বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. মহিবুল হক বাংলা ট্রিবিউনকে জানান, নিষিদ্ধের পরিবর্তে সেন্টমার্টিনে পর্যটকদের রাতযাপন সীমিত করা হবে। তার আশা, এতে দ্বীপটির ওপর চাপ কমে আসবে। তিনি মনে করেন, পর্যটকদের রাতযাপন হঠাৎ বন্ধ করে দিলে বিরূপ প্রভাব পড়বে। কারণ, স্থানীয়দের আয়ের একটি বড় উৎস পর্যটন। পর্যটকদের কেন্দ্র করে স্থানীয়দের কর্মসংস্থান নির্ভর করে। তাছাড়া সেখানে অনেক হোটেল-মোটেলে বিনিয়োগ রয়েছে। এসব বিবেচনায় বিকল্প চিন্তা করা হচ্ছে।
পর্যটন মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনা করে সেন্টমার্টিনে পর্যটকদের যাওয়ার বিষয়টি নিয়ন্ত্রণ করা হবে। দিনে কতজন যেতে পারবেন তা নির্ধারিত থাকবে। এজন্য সেন্টমার্টিনে পর্যটকদের যাওয়ার আগে অনলাইনে নিবন্ধন করার উদ্যোগ নেওয়া হবে। নির্ধারিত ফি দিয়ে নিবন্ধন করে যেতে হবে পর্যটকদের। ওই অর্থ ব্যয় করা হবে দ্বীপটির উন্নয়নে।
বেশিরভাগ ভ্রমণপিপাসু মনে করেন, মাত্র একদিনে সেন্টমার্টিন দেখা হয়ে ওঠে না। কারণ, টেকনাফ থেকে সকালে জাহাজে চড়ে সেন্টমার্টিন পৌঁছাতে দুপুর গড়িয়ে বিকাল হয়ে যায়। মাত্র দুই-তিন ঘণ্টায় কারও পক্ষে সেন্টমার্টিন উপভোগ্য মনে হবে না। সেন্টমার্টিনে রাতে থাকতে না পারলে অনেকেই কক্সবাজারে আসা বন্ধ করে দেবেন বলে মনে করেন তাদের অনেকে।
অন্য সিদ্ধান্তগুলো হলো—ছেঁড়াদ্বীপ ও গলাচিপায় পর্যটকদের প্রবেশের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হবে। মোটরসাইকেল, গাড়ি ও স্পিডবোট চলাচল করতে পারবে না। কচ্ছপের প্রজনন ব্যাহত হওয়ায় রাতে আলো জ্বালানো যাবে না। বঙ্গোপসাগরে জাহাজ চলাচলের ওপর গতিবিধি আরোপ করা হয়েছে। প্রতিদিন সর্বোচ্চ ৫০০ পর্যটক বেড়ানোর সুযোগ পাবেন। সব ধরনের নতুন স্থাপনা নির্মাণ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। জেনারেটর নিষিদ্ধ থাকবে। প্রয়োজনে সৌরশক্তি ব্যবহার করতে হবে। জমি বেচাকেনা করা যাবে না। সব হোটেল-মোটেল ও স্থাপনা উচ্ছেদ করে জমি অধিগ্রহণ করে বসবাসকারীদের অন্যত্র সরিয়ে নেওয়া হবে।
কক্সবাজারের হোটেল লং বিচের ম্যানেজার মোহাম্মদ তারেকও মনে করেন, এই প্রবাল দ্বীপে আগের মতো সৌন্দর্য নেই। পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতাও চোখে পড়ে না। ধারণক্ষমতার চেয়ে বেশি মানুষের পদচারণায় দিন দিন সৌন্দর্য হারাচ্ছে দ্বীপ।
ছবি: সাজ্জাদ হোসেন