সেন্টমার্টিনের উপকূলে ১২০০ কেজি বর্জ্য সংগ্রহ

Photo-Coca-Cola International Coastal Cleanup- 2018সেন্টমার্টিন বাংলাদেশের একমাত্র প্রবাল দ্বীপ। কিন্তু ময়লা-আবর্জনার কারণে এর প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ক্রমে হুমকির সম্মুখীন। তাই সেন্টমার্টিনের ৮ কিলোমিটার উপকূল পরিষ্কারের উদ্যোগ নেওয়া হলো। দুই দিনের এই কর্মসূচির মাধ্যমে ১২০০ কেজি সামুদ্রিক আবর্জনা সংগ্রহ করেছেন ৫০০ জন স্বেচ্ছাসেবক। ৩২তম আন্তর্জাতিক উপকূল পরিচ্ছন্নতার কার্যক্রমের অংশ হিসেবে এর আয়োজন করে কোকাকোলা বাংলাদেশ ও কেওক্রাডং বাংলাদেশ।

এই কর্মসূচির স্লোগান ছিল ‘পিক ইট আপ, ক্লিন ইট আপ, সি চেঞ্জ’। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে অংশগ্রহণকারী স্বেচ্ছাসেবকদের মধ্যে ছিলেন শিক্ষার্থী, শিক্ষক, বিভিন্ন পেশাজীবী, সেন্টমার্টিন ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান মো. আবদুর রহমান ও জনপ্রতিনিধিরা। সমুদ্র সৈকতের বর্জ্য সংগ্রহ ও পৃথক করেন তারা। এছাড়া সৈকতে বেড়াতে আসা পর্যটকদের সঙ্গে সামুদ্রিক সম্পদ রক্ষার গুরুত্ব নিয়ে সচেতনতা বৃদ্ধিতে অংশ নেন সবাই। কর্মসূচির দ্বিতীয় দিনে স্থানীয় স্কুলের শিক্ষার্থীদের মধ্যে সমুদ্র সৈকত পরিচ্ছন্ন রাখা বিষয়ক সচেতনতামূলক বার্তা সংবলিত খাতা বিতরণ করা হয়।

সেন্টমার্টিন দ্বীপের সমুদ্র সৈকতে এ নিয়ে অষ্টমবারের মতো অনুষ্ঠিত হলো উপকূলীয় পরিচ্ছন্নতা ও সামুদ্রিক সম্পদ সংরক্ষণ কর্মসূচি। ২০৩০ সালের মধ্যে কোকাকোলার ‘বর্জ্য মুক্ত বিশ্ব’ প্রতিষ্ঠার বৈশ্বিক প্রতিশ্রুতির অংশ হিসেবে এই আয়োজন। বাজারজাতের সমপরিমাণ বোতল ও ক্যান সংগ্রহের পর পুনর্ব্যবহারযোগ্য করাই প্রতিষ্ঠানটির উদ্দেশ্য। জলরাশিতে টেকসই ও পরিচ্ছন্ন পরিবেশ নিশ্চিতকরণে অবদান রাখাই এই কার্যক্রমের লক্ষ্য। এর মাধ্যমে সামুদ্রিক বর্জ্য সৃষ্টির কারণ নিয়ে আলোচনা ও সামুদ্রিক বর্জ্যের নেতিবাচক প্রভাব সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি করা হয়।

বাংলাদেশে কোকাকোলার পাবলিক অ্যাফেয়ার্স অ্যান্ড কমিউনিকেশন (পিএসি) পরিচালক শামীমা আক্তার বলেন, ‘সেন্টমার্টিনের নজরকাড়া সৌন্দর্য ও দৃষ্টিনন্দন প্রবাল দ্বীপ অনেক পর্যটককে আকৃষ্ট করে। এজন্য এখানকার উপকূল রক্ষায় টেকসই সচেতনতা বৃদ্ধি করতে হবে। আশা করছি, অষ্টমবারের মতো এই সমুদ্র সৈকত পরিচ্ছন্নতা অভিযানের মাধ্যমে সবাই মিলে বর্জ্যমুক্ত বিশ্ব বিনির্মাণে সক্ষম হবো।’

ইন্টারন্যাশনাল কোস্টাল ক্লিনআপ বিশ্বের সবচেয়ে বড় স্বেচ্ছাসেবী প্রয়াস। এই উদ্যোগের মাধ্যমে হাজার হাজার মানুষকে সমুদ্র সৈকত, লেক ও জলরাশি থেকে মিলিয়ন পাউন্ডের আবর্জনা ও পরিত্যক্ত জিনিস সংগ্রহ করতে উদ্বুদ্ধ করা হয়।

গত আট বছরে এই কর্মসূচির আওতায় কোকাকোলা বাংলাদেশ ও কেওক্রাডং বাংলাদেশের উদ্যোগে ৪ হাজার স্বেচ্ছাসেবী সেন্টমার্টিন থেকে ৯ হাজার ৬০০ কেজি সামুদ্রিক আবর্জনা সংগ্রহ করেছে। সংগৃহীত আবর্জনার তথ্য সংগ্রহ করে ওশান কনজারভেন্সির বিশ্বজুড়ে সামুদ্রিক বর্জ্যের ডাটাবেজে অন্তর্ভুক্ত করা হবে।

সমুদ্র ও সামুদ্রিক প্রাণী রক্ষায় কাজ করে ওশান কনজারভেন্সি। ২০০৬ সাল থেকে ওশান কনজারভেন্সির কান্ট্রি কো-অর্ডিনেটর হিসেবে কোস্টাল ক্লিনআপকে উপস্থাপন করছে তরুণদের সংগঠন কেওক্রাডং বাংলাদেশ। আমেরিকার হনুলুলুতে অনুষ্ঠিত পঞ্চম ইন্টারন্যাশনাল মেরিন ডেবরি কনফারেন্সে অংশ নিয়েছে এর সদস্যরা।