ঈদে কুয়াকাটা সৈকত হয়ে উঠবে পর্যটকদের মিলনমেলা

কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকতকুয়াকাটা সমুদ্রসৈকতে বছরজুড়ে পর্যটক সমাগম থাকলেও ঈদসহ যেকোনও উৎসবে দেখা যায় তাদের উপচেপড়া ভিড়। এবারের ঈদুল আজহা উপলক্ষেও সৈকত জুড়ে ভ্রমণপিপাসুদের ঢল নামবে বলে আশা স্থানীয় হোটেল ব্যবসায়ীদের। ঈদ পরবর্তী সময়ে কুয়াকাটায় ১৭ কিলোমিটার দীর্ঘ সৈকত পরিণত হবে পর্যটকদের মিলনমেলায়, এমনটাই আশা সংশ্লিষ্টদের।

ঈদের ছুটিতে পর্যটকদের কথা ভেবে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, হোটেল-মোটেল ও রেস্তোরাঁগুলোতে এসেছে নানান সাজ। আর শোপিস-সহ হরেক জিনিসপত্রের পসরা সাজিয়েছে দোকানিরা।
ধারণা করা হচ্ছে, ঈদের পরদিন থেকে পর্যটক সমাগম শুরু হবে কুয়াকাটায়। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে ঈদ পরবর্তী সময়ে ভ্রমণপিপাসুদের পদচারণায় মুখর থাকবে এই পর্যটন কেন্দ্র। 

কুয়াকাটায় সৈকতের জিরো পয়েন্ট থেকে পূর্ব ও পশ্চিমে মনোমুগ্ধকর সমুদ্রের বুকে বেলাভূমির যেকোনও স্পটে দাঁড়িয়েই দেখা যায় সূর্যোদয় ও সূর্যাস্তের অপরূপ দৃশ্য। একদিকে সাগর, অন্যদিকে রয়েছে প্রকৃতিঘেরা একাধিক লেক সংরক্ষিত বনায়ন।

প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের লীলাভূমি পর্যটন কেন্দ্র কুয়াকাটার অন্যান্য দর্শনীয় স্থান হলো—নারিকেল বীথি, ফয়েজ মিয়ার বাগান, জাতীয় উদ্যান (ইকো পার্ক), শ্রীমঙ্গল বৌদ্ধবিহার, সীমা বৌদ্ধবিহার। এসব স্থান পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করা হয়েছে। ভ্রমণের জন্য রয়েছে ‘সুন্দরবনের পূর্বাঞ্চল’ খ্যাত ফাতরার বন, গঙ্গামতি, লালকাকড়ার চর, কাউয়ার চর, লেম্বুর চর, শুঁটকি পল্লি।

আসন্ন কোরবানির ঈদে বিপুল পর্যটক সমাগম হবে বলে আশা করছেন কুয়াকাটা হোটেল-মোটেল ওনার্স অ্যাসোসিয়েশেনের সাধারণ সম্পাদক মোতালেব শরীফ। তার কথায়, ‘গত রোজার ঈদে অনেক মানুষের সমাগম হয়েছিল কুয়াকাটায়। এবারও পর্যটকদের কাছ থেকে হোটেল ব্যবসায়ীরা ব্যাপক সাড়া পাচ্ছেন। হোটেল-মোটেলগুলোতে আগাম বুকিং রয়েছে।’

কুয়াকাটা হোটেল-মোটেল ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদকের দাবি, পর্যটকদের কথা ভেবে হোটেল-মোটেলগুলো পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করে রাখা হয়েছে।

আশার কথা শোনালেন সিকদার রিসোর্ট ভিলার ম্যানেজার গোলাম মোরশেদ। তিনি বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘ঈদ উপলক্ষে আমরা আগাম বুকিং পেয়েছি। আশা করছি এবার অনেক পর্যটক সমাগম হবে। পর্যটকদের সেবা দিতে আমরা প্রস্তুত। এবারের ঈদে আমাদের এখানে থাকছে বারবিকিউ নাইট ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।’

এদিকে পর্যটকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছে পৌর প্রশাসন ও কুয়াকাটা ট্যুরিস্ট পুলিশ। কুয়াকাটা পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও পৌর মেয়র আব্দুল বারেক মোল্লা বাংলা ট্রিবিউনকে জানিয়েছেন, পর্যটকদের নির্বিঘ্নে চলাফেরার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিয়েছেন তারা। তার দাবি, সমুদ্রসৈকত পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করা হয়েছে।

পর্যটন এলাকাজুড়ে বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানান কুয়াকাটা ট্যুরিস্ট পুলিশ জোনের পরিদর্শক মো. মনিরুজ্জামান রহমান। তিনি বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘পুলিশের টহলরত একটি ভ্রাম্যমাণ দল সার্বক্ষণিক পর্যটকদের নিরাপত্তায় নিয়োজিত থাকবে। পাশাপাশি দায়িত্ব পালন করবে র‌্যাব, পুলিশ ও নৌ-পুলিশ। সঙ্গে গোয়েন্দা সদস্যদের একটি দল মাঠে থাকবে।’