মুখরিত ষাটগম্বুজ মসজিদ ও সুন্দরবন

 
 
 
 
দর্শনার্থীদের ভিড় ঈদসহ বিভিন্ন উৎসব ও ছুটিতে দেশি-বিদেশি পর্যটকরা জীববৈচিত্র্যের খোঁজে আসে সুন্দরবনে। এবারও দর্শনার্থীদের উপচেপড়া ভিড় দেখা গেছে। একইসঙ্গে দর্শনার্থীদের পদচারণায় মুখর ষাটগম্বুজ মসজিদ, হযরত খানজাহান আলী (র.) মাজার, বাগেরহাট সদর উপজেলার বারাকপুরে অবস্থিত বেসরকারি পর্যটন কেন্দ্র সুন্দরবন রিসোর্ট ও হাকিমপুরের চন্দ্রমহলে। বিশেষ করে দর্শনার্থীদের ভিড়ে সুন্দরবন রিসোর্ট ছিল সরগরম। এখানে শিশুসহ বড়রা বিভিন্ন রাইডে চড়ার পাশাপাশি আড্ডায় মেতেছিল। 
 
বাগেরহাটের পূর্ব সুন্দরবন বিভাগের চাঁদপাই রেঞ্জের করমজল বন্যপ্রাণী প্রজনন কেন্দ্রে দর্শনার্থীদের ভিড় সামলাতে রীতিমতো হিমশিম খেতে হচ্ছে বনপ্রহরীদের। এসব স্থানে আত্মীয়স্বজন ও পরিবার নিয়ে আনন্দে মেতে ওঠে তারা। সুন্দরবন বিভাগ জানিয়েছে, দেশ-বিদেশ থেকে আসা পযর্টকদের ভিড় থাকবে আরও কয়েকদিন। 
 
সুন্দরবন বিভাগের চাঁদপাই রেঞ্জের করমজল বন্যপ্রাণী প্রজনন কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হাওলাদার আজাদ কবির বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘ঈদ উপলক্ষে পর্যটকদের ভিড় বেড়ে যাওয়ায় হিমশিম খেতে হচ্ছে স্বল্পসংখ্যক প্রহরীদের। মাত্র আটজন কর্মকর্তা-কর্মচারী হলেও তারা সাধ্যমতো সেবা দিয়ে যাচ্ছেন।’   
 
বাগেরহাট শহর থেকে প্রায় পাঁচ কিলোমিটার পশ্চিমে খুলনা-বাগেরহাট মহাসড়কের পাশে অবস্থিত সাড়ে ৬০০ বছরের পুরনো হযরত খানজাহানের (র.) অমর সৃষ্টি ঐতিহাসিক ষাটগম্বুজ মসজিদ ও মাজার দেখতে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে এসেছে হাজার হাজার পর্যটক। 
 
ঐতিহাসিক ষাটগম্বুজ মসজিদ দেখতে কুমিল্লা থেকে স্ত্রীকে নিয়ে এসেছেন মিনহাজুল আলম। খানজাহান আলী মাজারে স্বামী-সন্তান নিয়ে ঘুরেছেন একটি বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থার কর্মকর্তা রিজিয়া পারভিন। 
সুন্দর বনের হরিণ
 
সুন্দরবনের করমজল বন্যপ্রাণী প্রজনন কেন্দ্রটি দূরত্বের দিক দিয়ে লোকালয়ের সবচেয়ে কাছের ও দর্শনীয় হওয়ায় পর্যটকদের ভিড় সারাবছরই থাকে। এখানে পরিবার নিয়ে ঘুরতে এসেছেন রেজোয়ার হোসেন আকাশ। তিনি বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘করমজলে এসে প্রাণ জুড়িয়ে গেছে। এই জায়গা এতো সুন্দর, নিজের চোখে না দেখলে বিশ্বাস হতো না।’
 
করমজল পর্যটন কেন্দ্রের টেইলার, সুউচ্চ ওয়াচ টাওয়ার, লবণ পানির কুমির, মায়া ও চিত্রল হরিণ, বানর ও বিলুপ্তপ্রায় কচ্ছপ বাটারগুল বাচকাসহ বিভিন্ন পশু-পাখি ও প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করেন পর্যটকরা। 
 
করমজল ছাড়াও হাড়বাড়িয়া, হিরণ পয়েন্ট, কটকা ও কচিখালীতে পর্যটকদের উপস্থিতি আগের তুলনায় কয়েক গুণ বেড়েছে। ঐতিহাসিক এসব দর্শনীয় স্থানকে ঘিরে বাগেরহাট একটি পর্যটন নগরী হিসেবে গড়ে উঠবে, এমন প্রত্যাশা সবার।
 
প্রত্নতত্ত্ব বিভাগ বলছে, ঈদের ছুটিতে দর্শনার্থী বেশি হওয়ায় রাজস্ব আয় বাড়ছে। বাগেরহাট প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের কাস্টোডিয়ান গোলাম ফেরদৌস বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘আবহাওয়া ভালো থাকায় অনেক পর্যটক এসেছে। ফলে রাজস্ব আয়ও ভালো হচ্ছে।’