স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, কালীগঞ্জের গুড় সারাদেশে প্রসিদ্ধ হয়ে উঠেছে। তাই মোকামিদের কাছে কালীগঞ্জের এই হাট ব্যাপকভাবে পরিচিতি পেয়েছে। বড় বড় মোকামিরা ঠিলে (মাটির হাড়ি) থেকে গুড় ঢেলে ড্রামে ভরে নিয়ে যান। ট্রাক, ভ্যান, আলমসাধুসহ বিভিন্ন যানবাহনে এসব গুড় চলে যাচ্ছে কুষ্টিয়া, বাঘারপাড়া, ভাঙ্গা, ফরিদপুরসহ দেশের অন্যান্য জেলা ও উপজেলা শহরে।
কুষ্টিয়ার শালদহ গ্রামের মহির উদ্দীন, মোতালেব মিয়াসহ একাধিক ব্যবসায়ী বাংলা ট্রিবিউনকে জানান, বাজারে কালীগঞ্জের গুড়ের অনেক চাহিদা। তাই প্রতি সোম ও শুক্রবার কালীগঞ্জে মোকাম করতে আসেন তারা।
মোতালেব মিয়া ৪৫ বছর ধরে গুড়ের ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত। প্রতি বছর কালীগঞ্জের হাটে গুড় কিনতে আসেন তিনি। ৮ থেকে ৯ কেজি ওজনের এক ঠিলে (হাড়ি) গুড় কিনতে লাগে ৬০০-৭০০ টাকা। এখান থেকে গুড় কিনে ৮০০-১০০০ টাকা দরে কুষ্টিয়া শহরে পাইকারি ও খুচরামূল্যে বিক্রি করেন তিনি।
শুক্রবার হাটে ১০৮ ঠিলে (হাড়ি) গুড় কিনেছেন যশোরের বাঘারপাড়া থেকে আসা ব্যবসায়ী সঞ্জীব কুমার কুণ্ড। তিনি জানান— কালীগঞ্জের হাটে চট্টগ্রাম, বরিশাল, ফরিদপুর, কুষ্টিয়া, ভাঙ্গাসহ বিভিন্ন জেলা ও উপজেলা শহর থেকে পাইকারী ব্যবসায়ীরা গুড় কিনে দেশের বিভিন্ন স্থানে সরবরাহ করেন। তবে হতাশার কথা শোনা গেলো তার মুখে, ‘দিন দিন খেজুর গুড়ের হাট হারিয়ে যাচ্ছে। এখনকার হাটে আগের মতো গুড় উঠছে না। এ কারণে দূর-দূরান্তের মোকামিরা এখন আর আগের মতো আসেন না।’
আশঙ্কার কথাও উল্লেখ করলেন কালীগঞ্জ গুড়ের হাটের মালিক। তিনি জানান, ইটভাটা মালিকরা খেজুর গাছ কিনে পুড়িয়ে ফেলছেন। অনেক গাছি গাছ কাটা বন্ধ করে দিয়েছেন। তাই এখন আর আগের মতো হাটে গুড় আসছে না। তবে বৃহত্তর যশোর অঞ্চলের মধ্যে কালীগঞ্জের খেজুর গুড়ের হাট এখনও টিকে আছে। বাজারটি এখানকার একটি ঐতিহ্য বলে জানান তিনি।