প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ফেরাতে থাই সৈকত অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ

মায়া বে বন্ধ হওয়ার আগে গত এপ্রিলে তোলা ছবি‘টাইটানিক’ তারকা লিওনার্দো ডিক্যাপ্রিওর ‘দ্য বিচ’ (২০০০) ছবিটি দেখেছেন? এর শুটিং হয়েছিল থাইল্যান্ডের ‘মায়া বে’ সমুদ্র সৈকতে। এর সুবাদে খ্যাতি পেয়ে যায় জায়গাটি। ফলে সেখানে সারাবছর অসংখ্য পর্যটক সমাগম হয়ে থাকে। কিন্তু হিতে বিপরীত হয়েছে। অতিরিক্ত পর্যটক উপস্থিতির কারণে মায়া বে হারাতে বসেছে প্রাকৃতিক সৌন্দর্য।

সৈকতপ্রেমীদের জন্য মন খারাপের খবর। প্রাকৃতিক ভারসাম্য রক্ষার্থে মঙ্গলবার (২ অক্টোবর) অনির্দিষ্টকালের জন্য এই জায়গা বন্ধ ঘোষণা করেছে থাইল্যান্ডের ডিপার্টমেন্ট অব ন্যাশনাল পার্কস, ওয়াইল্ডলাইফ অ্যান্ড প্ল্যান্ট কনজারভেশন (ডিএনপি)।

http_%2F%2Fcdn.cnn.com%2Fcnnnext%2Fdam%2Fassets%2F180626121542-10-spectacular-coastlines---andaman-coastপ্রবালপ্রাচীর উদ্ধার কাজের সুবিধার্থে গত ১ জুন চার মাসের জন্য অস্থায়ীভাবে পর্যটকদের জন্য নিষিদ্ধ করে দেওয়া হয় আন্দামান সাগরঘেষা সৈকত ‘মায়া বে’। উষ্ণ তাপমাত্রা আর পর্যটকদের উপচেপড়া ভিড়ের কারণে সেখানকার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে দাবি থাই সরকারের।

Untitledকর্তৃপক্ষ এখন বলছে, চার মাস যথেষ্ট সময় নয়। মায়া বে’র প্রবালপ্রাচীর, ম্যানগ্রোভ ও সৈকতকে পুনরুজ্জীবিত করার পাশাপাশি প্রাকৃতিক পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে অন্তত এক বা দুই বছর কিংবা তারও বেশি সময় প্রয়োজন।

লিওনার্দো ডিক্যাপ্রিওর ‘দ্য বিচ’ ছবির সুবাদে খ্যাতি পেয়েছে মায়া বেডিপার্টমেন্ট অব ন্যাশনাল পার্কসের তথ্য অনুযায়ী, ২০১৮ সালে সেখানে ২৫ লাখ পর্যটক সমাগম হয়েছে। প্রতিদিন ছয় হাজারেরও বেশি ভ্রমণকারীর পা পড়তো এই সৈকতে। মেয়েদের সূর্যস্নান, ডুবসাঁতার ও ফটোশুট ছিল নিয়মিত চিত্র। ফুকেট থেকে স্পিডবোটে চড়ে আধঘণ্টায় সৈকতে পৌঁছে সারাদিন আনন্দ উপভোগের পর আবার ফিরে যাওয়া ভ্রমণকারীর সংখ্যাও ছিল লক্ষণীয়।
পর্যটকদের ভিড়ে ক্ষতি হয়েছে দ্বীপের প্রবালপ্রাচীরের‘মায়া বে’র শ্বেতশুভ্র তীর ও উঁচু চুনাপাথরের খাড়া বাঁধ বিভিন্ন দেশের পর্যটকদের কাছে অন্যতম আকর্ষণ। তবে সেখানে কোনও হোটেল নেই। আর রাতে এই সৈকতে থাকা যায় না।

মায়া বে’র জলে পর্যটকদের ডুবসাঁতারডিএনপি’র অভিযোগ, পর্যটকরা প্লাস্টিক পণ্যসহ বিভিন্ন ময়লা-আবর্জনা সাগরে ও বেলাভূমিতে ফেলে প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের বারোটা বাজিয়েছে! তাই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম টুইটারে প্রকৃতিপ্রেমীরা থাই সরকারের এ উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছে।

Untitled1থাইল্যান্ডের অর্থনীতির ১২ শতাংশ আসে পর্যটন খাত থেকে। কিন্তু মায়া বে বন্ধ করে দেওয়ায় দেশটির পর্যটনে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে নিঃসন্দেহে। যদিও দ্রুত বৃদ্ধি পাওয়া ভ্রমণকারীর সংখ্যা উদ্বেগজনক হয়ে দাঁড়িয়েছে। এর অংশ হিসেবে প্রকৃতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত মায়া বে আর চালু না করার সিদ্ধান্তে অটল এশিয়ার জনপ্রিয় এই রাষ্ট্র।

* মায়া বে সৈকতে চিত্রায়িত ‘দ্য বিচ’ ছবির ট্রেলার:

সূত্র: রয়টার্স, সিএনএন, সানডে এক্সপ্রেস