পর্যটন মৌসুমে মুখর হয়ে উঠছে রাঙামাটি

ঝুলন্ত সেতুরাঙামাটি জেলার বিভিন্ন পর্যটন স্পটে প্রতি বছর ডিসেম্বর থেকে মার্চ পর্যন্ত শীত মৌসুমে পাঁচ লক্ষাধিক পর্যটক বেড়াতে আসেন। আশা করা হচ্ছে, পর্যটনের ভরা মৌসুমে এবারও ভ্রমণপ্রেমীদের পদচারণায় মুখর হয়ে উঠবে হ্রদ-পাহাড়ের এই শহর।

মনোরম প্রকৃতির লীলাভূমি রাঙামাটিতে অর্ধশতাধিক হোটেল-মোটেলের পাশাপাশি দোকানি ও হ্রদে ভ্রমণের যানবাহন চালকরা পর্যটকদের জন্য প্রস্তুত। বাহারি ডিজাইনের পোশাক শোভা পাচ্ছে দোকানগুলোতে। 
পর্যটকদের জন্য স্থানীয় ঐতিহ্যবাহী পোশাক, শীতের শালসহ শিশু-কিশোরদের বিভিন্ন রকম কাপড়ের পসরা সাজিয়েছেন পোশাক পণ্য ব্যবসায়ীরা। কাপ্তাই লেক ও শুভলং ঝরনাসহ বিভিন্ন স্পটে বেড়াতে পর্যটকদের জন্য পর্যাপ্ত ব্যবস্থা আছে বলে জানালেন পর্যটন বোট ঘাট ইজারাদার রমজান আলী।

কাপ্তাই হ্রদপর্যটকদের সুযোগ-সুবিধা প্রদানে হোটেলগুলো বাড়তি প্রস্তুতি নিয়েছে বলে জানালেন ব্যবসায়ীরা। পর্যটন করপোরেশনের তথ্যানুযায়ী, ইতোমধ্যে ৬০ ভাগ হোটেলের রুম বুকিং হয়ে গেছে।

হোটেল গ্রিন ক্যাসেলের স্বত্ত্বাধিকারী মো. আসাদের দাবি, ‘বছরের এই মৌসুমেই সবচেয়ে বেশি পর্যটক আসে রাঙামাটিতে। তাদের জন্য নতুনভাবে সাজানো হয়েছে শহরের হোটেল-মোটেলগুলো।’

ভ্রমণপিপাসুদের জন্য রাঙামাটিতে রয়েছে সাজেক ভ্যালি, ঝুলন্ত সেতু, কাপ্তাই হ্রদ, পলওয়েল পার্ক, শুভলং ঝরনা ইত্যাদি। ইতোমধ্যে এসব পর্যটন স্পটে পর্যটক সমাগম হতে শুরু করেছে।

রাঙামাটির মনোরম প্রকৃতিঢাকা থেকে বেড়াতে আসা রোকেয়া আক্তার বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘মা-বাবার সঙ্গে প্রথমবার রাঙামাটি এসেছি। হ্রদ ভ্রমণ করেছি। এখানে না এলে বুঝতেই পারতাম না আমাদের দেশটা কত সুন্দর।’

পাবনার বাসিন্দা মাহবুব আলম পাহাড় ও হ্রদ দেখতে কয়েক বছর পরপর রাঙামাটি আসেন। তার কথায়, ‘শান্ত হ্রদের জল আর উঁচু উঁচু পাহাড় দেখলেই মনটা ভালো হয়ে যায়।’

রাঙামাটি পর্যটন করপোরেশনের ব্যবস্থাপক সৃজন কান্তি বড়ুয়া বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘ডিসেম্বরের শুরুর দিকে স্কুলের পরীক্ষা শেষ হয়ে যায়। তাই নতুন বছরের ব্যস্ততা শুরুর আগে সবাই ভ্রমণ করতে চায়। আমরা আশা করছি, এবারও শীত মৌসুমে বিপুলসংখ্যক পর্যটক রাঙামাটি জেলার বিভিন্ন পর্যটন স্পটে আসবেন।’
ঝুলন্ত সেতুএদিকে পর্যটকদের নিরাপত্তায় ট্যুরিস্ট পুলিশ প্রস্তুত আছে বলে জানিয়েছেন রাঙামাটি ট্যুরিস্ট পুলিশের ইন্সপেক্টর মাকসুদ আহাম্মদ।

রাঙামাটি আয়তনের দিক থেকে দেশের সর্ববৃহৎ জেলা। হ্রদ পরিবেষ্টিত পর্যটন শহরে চাকমা, মারমা, তঞ্চঙ্গ্যা, ত্রিপুরা, মুরং, বোম, খুমি, খেয়াং, চাক্, পাংখোয়া, লুসাই, সুজেসাওতাল, রাখাইন, বাঙালিসহ ১৪টি জনগোষ্ঠী বসবাস করে। ফলে এই পাহাড়ি ভূ-ভাগে দেখা যায় বৈচিত্র্যের ঐক্যতান।