এক গাছেই ৪০ রকমের ফল!

ট্রি অব ফোরটিএকটি গাছে সাধারণত এক ধরনের ফল দেখতেই অভ্যস্ত আমরা। গাছে কলমের সুবাদে হয়তো একই গাছে দুই ধরনের বরই দেখেছেন অনেকে। কিন্তু তাই বলে এক গাছেই ৪০ রকমের ফল! পিচ, এপ্রিকট, নেকটরিন, বরই, চেরি! কী নেই এই গাছে!
৯ বছরের গবেষণায় এমনই এক গাছ উদ্ভাবন করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কের সারাকিউস ইউনিভার্সিটির গবেষক স্যাম ভ্যান অ্যাকেন। তার উদ্ভাবিত গাছটির নাম দেওয়া হয়েছে ‘ট্রি অব ফোরটি’। সিএনএন ও টাইমের মতো দুনিয়ার খ্যাতনামা সংবাদমাধ্যমে উঠে এসেছে এমন উদ্ভাবনের কথা। ফলে পর্যটকদের মধ্যে এই বৃক্ষ নিয়ে তৈরি হয়েছে কৌতূহল। 

150727102101-dsc-0132-exlarge-169শিল্পকলার শিক্ষক হলেও ব্যক্তিগত জীবনে স্যাম ভ্যান অ্যাকেন একজন সৌখিন কৃষিবিদ। ২০০৮ সালে নিউ ইয়র্কে তিন একরের একটি বাগান ইজারা নিয়ে এই গবেষণাকর্ম শুরু করেন তিনি। ভাবনা ছিল, পুরো ফলের বাগান যদি একটি গাছের মধ্যেই পাওয়া যেতো! যেই ভাবা সেই কাজ। একই গাছে বহু ধরনের ফল পেতে গ্রাফটিং বা কলম পদ্ধতির সাহায্য নেন তিনি। দুটি গাছের ডালকে এই গবেষক এমনভাবে জুড়ে দেন যাতে উভয় গাছের শিরা-উপশিরা পরস্পরের মধ্যে প্রবাহিত হয়।

150727102048-dsc-0112-exlarge-169স্যাম ভ্যান অ্যাকেন বলেন, ‘এটা নিশ্চয়ই দুনিয়ায় ক্ষুধার সমস্যা সমাধান করবে না। তবে এ ধরনের চিন্তা অনেককেই অনুপ্রেরণা জোগাবে।’

ইতোমধ্যে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়, জাদুঘর, কমিউনিটি সেন্টার ও শিল্প সংগ্রাহকরা গাছটি সংগ্রহ করেছেন। যুক্তরাষ্ট্রের আরকানসাস, কেন্টাকি, মেইন, ম্যাসাচুসেটস, নিউ জার্সি, পেনসিলভানিয়ার মতো শহরেও গাছটির দেখা মিলবে। এর দাম ৩০ হাজার ডলার। বাংলাদেশি মুদ্রায় এর পরিমাণ দাঁড়ায় ২৫ লাখ ১৮ হাজার ২৬০ টাকা।

150727102039-2011-plum-harvest-exlarge-169‘ট্রি অব ফোরটি’ পুরোপুরি বিকশিত হতে একদশক পর্যন্ত সময় নেয়। এই গাছে প্রতিটি ফল আসে ভিন্ন ভিন্ন সময়ে। তবে পুরো গ্রীষ্মেই গাছে ফল থাকে। গবেষক স্যাম ভ্যান অ্যাকেন জানান, এ প্রকল্পের পুরো কাজটিকে একটি শিল্পকর্ম হিসেবে দেখেছেন তিনি।
প্রকল্পের অংশ হিসেবে ২৫০টিরও বেশি প্রজাতির গাছ নিয়ে কাজ করেছেন গবেষক স্যাম ভ্যান অ্যাকেন। তিনি বলেছেন, ‘কোন কলম অন্যগুলোর তুলনায় বেশি ভালো করবে তা আদতে আপনার পক্ষে নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব নয়। এর কোনও ডিজাইন বা মডেল নেই।’

150727102112-dsc-0181-exlarge-169স্যাম ভ্যান অ্যাকেনের কথায়, ‘শিশুদের শেখানোর জন্য এই গাছ একটি চমৎকার মাধ্যম হতে পারে। কেননা, এখানে তাদের এমন একটি শিল্পকর্মের সঙ্গে পরিচিত করানো হবে যা একইসঙ্গে ফলদায়ক বৃক্ষ। যেখানে এটি লাগানো হবে সেই এলাকায় ফলের বৈচিত্র্য আসবে। বাসিন্দারা সচরাচর যেমন ফল দেখতে অভ্যস্ত তার সঙ্গে নতুন ধরনের ফল দেখতে পারবেন তারা।’

সূত্র: সিএনএন, টাইম, উইকিপিডিয়া।

* ট্রি অব ফোরটির ভিডিও: