নেই কাজ তো…

খই ভেজে আর কতই বা আয় করা যায়। তার চেয়ে চোখ বন্ধ করে খানিকক্ষণ ভাবলেই ভুরি ভুরি আইডিয়া এসে হাজির হবে। যতই বিচিত্র শোনাক না কেন, শেষ পর্যন্ত স্বীকার করতে বাধ্য হবেন— চাকরি তোমার নাম কী, আয়ে পরিচয়! বিশ্বজুড়ে আচমকা জনপ্রিয় হয়েছে এমনই কিছু ‘উর্বর মস্তিষ্কজাত’ কাজের আইডিয়া।

monarchbutterfly-1024x682প্রজাপতি বাণিজ্য
প্রজাপতি শুধু সৌন্দর্যের নয়, হতে পারে আয়ের উৎস। পশ্চিমা দুনিয়া ছাড়িয়ে এশিয়ার কোরিয়া আর চীনেও প্রজাপতির বাণিজ্য শুরু হয়েছে। অনেক দেশেই বিশাল সব প্রজাপতির খামার আছে। প্রতি বছর বিশ্বে ২ থেকে ৩ কোটি ডলারের প্রজাপতি বিকিকিনি হয়। তবে বেশিরভাগই বিজ্ঞানীদের গবেষণা ও জাদুঘরে প্রদর্শনের জন্য। প্রচলিত সোলার প্যানেলের চেয়ে প্রজাপতির পাখায় সৌর বিদ্যুৎ উৎপাদনের ক্ষমতা ১০ গুণ বেশি। এছাড়া প্রজাপতির মাধ্যমে জীবন রক্ষাকারী ওষুধ তৈরির গবেষণাও হচ্ছে। পর্যটকদের কাছে তো প্রজাপতি বরাবরই কাঙ্ক্ষিত। ১০০ ডলারের বাজি ধরে প্রজাপতি নিয়ে ব্যবসা করে কোটিপতি হয়েছেন হোসে মুনিজ নামের এক ব্যক্তি।

বন্ধু ভাড়া
একাকিত্বে ভুগছেন? সঙ্গ দরকার? এখনই ভাড়া নিয়ে ফেলুন পছন্দসই বন্ধু। ‘রেন্ট অ্যা ফ্রেন্ড’ নামের যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক একটি ওয়েবসাইট থেকে বেছে নিতে পারেন ঘোরার সঙ্গী, সিনেমা-কনসার্ট-অপেরা বা রেস্তোরাঁয় যাওয়ার সঙ্গী, বিয়ে-খেলা-হাইকিংয়ে অংশ নেওয়া অথবা অপরিচিত শহর ঘুরিয়ে দেখার গাইড-কাম-বন্ধু। তবে এ বন্ধু বিনামূল্যে নয়। ঘণ্টায় পড়বে ৫০ মার্কিন ডলার। ফেসবুকের আদলে ফ্রি অ্যাকাউন্ট খুলে এর সদস্য হতে পারে যেকোনও ব্যক্তি। সাইটটির উদ্যোক্তা স্কট রোসেনবাউম জানান, প্রচলিত ডেটিং সাইটগুলো থেকে ‘একধাপ পেছনে’ গিয়ে ভিন্ন একটি সেবা শুরু করতে চেয়েছিলেন তিনি। তবে শুধু খাবারদাবার, ঘোরাঘুরি কিংবা নিঃসঙ্গতার সঙ্গী হওয়ার মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয় এ সাইট। চাইলে আদব-কায়দা শেখানো বা পারিবারিক কোনও অনুষ্ঠানেও ভাড়া করতে পারেন একদল বন্ধুকে।

