হ্যাপি নিউ ইয়ার! এশিয়া, ইউরোপ, আফ্রিকা ও আমেরিকার প্রধান শহরগুলোতে এখন নতুন ইংরেজি বছরকে ঘিরে উৎসবের হাওয়া। ২০১৯ সালকে বরণ করে বিশ্বজুড়ে কোটি কোটি মানুষ আনন্দের ঢেউয়ে ভাসছে। ইউরোপের মতো ধুমধামের কমতি ছিল না এশিয়া ও মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতে।
মধ্যপ্রাচ্যের দেশ সংযুক্ত আরব আমিরাতের রাজধানী আবুধাবির কাছে আল-ধাফরা অঞ্চলে ইংরেজি নববর্ষ উপলক্ষে ছিল আতশবাজি প্রদর্শনী।
সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাই শহরে থার্টি ফার্স্ট নাইটে দেখা গেছে দর্শনীয় লাইট শো। বিশ্বের সবচেয়ে লম্বা ভবন বুর্জ খলিফার দেয়াল জুড়ে ফুটে ওঠে ২০১৯।
মধ্যপ্রাচ্যের আরেক দেশ সিরিয়ায় ইংরেজি নববর্ষকে বরণ করে নিতে সড়কে নেমে আসা দর্শনার্থীদের কাছে হাওয়াই মিঠাই বিক্রি করছে এক দোকানি। পথে পথে শিশু-কিশোরদের আনন্দ দিতে অনেকে সান্তাক্লজ সেজেছে।
পিয়ং ইয়াংয়ের থার্টি ফার্স্ট নাইটে আতশবাজি প্রদর্শনীতে ইংরেজি বছরকে বরণ করে নেওয়া হয়। শহরটির মূল স্কয়ারে হাজার হাজার মানুষ ভিড় জমিয়েছে। আকাশে আরবি সংখ্যা প্রদর্শন করে রাত ১২টার কাউন্টডাউন করা হয়েছে।
গানউইন প্রদেশের গ্যাংনিউং শহরের চুংডংজন সৈকতের ওপর আকাশে ছিল আতশবাজির আলোকসজ্জা।
মেরিনা বেতে মাঝরাতে আতশবাজি ছড়িয়ে পড়ে আকাশে। দর্শনার্থীরা বর্ণিল আলোয় রঙিন হয়ে ওঠে এ সময়।
মালয়েশিয়ার রাজধানী কুয়ালালামপুরের বিখ্যাত ভবন পেট্রোনাস টুইন টাওয়ারসে ওপর আকাশকে জমকালো করে দেয় বর্ণিল আতশবাজি। তখন মনে হচ্ছিল, ভবন দুটিতে রঙ ঢেলে দেওয়া হয়েছে।
থাইল্যান্ডের রাজধানী ব্যাংককে চাও ফ্রাইয়া নদীর ওপর রাতের আকাশ উদ্ভাসিত হয়েছে আতশবাজিতে। এ সময় হাজার হাজার মানুষের মুখে ছিল ‘হ্যাপি নিউ ইয়ার’ ধ্বনি।
এশিয়ার এই দেশে প্রতি বছর ফেব্রুয়ারিতে নতুন বছর উদযাপন করা হয়। তবে হংকং, বেইজিং ও সাংহাইয়ের মতো বড় শহরগুলোতে ঠিকই ছিল উৎসবের আমেজ।
ইন্দোনেশিয়ার রাজধানী জাকার্তায় ১০০ দম্পতি উন্মুক্ত স্থানে বিয়ে করেছে। তাদের সবাই সম্প্রতি সুনামির আঘাতে বিধ্বস্ত বানটেন প্রদেশের। ওই জায়গা পর্যটকদের প্রিয় গন্তব্য। তবে ক্ষতিগ্রস্তদের প্রতি সম্মান জানাতে নববর্ষের পার্টি বাতিল করা হয়েছে বানটেনে।
ইন্দোনেশিয়ার জাভার ইওগিয়াকার্তা শহরের আকাশ আলোকিত হয়েছে আতশবাজির রঙে। এ সময় ভ্রমণপিপাসুসহ স্থানীয়রা নতুন বছরকে স্বাগত জানায়।
