খাগড়াছড়ির পর্যটনে সুনসান নীরবতা

খাগড়াছড়ি ঝুলন্ত ব্রিজকরোনা পরিস্থিতির কারণে পাহাড়ি জেলা খাগড়াছড়ির সব পর্যটন কেন্দ্রে সুনসান নীরবতা। কোভিড-১৯ রোগের বিস্তার রোধে গত ১৯ মার্চ থেকে এসব জায়গায় প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে সরকার। এ কারণে ঈদে খোলেনি কোনও ফটক। এতে চরম দুর্ভোগ ও আর্থিক সংকটের মধ্য দিয়ে যাচ্ছেন সংশ্লিষ্টরা।

অন্যান্য বছর ঈদের আগের দিন থেকে খাগড়াছড়ি ও সাজেকসহ বিভিন্ন পর্যটন কেন্দ্রে ভ্রমণপ্রেমীদের ভিড় দেখা যেতো। কিন্তু এবার সব জনশূন্য। সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী স্থানীয় প্রশাসনের নজরদারিতে এগুলোর কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে।

পর্যটন খাত সংশ্লিষ্ট পরিবহন, হোটেল-মোটেল ও খাবার হোটেলের ব্যবসায়ীরা প্রতিদিন লাখ লাখ টাকা লোকসান গুনছেন। অনেকে অর্থনৈতিক সংকটের কারণে দেউলিয়া হওয়ার পথে।

পরিবহন চালক আবদুল মান্নান দুঃখ নিয়ে বললেন, ‘তিন মাস ধরে রোজগার বন্ধ। আমাদের দিন কীভাবে কাটছে সেই খবর কেউ নেয় না।’

ভরা মৌসুমে ব্যবসা বন্ধ থাকায় কর্মীদের বেতনভাতাসহ অন্যান্য খরচ চালিয়ে নিতে হচ্ছে বিনিয়োগকারীদের। অনেকের আশঙ্কা, সরকারি সহযোগিতা না পেলে পর্যটন খাত থেকে উদ্যোক্তারা মুখ ফিরিয়ে নেবে।

আলুটিলা পর্যটন কেন্দ্রমায়াবিনী লেক পরিচালনা কমিটির সভাপতি অংহ্লা মারমা উল্লেখ করেছেন, সারাবছর যত সংখ্যক পর্যটক সমাগম হতো তার অর্ধেক দেখা যেতো বৈসাবি ও ঈদ উৎসবে। কিন্তু করোনা পরিস্থিতির কারণে এবার কোনও উপলক্ষ্যই কাজে আসেনি।

অংহ্লা মারমার কথায়, ‘মায়াবিনী লেক কর্মীদের বেতন ও অন্যান্য ব্যয় বহন করতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। গত তিন মাসে ৬ লক্ষাধিক টাকা ক্ষতি হয়েছে। সরকার আমাদের পাশে না দাঁড়ালে ঘুরে দাঁড়ানো কঠিন হয়ে পড়বে।’

নিজের জমানো কিছু টাকা ও পরিচিতদের কাছ থেকে ধার নিয়ে এ বছরের শুরুতে দোকান দিয়েছেন জেলা পরিষদ পার্কের ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী আজিজুর রহমান। শুরুতে তার ব্যবসা ভালো চললেও তিন মাস ধরে বন্ধ। ঋণ শোধ ও সংসার চালাতে হিমশিম খাচ্ছেন তিনি। দোকানে থাকা মালামাল নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। সামনে অনিশ্চিত ভবিষ্যৎ অপেক্ষা করছে মনে করে সরকারের সহযোগিতা চান তিনি।

এদিকে খাগড়াছড়ির অতিরিক্ত পুলিশ সুপার এম এম সালাহউদ্দিন বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘করোনাভাইরাস মহামারিতে পর্যটন কেন্দ্রে যেন কেউ প্রবেশ না করে সেদিকে আমরা কড়া নজর রাখছি। অনেক জায়গার প্রবেশমুখে পুলিশ মোতায়ন রয়েছে।’