ভাঙন দেখা দিয়েছে।
এ প্রসঙ্গে সেন্টমার্টিন দ্বীপ ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান নূর আহমদ বলেন, ‘অতিরিক্ত দালানকোঠা ও মানুষের চাপে দ্বীপটি নিচের দিকে দেবে যাচ্ছে। ফলে গত দুদিন ধরে সমুদ্রের স্রোতে দ্বীপের চারদিকে ভাঙন ধরেছে। এতে দ্বীপটি বিলীন হয়ে যাচ্ছে। দ্বীপে প্রতি বছর হাজার হাজার দেশি-বিদেশি পর্যটক ভ্রমণে আসেন, তা থেকে সরকার কোটি টাকা রাজস্ব পায়। কিন্তু দ্বীপ রক্ষার দায়িত্ব নিচ্ছে না কেউই।’
চেয়ারম্যান নূরের ভাষ্য, ‘হয়তো একদিন সকালে ঘুম থেকে উঠে শুনবো সেন্টমার্টিন নামের দ্বীপটি আর নেই, হারিয়ে গেছে সমুদ্রে। কেননা, বর্তমানে দ্বীপে পরিবেশবিরোধী এমন কাজকর্ম হচ্ছে, তা থেকেই এমন ভয়ঙ্কর আশঙ্কা মনের মধ্যে ঘুরপাক খাচ্ছে। এমন কিছু ঘটে গেলে তা অবিশ্বাস্য কিছু হবে না।’
স্থানীয় বাসিন্দা নূর মুহাম্মদ বলেন, ‘কয়েকদিন ধরে সমুদ্রের স্রোতে দ্বীপের কয়েকটি অংশে ব্যাপক ভাঙন ধরেছে। স্মরণকালের ভয়াবহ ভাঙন এটি। তাছাড়া ২০০ বছর আগে এ দ্বীপে বাসিন্দা ছিল মাত্র ১৩ জন। বর্তমানে ৯ হাজারের বেশি মানুষ এখানে বসবাস করছেন। তার ওপরে গড়ে উঠেছে অবৈধ হোটেল-মোটেল। এছাড়া রয়েছে হাজারও পর্যটকের আনাগোনা। দ্বীপ দাঁড়িয়ে আছে শুধু পাথরের ওপর, সেসব পাথরও এখন ধ্বংস করা হচ্ছে। ফলে দ্বীপ নিচের দিকে দেবে সমুদ্রের স্রোতে ভেঙে যাচ্ছে। এই দ্বীপকে রক্ষা করতে হলে পরিবেশবিরোধী ও অবৈধ ভবন নির্মাণ বন্ধ করতে হবে। না হলে একদিন মানচিত্র থেকে হারিয়ে যাবে সেন্টমার্টিন।’
কক্সবাজারের পরিবেশ বিষয়ক সংস্থা ইয়ুথ এনভায়রনমেন্ট সোসাইটির (ইয়েস) প্রধান নির্বাহী এম ইব্রাহিম খলিল মামুন বলেন, ‘দ্বীপ রক্ষা করতে আদালতের নির্দেশনা পালন করতে হবে। না হলে এ দ্বীপ রক্ষা করা যাবে না। এর আগে দ্বীপে গড়ে ওঠা অবৈধ ৩৮টি আবাসিক হোটেল ভাঙার নির্দেশনা থাকলেও তা এখনও বাস্তবায়ন হয়নি; বরং দ্বীপে নতুন করে দালানকোঠা নির্মাণ অব্যাহত রয়েছে। এ বিষয়ে সরকারের কঠোর নজরদারি দরকার।’
পরিবেশ অধিদফতরের কক্সবাজার কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক সাইফুল আশ্রাব বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘দ্বীপে ভাঙনের খবর পেয়েছি। আমরা সেখানে সরেজমিন পরিদর্শনে যাবো। তাছাড়া সেন্টমার্টিন পরিবেশগত দিক দিয়ে অতি ঝুঁকিপূর্ণ। সেখানে অবৈধভাবে গড়ে উঠছে বহুতল ভবন।’