জেলায় ছোটবড় শতাধিক পর্যটন স্পট রয়েছে। এর মধ্যে উল্লেযোগ্য— হাকালুকি হাওর, মাছের অভয়াশ্রম বাইক্কাবিল হাইল হাওর, লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যান, বাংলাদেশ চা গবেষণা ইনস্টিটিউট (বিটিআরআই), চা শ্রমিকদের জীবনধারা, চা বাগানের নৈসর্গিক অর্ধশতাধিক স্পট, আনারস বাগান ও লেবু বাগান; খাসিয়া, ডবলছড়া ও নিরালা পানপুঞ্জি, মাধবপুর লেক, হাম হাম জলপ্রপাত, মাধবকুন্ড জলপ্রপাত, হরিণছড়া গলফ মাঠ, ক্যামেলিয়া হাউস, বর্ষিজোড়া ইকোপার্ক ও মনুব্যারেজ। এছাড়া আছে খাসিয়া, ত্রিপুরা, মণিপুরী, সাঁওতাল প্রভৃতি নৃ-তাত্তি¡ক জনগোষ্ঠীর মনোমুগ্ধকর জীবনধারা।
মৌলভীবাজার জেলার শ্রীমঙ্গল উপজেলা চায়ের শহর হিসেবে পরিচিত। পর্যটনের বিকাশে বিশেষ পরিকল্পনার অংশ হিসেবে এই জায়গাকে পর্যটন জোন হিসেবে গড়ে তোলার চেষ্টা করছে সরকার। শ্রীমঙ্গল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. নজরুল ইসলাম বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘পর্যটন করপোরেশনের চেয়ারম্যান আখতারুজ্জামান খান কবির শ্রীমঙ্গলের বেশ কয়েকটি স্থান পরিদর্শন করেছেন। রিসোর্ট নির্মাণের জন্য উপযুক্ত জমি খোঁজা হচ্ছে। কয়েকটি স্থান দেখা হয়েছে। শিগগিরই উদ্যোগ নেওয়া হবে।’
তবে কর্তৃপক্ষের উদাসীনতা আর অব্যবস্থাপনা ও সরকারি অবকাঠামো গড়ে না ওঠায় পর্যটকরা ভোগান্তিতে পড়ছেন বলে মন্তব্য স্থানীয়দের। তাই সবার আগে অবকাঠামো গড়ে তোলা দরকার বলে মনে করেন পর্যটন সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা। শ্রীমঙ্গল রিসোর্টের মালিক সুমি বেগম বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘পর্যটকদের যাতায়াতের উপযোগী সড়ক নেই উপজেলায়। তাহলে তারা আসা-যাওয়া করবেন কীভাবে?’
একই অভিযোগ শ্রীমঙ্গলের উদ্যোক্তা মো. সাইফুল ইসলামের। তার বক্তব্য, ‘শ্রীমঙ্গল থেকে লাউয়াছড়া যাওয়ার সড়কের অবস্থা নাজেহাল। একই অবস্থা জেলার হামহাম জলপ্রপাতসহ সবকটি পর্যটন স্পটের রাস্তায়। অবকাঠামোগত উন্নয়ন ও ভালো যোগাযোগ ব্যবস্থা তৈরি করতে না পারলে পর্যটনের বিকাশ সম্ভব নয়।’
তবে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শোনালেন আশার কথা। তিনি বলেছেন, ‘পর্যটন বিকাশের জন্য যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নত হওয়া জরুরি। যোগাযোগব্যবস্থা ভালো হলে এমনিতেই পর্যটকের সংখ্যা বাড়বে।’
জানা গেছে, শ্রীমঙ্গলের পর্যটনের বিকাশে করণীয় দিকগুলো নিয়ে পর্যটন সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন খাতের প্রতিনিধির সঙ্গে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার মতবিনিময় হয়েছে। সেখানে পর্যটন করপোরেশনের চেয়ারম্যান আখতারুজ্জামান খান কবির ছিলেন। তার সামনে পর্যটনের বিকাশে প্রতিবন্ধকতাগুলো তুলে ধরেছেন সংশ্লিষ্টরা। তিনি সব শুনেছেন। তার মন্তব্য, পর্যটনের উন্নয়নে পর্যটন করপোরেশনের উদ্যোগ যথেষ্ট নয়। এর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় যুক্ত। যেমন এলজিইডি, স্বরাষ্ট্র, স্থানীয় সরকারকেও এগিয়ে আসতে হবে।’
এদিকে পর্যটকদের নিরাপত্তায় নিয়োজিত ট্যুরিস্ট পুলিশের রয়েছে জনবল সংকট। এ প্রসঙ্গে শ্রীমঙ্গল ট্যুরিস্ট পুলিশের উপ-পরিদর্শক নোয়াব আলী মনে করেন, পর্যটকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ট্যুরিস্ট পুলিশের জনবল ও গাড়ি বৃদ্ধি আর গুরুত্বপূর্ণ স্থানে ক্যাম্প স্থাপন প্রয়োজন।