পৃথিবীর বিভিন্ন মনোমুগ্ধকর, অদ্ভুত ও আশ্চর্যময় সেতু নিয়ে ‘বাংলা ট্রিবিউন জার্নি’র নিয়মিত আয়োজনে আজ রইলো ইউরোপ মহাদেশের কয়েকটি দেশের মনকাড়া সেতুগুলোর কথা।
প্রকৌশল বিজ্ঞানের বিস্ময় বলা যায় সেতুটিকে। ডেনমার্কের রাজধানী কোপেনহেগেন থেকে শুরু করে সুইডেনের ম্যালমো শহরকে একত্রিত করেছে ‘ওরেসুন্ড ব্রিজ’। একইসঙ্গে রেলপথ ও যানবাহন চলাচলের জন্য ব্যবহৃত হয় এটি। নিচ দিয়ে ঝমাঝম শব্দ তুলে ট্রেন চলে যায়। আর ওপরে সড়কপথে আসা-যাওয়া করে মোটরযান। নীল জলরাশিতে দাঁড়িয়ে থাকা ‘ওরেসুন্ড ব্রিজ’ মূলত একইসঙ্গে সেতু ও সুড়ঙ্গ। সোজা পাঁচ মাইলের পর ছোট্ট একটি দ্বীপে এটি রূপান্তরিত হয়েছে আড়াই মাইলের সুড়ঙ্গ। এটি ডিজাইন করেছে ডেনিশ ইঞ্জিনিয়ারিং প্রতিষ্ঠান সিওডব্লিউই। ২০০০ সালের ১ জুলাই এটি উন্মুক্ত হয়। ২০০২ সালে ইন্টারন্যাশনাল অ্যাসোসিয়েশন ফর ব্রিজ অ্যান্ড স্ট্রাকচারাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের (আইএবিএসই) আউটস্ট্যান্ডিং স্ট্রাকচার অ্যাওয়ার্ড জেতে এই সেতু।
চেক প্রজাতন্ত্রের রাজধানী প্রাগের সবচেয়ে আকর্ষণীয় স্থান ‘চার্লস ব্রিজ’। রাজা চার্লস পঞ্চমের শাসনামলে ১৩৫৭ সালে ভলতাভা নদীর ওপর এর নির্মাণ কাজ শুরু হয়। পঞ্চদশ শতকের গোড়ার দিকে ঐতিহাসিক এই সেতু গড়ে ওঠে। এর নাম ছিল মূলত স্টোন ব্রিজ ও প্রাগ ব্রিজ। ১৮৭০ সাল থেকে এটাকে বলা হচ্ছে চার্লস ব্রিজ। শুধু পথচারীদের ব্যবহারের জন্য বানানো হয়েছে এটি। সন্ধ্যা ঘনিয়ে এলেই দু’পাশে জ্বলে লণ্ঠনে ঝোলানো সোডিয়াম বাতি। সেতুটিতে রয়েছে বিখ্যাত বেশকিছু মূর্তি ও ভাস্কর্য। এগুলো সবই রেপ্লিকা। ১৯৬৫ সালের গোড়ার দিকে আসলগুলো সংরক্ষিত হয় দেশটির জাতীয় জাদুঘরে।
ডেভিল’স ব্রিজটি মূলত ‘রাকোৎজব্রুক’ নামে পরিচিত। জলে এর যে ছায়া পড়ে তাতে এটিকে দেখতে লাগে গোলাকার আকৃতির। পরিকল্পনা করেই অর্ধচন্দ্রাকৃতির সেতুটি গড়া হয়েছে। এর গঠন মজবুত বলেই ডেভিল’স ব্রিজ নামটি রাখা। মধ্যযুগে আধুনিক প্রযুক্তি ছাড়াই মজবুত সেতু তৈরি করা কেবল অশুভ শক্তির মাধ্যমে সম্ভব হয়েছে বলে ধারণা করা হয়!
আকাশছোঁয়া পাহাড়ের রাজ্য থেকে নেমে গেছে ৫৪০ ফুট উঁচু একটি ঝরনা। এর নাম লাতেফসেন। এর বিভিন্ন শাখা গিয়ে মিশেছে পাশের সাগরে। ঝরনার ঠিক পাশেই আছে নরওয়ের সবচেয়ে প্রাচীন একটি সেতু। পাথর দিয়ে তৈরি হলেও এর ওপরে আছে পিচঢালা পথ। রোমাঞ্চ উপভোগের জন্য পর্যটকদের খুব প্রিয় স্থান এই সেতু।
জলের শহর ইতালির ভেনিসে কারুকার্যময় চারটি প্রাচীন সেতুর মধ্যে অন্যতম ‘রিয়ালতো ব্রিজ’। সান মার্কো ও সান পোলোকে মিলিয়ে দিয়েছে এটি। ভেনিসে পর্যটকদের সবচেয়ে প্রিয় স্থান এটাই। পাথরের তৈরি ধনুক আকৃতির সেতুটি দেখা দেছে বিভিন্ন চলচ্চিত্রে। সেতুর ওপরে দাঁড়িয়ে নিচে তাকালে চোখে পড়বে ছোট ছোট নৌকার আসা-যাওয়া। শুধুই পথচারীদের ব্যবহারের জন্য বানানো হয়েছে এটি।