বেপরোয়া যানে অনিরাপদ সৈকত

সৈকতে মোটরসাইকেল চালকদের ভিড়

পটুয়াখালীর কুয়াকাটা, দেশের একমাত্র সমুদ্র সৈকত যেখান থেকে সূর্যোদয় ও সূর্যাস্ত দেখা যায়। এজন্য বছরের অধিকাংশ সময় এখানে পর্যটকদের ভিড় জমে। সৈকতের পাশে দীর্ঘ নারকেল গাছের সারির সুবাদে এর সৌন্দর্য অন্যরকম। সমুদ্রমন্থনের পাশাপাশি পূর্ব দিকে গঙ্গামতি বা গজমতির বন হয়ে লাল কাঁকড়ার চর আর পশ্চিম দিকে শ্বাসমূলীয় ফাতরার বন; সাগরের প্রান্ত ছুঁয়ে ছুঁয়ে কয়েক ঘণ্টার মধ্যে উপভোগ করা যায় ১৮ কিলোমিটার দীর্ঘ এই সৈকতের বহুবিধ রূপ-রঙ।

তবে সরেজমিনে দেখা যায়, সম্প্রতি সৈকতে ভাঙনের ফলে প্রায় বিলীন হতে বসেছে নারকেল বাগান। অন্যদিকে যানবাহন চালকদের বেপেরোয়া উপস্থিতির কারণে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন পর্যটকরা। স্থানীয়রা জানান, ভোর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত সৈকতে বেপরোয়া গতিতে চলছে মোটরসাইকেল, ইজিবাইক, মাহেন্দ্র ও ইঞ্জিনচালিত ভ্যান। এ কারণে প্রতিদিনই ঘটছে দুর্ঘটনা।

সৈকতে মোটর যানের চলাফেরা

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, মোটরসাইকেল চালকরা পর্যটকদের জন্য সংরক্ষিত এলাকায় ঢুকে যাত্রী পাওয়ার প্রতিযোগিতা করছেন। একজন যাত্রী পেলেই কয়েকজন চালক তাকে ঘিরে ধরেন। এ সময় চালকদের আচরণ চলে যায় অসহনীয় পর্যায়ে। এমনকি সৈকতে মোটরবাইকের বেপরোয়া চলাচলের কারণে বিভিন্ন সমস্যায় পড়ছেন পর্যটকরা। 

বরিশাল থেকে ঘুরতে আসা ব্যবসায়ী রহমত গাজী বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘মাঝে মধ্যে এখানে আসতে হয়। তবে সৈকতে গেলেই আতঙ্কে থাকি।’

শান্ত বিকালে সৈকত থেকে সাগরের দৃশ্য

সৈকত সংলগ্ন এলাকার মোটরসাইকেল চালক মো. মিজানের দাবি, ‘মোটরসাইকেল নিয়ে বিচের ছাতা এলাকার মধ্যে আসার সুযোগ নেই। তবে এলেও পুলিশ তেমন কিছু বলে না। শুধু বের হয়ে যেতে বলে। আর ওপরের চাপ থাকলে তখন জরিমানা করে।’   

এসব বিষয়ে পর্যটন পুলিশ জোন কুয়াকাটার পরিদর্শক মো. মনিরুজ্জামান বাংলা ট্রিবিউনকে বলেছেন, ‘এখানে পর্যটকদের নিরাপত্তার জন্য গুরুত্বপূর্ণ স্থানগুলোতে পুলিশ থাকে। বিচ (সৈকত) হয়ে বিভিন্ন দিকে যাতায়াতের জন্য মোটর যানবাহন চলাচল করে থাকে। তবে সেগুলোর মূল বিচে যেতে পারে না। আর এখানে পর্যটন পুলিশের কোনও ধরনের অ্যাকশন নেওয়ার সুযোগ নেই। কোনও অপরাধে কাউকে ধরা হলে মামলা করাসহ আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য থানা পুলিশের কাছে যেতে হয়।’