পর্যটকদের চোখে সেরা ৪৮ শহরের তালিকায় মুম্বাই ও দিল্লি

নিউ ইয়র্ক২০১৯ সালে ভ্রমণপিপাসুরা বিশ্বের কোন শহরগুলোতে বেশি যেতে চায়? তাদের চোখে বেড়ানোর জন্য সবচেয়ে রোমাঞ্চকর ৪৮টি শহরের একটি তালিকা প্রকাশিত হয়েছে এ বছরের টাইম আউট ইনডেক্সে। এতে শীর্ষে আছে যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্ক। ‘বিগ অ্যাপল’ নামে পরিচিত এই শহর রেস্তোরাঁ, বার, সংস্কৃতি, বিনোদনমূলক আয়োজন ও নাইটলাইফের দারুণ সম্মিলনে এক নম্বর স্থান দখল করেছে।

বলিউডের প্রাণকেন্দ্র মুম্বাই স্থান পেয়েছে তালিকার ২২ নম্বরে। চলচ্চিত্র ও মঞ্চনাটকের দর্শকদের জন্য এর বিকল্প হয় না! ভারতের এই শহরের মানুষ বছরে গড়ে প্রেক্ষাগৃহে ৩১টি ছবি দেখে ও ২৪টি মঞ্চনাটকের প্রদর্শনী উপভোগ করে। ৩৭ নম্বরে আছে দেশটির রাজধানী দিল্লি।

যুক্তরাজ্যভিত্তিক ম্যাগাজিন টাইম আউটের পক্ষে জরিপটি পরিচালনা করে টেপেস্ট্রি রিসার্চ। এর অংশ হিসেবে গত মাসে ৪৮টি শহরের ৩৪ হাজার মানুষের মতামত নেওয়া হয়। তারা নিজেদের শহর নিয়ে মন্তব্য জানান। সাধারণ মানুষের মতামতের পাশাপাশি বিশেষজ্ঞদের প্রতিক্রিয়া মিলিয়ে চূড়ান্ত ফল তৈরি করে টাইম আউট।

প্রতি বছরের মতো এবারের জরিপে খাবার, পানীয়, সুখ-স্বাচ্ছন্দ্য, বন্ধুভাবাপন্নতা, সংস্কৃতি ও ক্রয়ক্ষমতার বিচারে নিউ ইয়র্কের পক্ষে ভোট পড়েছে ৯১ শতাংশ। পাব, বার, নাইটক্লাব, কনসার্ট, ক্যাবারে, থিয়েটার ও চলচ্চিত্রের জন্য পর্যটকদের চোখে এই শহর সবচেয়ে আকর্ষণীয়।

নিউইয়র্ক এ বছর ওয়ার্ল্ড প্রাইড উদযাপন করবে। শহরটির শিল্পকলা কেন্দ্র দ্য শেড’ সহ অন্যান্য শিল্প-সংস্কৃতিকে তুলে ধরা হবে এতে। বিশ্ব ফেয়ার ফেস্টিভ্যালে থাকছে আন্তর্জাতিক খাবারের পসরা। এছাড়া নারীদের সম্মান জানিয়ে জনসাধারণের জন্য চারটি নতুন ল্যান্ডমার্ক উন্মোচন করা হবে।

মেলবোর্নতালিকায় দুই নম্বরে রয়েছে মেলবোর্ন। সুখ-শান্তি, খাবার, লাইভ মিউজিক ও সৃজনশীলতার সুবাদে ভ্রমণপ্রেমীদের কাছে অস্ট্রেলিয়ার এই শহরটি ভালোলাগার।

শিকাগোতিন নম্বরেও উড়েছে আমেরিকার পতাকা। এই অবস্থানে রয়েছে শিকাগো। ৮৫ শতাংশ স্থানীয় বাসিন্দার মতে, এটি বিশ্বের সুখী শহর। এছাড়া সেখানকার খাবার আর পানীয় বেশ উপভোগ্য।

লন্ডনচতুর্থ স্থান দখল করেছে লন্ডন। সংস্কৃতি, খাবার ও লাইভ মিউজিকের জনপ্রিয়তার জন্য যুক্তরাজ্যের রাজধানী ভ্রমণপিপাসুদের কাছে প্রিয়।

লস অ্যাঞ্জেলেসযুক্তরাষ্ট্রের আরেক শহর লস অ্যাঞ্জেলেস জায়গা পেয়েছে পাঁচ নম্বরে। সেখানকার চমৎকার খাবার বিশ্বের অনেক দেশের পর্যটককে হাতছানি দেয়!

