রাশিয়ার সেন্ট পিটার্সবার্গ মসজিদের গল্প

7সম্মুখভাগে প্রাচ্যের আবহ। সঙ্গে চোখে পড়ে ফিরোজা নীল মোজাইক। দেয়ালগুলো ধূসর গ্রানাইটের। ডোম ও দুটি মিনার আকাশি নীল রঙের মোজাইক সিরামিক দিয়ে মোড়ানো। বহির্ভাগে অ্যারাবিয়ান ক্যালিগ্রাফিতে সাজানো আছে কোরআনের আয়াত। অভ্যন্তরের স্তম্ভগুলো সবুজ মার্বেলের তৈরি। সর্বত্র সেন্ট্রাল এশিয়ান কারুশিল্পীদের বানানো বিশেষ কার্পেট। এই হলো রাশিয়ার সেন্ট পিটার্সবার্গ মসজিদ। তুরস্কের বাইরে ইউরোপের সবচেয়ে বড় মসজিদ এটাই। 

2এ মসজিদে একসঙ্গে প্রায় ৫ হাজার মানুষ নামাজ পড়তে পারেন। নারীদের জন্য দোতলায় নামাজের ব্যবস্থা রয়েছে।
সেন্ট পিটার্সবার্গ মসজিদের ডোমএর দুটি মিনারের উচ্চতা ৪৯ মিটার আর ডোমটি ৩৯ মিটার উঁচু। কয়েক মাইল দূর থেকেও মসজিদের মিনার দেখে লাইট হাউসের মতো দিক ঠিক করা যায়।

3* ভেতরে আছে ওজুর চমৎকার ব্যবস্থা ও বাথরুম। 
5* শুধু মুসল্লি নন, পর্যটকদের কাছেও সেন্ট পিটার্সবার্গ মসজিদ একটি দর্শনীয় স্থাপনা।

10১৯০৬ সালে মসজিদটি নির্মাণের লক্ষ্যে সাড়ে ৭ লাখ রুবল (বাংলাদেশি মুদ্রায় ৯ কোটি ৩৬ লাখ ১৬ হাজার টাকা) সংগ্রহের জন্য সরকারি পর্যায়ে একটি কমিটি গঠন করা হয়। রাশিয়ার বিভিন্ন শহর ও প্রদেশে অর্থ সংগ্রহের আয়োজনে অনেকে পৃষ্ঠপোষকতা করে। সবচেয়ে বড় দাতা ছিলেন বোখারার আমির সাইদ আবদুল আহাদ। 

9পিটার অ্যান্ড পল দুর্গের বিপরীতে মসজিদের জন্য জায়গা কিনতে ১৯০৭ সালের ৩ জুলাই অনুমতি দেন রাজা নিকোলাস দ্বিতীয়।
4সেন্ট পিটার্সবার্গ শহরের কেন্দ্রস্থলে মসজিদটির ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হয় ১৯১০ সালের ৩ ফেব্রুয়ারি। উজবেকিস্তানের বুখারা শহরে আবদুল আহাত খানের শাসনামলের ২৫তম বর্ষপূর্তি উদযাপনের অংশ হিসেবে এই উদ্যোগ নেওয়া হয়। সেন্ট পিটার্সবার্গে তখন মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষের সংখ্যা ৮ হাজারেরও বেশি।

6উজবেকিস্তানের সমরকান্দ শহরে তিমুরের সমাধিসৌধ গুরু আমিরের মতো করে মসজিদটির নকশা করেছেন রুশ স্থপতি নিকোলাই ভাসিলিয়েভ। ১৯২১ সালে এর নির্মাণ কাজ শেষ হয়। এতে অংশ নেন সেন্ট্রাল এশিয়ার দক্ষ কারিগররা।

11১৯৪০ সালে এই মসজিদে নামাজ আদায় নিষিদ্ধ করে সোভিয়েত কর্তৃপক্ষ। তখন ভবনটিকে চিকিৎসা সরঞ্জাম ভাণ্ডার হিসেবে ব্যবহার করা হয় রাষ্ট্রীয়ভাবে। তবে ইন্দোনেশিয়ার প্রথম প্রেসিডেন্ট সুকার্নোর অনুরোধে সেন্ট পিটার্সবার্গে ১৯৫৬ সালে তার পরিদর্শনের ১০ দিন পর মুসলিম ধর্মীয় সম্প্রদায়ের কাছে মসজিদটি হস্তান্তর করা হয়।
12* ১৯৮০ সালে এ স্থাপনায় বড়সড় সংস্কার আনা হয়।

সেন্ট পিটার্সবার্গ মসজিদে আলোকচিত্রী লেখকসেখানকার নির্দেশিকায় উল্লেখ রয়েছে, নারী-পুরুষ উভয়ে চাইলে নামাজ আদায়ের প্রয়োজনীয় পোশাক ধার নিতে পারেন। তবে নামাজ আদায় শেষে তা ফেরত দিতে হবে। জোরে কথা বলা যাবে না। নামাজের ওয়াক্তে ছবি তোলা কিংবা ভিডিও করা নিষিদ্ধ। দর্শনার্থীদেরকে শুধু নির্দিষ্ট স্থানেই থাকতে হবে। সেন্ট পিটার্সবার্গ মসজিদের অফিসিয়াল আইডি যুক্ত ব্যক্তিরা এসব দিকে সচেতন থাকেন।