iStock_000013878410Smallগ্রহ-নক্ষত্র নিবন্ধন
শিশুদের আকাশের চাঁদ-তারা দেখিয়ে অনেক মা-বাবাই বলেন, ‘এটা তোমার তারা, এটা তোমার বোনের।’ কল্পজগতে নয়, বাস্তবেও গ্রহ-তারার ভাগবাটোয়ারা শুরু করেছে ইন্টারন্যাশনাল স্টার রেজিস্ট্রি (আইএসআর)। তাদের কাছ থেকে চাইলে আপনিও নিজের নামে নিবন্ধন করাতে পারেন পছন্দের কোনও নক্ষত্র। ১৯৭৯ সাল থেকে মহাকাশের নানান বস্তুর মালিকানা নিবন্ধন করছে আইএসআর। এমনকি গ্রাহককে দিন-তারিখ উল্লেখ করে একটি তারার মালিকানাও বুঝিয়ে দেয় প্রতিষ্ঠানটি। যে তারা বিক্রি হয়ে যায় সেটি আর কারও নামে নিবন্ধন হবে না। বুজরুকিটা এখানেই। এভাবেই অনেকদিন ধরে অতি-আগ্রহীদের পকেট থেকে টুপাইস কামিয়ে আসছে আইএসআর। অবশ্য কাগজে-কলমে আকাশের বুকে একটা কিছুর স্বত্বাধিকার হওয়াটা গর্বের বিষয় বৈকি। চাইলে আপনিও আইএসআর-এর দেখাদেখি গ্রহ-নক্ষত্রে লোকাল লাইসেন্স বিক্রি শুরু করতে পারেন।

a98576_4মুখ ঢেকে যায় বিজ্ঞাপনে
মুখটাকে বিলবোর্ড বানিয়ে আয় করার নজির তৈরি হলো। মুখে কোম্পানির লোগো নিয়ে ঘুরে মাস শেষে পকেট ভরে যাওয়া যেন মামুলি ব্যাপার! সংকোচ ঝেড়ে অনুসরণ করতে পারেন ক্যামব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের এড ময়েস ও রস হারপারকে। দু’জনই মুখভর্তি বিজ্ঞাপন নিয়ে ঘুরে বেড়ান লন্ডনের ব্যস্ততম এলাকায়। পথচারীদের দৃষ্টিও কাড়েন। তাদের দুই গালে লেখা ‘বাই মাই ফেস’ কিংবা ‘ফলো মি’। পড়াশোনার ব্যয় (৫০ হাজার পাউন্ড) মেটাতেই এই উদ্যোগ তাদের। আয়টা মন্দ নয়। প্রথম ১০ দিনে তারা আয় করেন সাড়ে তিন হাজার পাউন্ড। স্কাইডাইভিং কিংবা হিমশীতল জলে স্টান্টের জন্য বিজ্ঞাপনদাতারা তাদেরকে টাকা দিয়েছে।

paparazziindenverব্যক্তিগত পাপারাজ্জি
পাপারাজ্জিদের ক্যামেরা বরাবরই এড়িয়ে চলেন হলিউড তারকারা। তাদের জন্য এটি বিড়ম্বনা হলেও পরিচিতজন আর বন্ধুমহলে এমন তারকাখ্যাতি পেতে ভাড়ায় নিতে পারেন ব্যক্তিগত পাপারাজ্জি। যারা চারপাশ থেকে ছায়ার মতো অনুসরণ করবে আপনাকে। পার্টি, বন্ধুদের আড্ডা কিংবা জন্মদিনের মতো অনুষ্ঠানে হঠাৎ ক্যামেরা নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়বে আপনার ওপর। ফ্ল্যাশের পর ফ্ল্যাশে চোখ ধাঁধিয়ে যাবে সবার। না চাইতেই পেয়ে যাবেন তারকাখ্যাতি। মুহূর্তেই বন্ধুদের কাছে তারকা বনে যাবেন। এমন পাপারাজ্জি ভাড়া দেয় ‘সেলেব ফর অ্যা ডে ডটকম’ নামের একটি প্রতিষ্ঠান।