প্যারিসপৃথিবীর যেকোনও শহরের চেয়ে বেশি নিরামিষভোজী জার্মানির বার্লিনে। এটি আছে তালিকার সাত নম্বরে। বন্ধুভাবাপন্নতা ও সাশ্রয়ী হিসেবে স্কটল্যান্ডের গ্লাসগো রয়েছে আটে। সবচেয়ে মিশুক শহর মনে করা হয় প্যারিসকে। এটি আছে ৯ নম্বরে। 

১১ থেকে ৪৮ নম্বরে আছে যথাক্রমে মাদ্রিদ (স্পেন), কেপটাউন (দক্ষিণ আফ্রিকা), লাস ভেগাস (যুক্তরাষ্ট্র), মেক্সিকো সিটি, ম্যানচেস্টার (ইংল্যান্ড), ফিলাডেলফিয়া (যুক্তরাষ্ট্র), বার্সেলোনা (স্পেন), বুয়েন্স আয়ারস (আর্জেন্টিনা), লিসবন (পর্তুগাল), ওয়াশিংটন ডি.সি (যুক্তরাষ্ট্র), তেল আবিব (ইসরায়েল), মুম্বাই (ভারত), টরন্টো (কানাডা), বার্মিংহ্যাম (ইংল্যান্ড), ডাবলিন (আয়ারল্যান্ড), সাও পাওলো (ব্রাজিল), মিয়ামি (যুক্তরাষ্ট্র), পোর্তো (পর্তুগাল), সিঙ্গাপুর, এডিনবার্গ (স্কটল্যান্ড), সান ফ্রান্সিসকো (যুক্তরাষ্ট্র), দুবাই (সংযুক্ত আরব আমিরাত), মিউনিখ (জার্মানি), ভিয়েনা (অস্ট্রিয়া), সাংহাই (চীন), মস্কো (রাশিয়া), দিল্লি (ভারত), সিয়াটল (যুক্তরাষ্ট্র), সিডনি (অস্ট্রেলিয়া), আবুধাবি (সংযুক্ত আরব আমিরাত), হংকং (চীন), বোস্টন (যুক্তরাষ্ট্র), রিও ডি জানেইরো (ব্রাজিল), মার্সেই (ফ্রান্স), ব্যাংকক (থাইল্যান্ড), কুয়ালালামপুর (মালয়েশিয়া), বেইজিং (চীন) ও ইস্তাম্বুল (তুরস্ক)।

টাইম আউটের গ্লোবাল প্রজেক্টস এডিটর জেমস ম্যানিং বলেন, ১৯৬৮ সাল থেকে সেরা শহরগুলোতে বেড়ানোর ব্যাপারে ভ্রমণপিপাসুদের সহায়তা করছি আমরা। লন্ডন থেকে শুরুটা হলেও এখন সেরা ৩১৫টি শহরে সমীক্ষা চালানো হচ্ছে। টাইম আউট ইনডেক্সের মাধ্যমে বোঝা যায় কোনগুলো এখন বিশ্বের সেরা শহর। এসব স্থানে প্রতিদিনই নতুন ভাবনা, সুস্বাদু খাবার, বিশ্বমাসের শিল্পকলা ও বিনোদন তৈরি হয়। এবারের তালিকার ৪৮টি শহরে বিশ্বের যেকোনও প্রান্তের পর্যটকরা বেড়াতে পারেন।’

নিউ ইয়র্কটাইম আউট ইনডেক্স ২০১৯-এ বিশ্বের শীর্ষ ১০ শহর
১. নিউ ইয়র্ক (যুক্তরাষ্ট্র)
২. মেলবোর্ন (অস্ট্রেলিয়া)
৩. শিকাগো (যুক্তরাষ্ট্র)
৪. লন্ডন (যুক্তরাজ্য)
৫. লস অ্যাঞ্জেলেস (যুক্তরাষ্ট্র)
৬. মন্ট্রিল (কানাডা)
৭. বার্লিন (জার্মানি)
৮. গ্লাসগো (স্কটল্যান্ড)
৯. প্যারিস (ফ্রান্স)
১০. টোকিও (জাপান)

সূত্র: ডেইলি এক্সপ্রেস, ডেইলি মেইল