পর্যটকশূন্য বান্দরবানে প্রাণ ফিরেছে প্রকৃ‌তিতে

বান্দরবানের পর্যটন কেন্দ্রকরোনাভাইরাস মহামারির কারণে ঈদেও বান্দরবানের মেঘলা, নীলাচল, নীল‌গি‌রি, চিম্বুকসহ সব পর্যটন কে‌ন্দ্র জনশূন্য। আশার কথা হলো, প্রাণ ফিরে পেয়েছে এখানকার প্রকৃ‌তি। ফুল, পা‌খি ও বন্যপ্রাণীর আনাগোনায় চারপাশে মনকাড়া সৌন্দর্য।
বর্তমানে পর্যটন কেন্দ্রগুলোতে তেমন আবর্জনা নেই। পর্যটক না থাকার ফলে প্রকৃ‌তি স্বরূপে ফিরেছে বলে মনে করেন স্থানীয়রা।

বান্দরবানের পর্যটন কেন্দ্রসরেজ‌মিন দেখা গেছে, পর্যটন কেন্দ্রগুলো পা‌খির কলকাক‌লিতে মুখ‌রিত। চা‌র‌দিকে সবুজের সমারোহ। গাছে গাছে সবুজ পাতা। মাঝে মধ্যে মৃদু হাওয়া এসে প‌রিবেশ শীতল করে দেয়। সব‌কিছু প‌রিচ্ছন্ন। দেখলেই প্রাণ জু‌ড়িয়ে যায়।

বান্দরবানের পর্যটন কেন্দ্রতবে সং‌শ্লিষ্টরা জানান, সব পর্যটন কে‌ন্দ্র বন্ধ থাকায় লোকসানের সম্মুখীন হচ্ছেন সংশ্লিষ্টরা। অবশ্য প্রকৃতির সজীবতায় তা কিছুটা হলেও লাঘব হয়েছে। পর্যটক সমাগমের স্বাভাবিক সময়ে এমনটি দেখা যায়নি।

সব পর্যটন কেন্দ্রে ফুলের সমাবেশ, মেঘলায় হাজারও টিয়া পা‌খি, নীলাচলে বনমোরগের দল, সাপসহ বি‌ভিন্ন বন্যপ্রাণীর উপস্থিতি এখন বেশ লক্ষণীয়। পর্যটক থাকলে এমন মনোরম প‌রিবেশ দেখা যায় না বলে মন্তব্য অনেকের।

বান্দরবানের পর্যটন কেন্দ্রবান্দরবানে সাধারণত হাজার হাজার পর্যটক সমাগম হতো। তাই জেলার ৫৮টির মতো হোটেল জমজমাট থাকতো। কিন্তু এখন সবকিছু থমকে আছে। এ কারণে অসংখ্য মানুষ বেকার হয়ে পড়েছে।

বান্দরবানের পর্যটন কেন্দ্রহোটেল ব্যবসায়ী সুমন বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘করোনার কারণে তিন মাস ধরে পর্যটকরা বান্দরবানে আসার সুযোগ পাচ্ছে না। এ কারণে কোনও আয় নেই। কর্মীদের বেতনসহ যাবতীয় খরচ ঠিকই বহন করতে হচ্ছে।’

বান্দরবানের পর্যটন কেন্দ্রব্যবসায় লোকসান হলেও প্রকৃতির সৌন্দর্যে মুগ্ধ এই ব্যবসায়ী। তার কথায়, ‘বান্দরবানে প্রকৃতির এমন রূপ আগে কখ‌নও দে‌খি‌নি। বর্তমানে এখানে ঝা‌ঁকে ঝাঁকে বনমোরগের দল ঘুরে বেড়ায়। টিয়া পা‌খির দল আকাশে ওড়ে। সবুজের মেলা তো আছেই।’
বান্দরবানের পর্যটন কেন্দ্রআরেক ব্যবসায়ী সুজু‌কি মারমার দাবি, ভ্রমণপ্রেমীদের সংখ্যা হ্রাস পাওয়ার পর থেকেই পর্যটন কেন্দ্রে সবুজ ঘাস গজাতে শুরু করে। ধীরে ধীরে প্রাণ ফিরে এসেছে এসব জায়গায়। এখন রোজ সকালে ঘুম ভাঙে পা‌খি ও বনমোরগের ডাকে। এমন মনোরম পরিবেশ উপভোগের সুযোগ আর হয়নি।’
বান্দরবানের পর্যটন কেন্দ্রবান্দরবানের অতি‌রিক্ত জেলা প্রশাসক (সাা‌র্বিক) মো. শামীম হোসেনের ভাষ্য, বান্দরবান হচ্ছে পর্যটনবান্ধব এলাকা। এটাকে বলা হয় রূপের রানি। বাংলাদেশে যত পর্যটন এলাকা আছে বান্দরবান তাতে অন্যতম। এখানকার পাহাড়, মেঘ, সবুজ, ফুল, ফলসহ সবকিছু নতুন লাগছে।’