টোকিও
নতুন বছরকে স্বাগত জানাতে মন্দিরে ভিড় করেছে জাপানিরা।
তাইওয়ানের তাইপে ১০১ নামের আকাশছোঁয়া ভবনের ওপর থেকে জ্বালানো লাইট ও আতশবাজি প্রদর্শনী রাতের আকাশ করে তোলে জমকালো। এমন রঙিন আবহে নতুন বছরকে স্বাগত জানায় দর্শনার্থীরা।
থার্টি ফার্স্ট নাইটে ২০১৯ আকৃতির রঙিন চশমা পরেছেন এক দর্শনার্থী। মেট্রো ম্যানিলার কেজোন সিটি থেকে ছবিটি তোলা।
নতুন বছর উদযাপনের অংশ হিসেবে ভারতের আহমেদাবাদে একজন রূপসজ্জাকর চুল সাজিয়ে দিচ্ছেন।
নিউজিল্যান্ডের অকল্যান্ডের স্কাই টাওয়ারে দর্শনীয় আতশবাজি প্রদর্শনীর মধ্য দিয়ে বরণ করা হয় ইংরেজি নববর্ষ।
নতুন বছরকে স্বাগত জানাতে অস্ট্রেলিয়ার সিডনিতে দেখা গেছে সুরের ঝংকারের সঙ্গে রেকর্ডসংখ্যক ১ লাখ আতশবাজি প্রদর্শনী।
অস্ট্রেলিয়ার আরেক জনপ্রিয় শহর মেলবোর্নে ২২ ভবনের ছাদ ও মাটি থেকে ১৪ টন আতশবাজি পোড়ানো হয়। ড্রাগনের ওড়ার দৃশ্য ফুটে উঠেছে এর মাধ্যমে। এই ঘটনার সাক্ষী হতে ভিড় করেছিল সাড়ে তিন লাখ দর্শনার্থী।
ব্রিসবেন নদীর ওপর ভাসমান পাঁচটি প্রমোদতরী থেকে ফোটানো আতশবাজি প্রদর্শনী উপভোগ করেছে ৮৫ হাজার মানুষ।
ব্রিটেন টেমস নদীর তীরে চাকা আকৃতির লন্ডন আইয়ে আতশবাজি প্রদর্শনী ও বিখ্যাত শিল্পীদের গান-বাজনার মাধ্যমে ২০১৯ সালকে স্বাগত জানানো হয়।
দর্শনীয় আতশবাজি প্রদর্শনীর মধ্যে নতুন বছরকে স্বাগত জানাতে রাশিয়ার রাজধানী মস্কোতে শত শত মানুষ পথে পথে ভিড় জমিয়েছে। শহরের পার্কগুলোতে কনসার্ট ও লাইট শোর আয়োজন করা হয়।
শঁনজেলিজে এলাকায় আতশবাজি প্রদর্শনী আর ভ্রাতৃত্বের থিমে সাজানো সাউন্ড ও লাইট শো অনুষ্ঠিত হয়।
থার্টি ফার্স্ট নাইটে বার্লিনের ব্রান্ডেনবার্গ গেটে কনসার্টে পার্টি করেছে সংগীতানুরাগীরা। জার্মানিতে নতুন বছর স্বাগত জানানোর ঐতিহ্যবাহী আয়োজন আতশবাজি এবার এই শহরে নিষিদ্ধ রাখা হয় নিরাপত্তার কারণে।
২০১৯ সালকে স্বাগত জানাতে থার্টি ফার্স্ট নাইটে স্কটল্যান্ডের রাজধানী এডিনবার্গের পথে বেরিয়ে আসে ৭৫ হাজার মানুষ। বর্ণিল সাজে নানান পরিবেশনায় তাদের বিনোদন দেয় কোম্পানি ট্রান্স এক্সপ্রেস দলের শিল্পীরা।
২০১৯ সালের শুরুতে আজারবাইজানের রাজধানী বাকুর রাতের আকাশ রাঙিয়ে দিয়েছে বর্ণিল আতশবাজি।
হৈ-হুল্লোড় আর খানাপিনায় ইংরেজি নববর্ষকে স্বাগত জানিয়েছে বেলারুশের রাজধানী মিনস্কের নাগরিকরা। শহরটির পথে পথে ফূর্তিবাজরা ভিড় করেছে থার্টি ফার্স্ট নাইটে।