কোন জেলার নামকরণ কীভাবে

ধর্ম প্রচারক হজরত শাহ জামালের (রহ.) নামে জামালপুর

ছাপ্পান্ন হাজার বর্গমাইল আয়তনের বাংলাদেশের নয়নাভিরাম প্রাকৃতিক সৌন্দর্য, সমৃদ্ধ ইতিহাস, ঐতিহ্য, বৈচিত্র্যপূর্ণ সংস্কৃতি, দৃষ্টিনন্দন জীবনাচার মন কাড়ে দেশি-বিদেশি পর্যটকদের। পৃথিবীর দীর্ঘতম সমুদ্রসৈকত, প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন, ঐতিহাসিক মসজিদ ও মিনার, নদী, পাহাড়, অরণ্যসহ হাজারও সুন্দরের রেশ ছড়িয়ে আছে টেকনাফ থেকে তেঁতুলিয়া পর্যন্ত।

দেশের আট বিভাগে (ঢাকা, চট্টগ্রাম, বরিশাল, খুলনা, রাজশাহী, রংপুর, সিলেট ও ময়মনসিংহ) ৬৪ জেলা। পণ্য, খাবার, পর্যটন আকর্ষণ কিংবা সাংস্কৃতিক বা লোকজ ঐতিহ্যে বাংলাদেশের জেলাগুলো স্বতন্ত্রমণ্ডিত। প্রতিটি জেলার নামকরণের সঙ্গে রয়েছে ঐতিহ্যপূর্ণ ইতিহাস। প্রতিটি স্থানের নামকরণের ক্ষেত্রে কিছু জনশ্রুতি রয়েছে। এসব ঘটনা ভ্রমণপিপাসু উৎসুক মনকে আকর্ষণ করে। তাই বাংলা ট্রিবিউন জার্নিতে ধারাবাহিকভাবে জানানো হচ্ছে বাংলাদেশের ৬৪ জেলার নামকরণের সংক্ষিপ্ত ইতিহাস।

হযরত শাহ জামালের (রহ.) মাজার শরীফ (ছবি: সংগৃহীত)জামালপুর জেলা
গারো পাহাড়ের পাদদেশে যমুনা-ব্রহ্মপুত্র বিধৌত বাংলাদেশের ২০তম জেলা জামালপুর। এই শহরের আদি নাম সিংহজানী। ১৯৭৮ সালের ২৬ ডিসেম্বর জেলার মর্যাদা পায় জামালপুর।

দিল্লির সম্রাট আকবরের রাজত্বকালে (১৫৫৬-১৬০৫) ধর্ম প্রচারক হজরত শাহ জামাল (রহ.) ইয়েমেন থেকে ইসলাম প্রচারের উদ্দেশে ২০০ অনুসারী নিয়ে এই অঞ্চলে এসেছিলেন। পরবর্তী সময়ে ধর্মীয় নেতা হিসেবে দ্রুত তার প্রাধান্য বিস্তার লাভ করেন তিনি। ধারণা করা হয়, সাধক দরবেশ শাহ জামালের (রহ.) নামানুসারে এই শহরের নামকরণ হয় জামালপুর।

জামালপুরের ঐতিহ্য নকশিকাঁথা ও হস্তশিল্প। বলা হয়ে থাকে, ‘জামালপুরের নকশিকাঁথা বাংলাদেশের গর্বগাথা’। এখানে তৈরি নকশিকাঁথা এশিয়া ও ইউরোপের বিভিন্ন দেশে রফতানি হচ্ছে। এছাড়া কাঁসাশিল্প, মৃৎশিল্প, তাঁতশিল্প আর ঘোড়া, গরু ও মহিষের গাড়ির জন্য এই জেলার সুনাম আছে। 

জামালপুরের দর্শনীয় স্থানগুলো হলো যমুনা সারকারখানা, জিল বাংলা চিনিকল, হজরত শাহ জামালের (রহ.) মাজার শরীফ, হজরত শাহ কামালের (রহ.) মাজার শরীফ, ৩০০ বছরের প্রাচীন ও ঐতিহ্যবাহী দয়াময়ী মন্দির, লাউচাপড়া পিকনিক স্পট।