ইতোমধ্যে ঢাকা, ময়মনসিংহ, রংপুর ও রাজশাহী বিভাগের ৩৩টি জেলার প্রত্নতাত্ত্বিক স্থাপনাগুলোর ভিডিও, ফটোগ্রাফি ও লেখালেখির মাধ্যমে ডকুমেন্টেশন করেছেন এলিজা। স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলেছেন। প্রত্নতাত্ত্বিক স্থাপনা নিয়ে বিভিন্ন লেখক ও প্রত্নতাত্ত্বিক অধিদফতরের বই থেকে তথ্য সংগ্রহ করছেন।
২০১৬ সালে বলধা গার্ডেন দিয়ে বাংলাদেশ ভ্রমণ শুরু হয় এলিজার। ১৭টি জেলায় ঘুরেছেন তিনি। তখন এই উদ্যোগের নাম রাখেন কোয়েস্ট: অ্যা হেরিটেজ জার্নি অব বাংলাদেশ। তার কথায়, ‘এটা আমার অনুসন্ধান, খোঁজা, জানা। নিজের জ্ঞান আহরণের জন্য ঘুরছি। সেজন্য কোয়েস্ট নামটি বেছে নিয়েছি।’
নেদারল্যান্ডসের দ্য হেগ ইউনিভার্সিটি অব অ্যাপ্লায়েড সায়েন্সে পড়াশোনা করতে যান এলিজা। সেখানে তার গবেষণার বিষয় ছিল ‘বাংলাদেশের পর্যটন শিল্প বিকাশে হেরিটেজ ট্যুরিজমের গুরুত্ব’। ২০১৮ সালের শেষের দিকে দেশে ফেরেন। এরপর থেকে নিয়মিত দেশের প্রত্নতাত্ত্বিক স্থাপনাগুলো ঘুরে দেখছেন।
রাজবাড়ী ও পাবনার প্রত্নতাত্ত্বিক স্থাপনাগুলো অযত্নে পড়ে থাকতে দেখেছেন এলিজা। এক্ষেত্রে সিরাজগঞ্জের নবরত্ন মন্দিরের কথা আলাদাভাবে বললেন তিনি, ‘যদিও এটি অত জনপ্রিয় নয়। ভেতরটা বেশ পরিচ্ছন্ন। সেখানে একজন কেয়ারটেকার রাখা হয়েছে। তার কাজ কী ধরনের মানুষ প্রতিদিন আসে তা জরিপ করা। জানা যায়, মাসে আড়াই হাজার থেকে তিন হাজার দর্শনার্থীর সমাগম হয়। নওগাঁ জেলায় জগদ্দল বিহারেও প্রত্নতত্ত্ব অধিদফতর থেকে জরিপের জন্য একজন কেয়ারটেকার রাখা হয়েছে। প্রতি মাসে গড়ে দুই হাজার দর্শনার্থী আসেন। এগুলো আশানুরূপ ব্যাপার।’
এলিজার আশা, ‘আমার উদ্যোগের মাধ্যমে বিভিন্ন মানুষ বাংলাদেশের হেরিটেজ সম্পর্কে জানবেন, কর্তাব্যক্তিরা এগিয়ে আসবেন, পর্যটকরাও সচেতন হবেন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের পাওয়া প্রতিক্রিয়ায় বুঝেছি, নিজের জেলার মানুষজনই অনেক স্থাপনার কথা জানে না। আমরা সাধারণত বেড়ানোর জন্য সাজেক, কক্সবাজার, সিলেটের চা-বাগানে বেড়াতে যাই। তাই প্রত্নতাত্ত্বিক স্থাপনা ঘুরে দেখতে উদ্বুদ্ধ করতে চাই সবাইকে। এর মাধ্যমে বিদেশি পর্যটকদেরও আকর্ষণ করা যায়।’
এলিজা বিনতে এলাহী পেশায় বাংলাদেশের ইউনিভার্সিটি অব সাউথ এশিয়ার বিজনেস বিষয়ক সহকারী অধ্যাপক। আপাতত শিক্ষা ছুটিতে আছেন তিনি। এই সুযোগে ঘুরে বেড়াচ্ছে। এবার যাবেন সিলেটে।