কয়েক বছর ধরে দেশের ভেতরে পর্যটকদের জনপ্রিয় গন্তব্যের তালিকায় খাগড়াছড়ি অন্যতম। সাজেকে পর্যটনের বিস্তৃতি হওয়ায় এই জেলায় ভ্রমণপিপাসুর সংখ্যা বেড়েছিল। কিন্তু করোনাভাইরাসের কারণে স্থবির হয়ে গেছে সব।
গত একদশকে খাগড়াছড়ি ও সাজেকে গড়ে উঠেছে দুই শতাধিক আবাসিক হোটেল। পর্যটন মৌসুমে এগুলো থাকতো জমজমাট। প্রায় ৫০ হাজার লোক প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে এসব হোটেলের সঙ্গে যুক্ত। তাদের ভবিষ্যৎ এখন অনিশ্চয়তায় পড়েছে।
করোনাভাইরাস মহামারির কারণে হোটেল বন্ধ থাকায় কর্মসংস্থান কমে যাওয়ার পাশাপাশি প্রায় ৫০ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে দাবি খাগড়াছড়ি আবাসিক হোটেল মালিক সমিতির। সংগঠনটির নেতারা এই ক্ষতি পুষিয়ে নিতে সরকারি প্রণোদনা প্রত্যাশা করছেন।
খাগড়াছড়ি আবাসিক হোটেল মালিক সমিতির সভাপতি কল্যাণ মিত্র বড়ুয়া বাংলা ট্রিবিউনকে জানান, এখানকার সব হোটেল গত ১৮ মার্চ থেকে বন্ধ। এ কারণে হোটেল ব্যবসায়ীরা প্রায় ৫০ কোটি টাকার ক্ষতির মুখে পড়েছেন।
সংগঠনটির সভাপতি মনে করেন, ‘হোটেলের কর্মী ছাঁটাই করা ছাড়া ভিন্ন কোনও পথ নেই ব্যবসায়ীদের। আগামী কয়েক বছরেও এখানকার পর্যটন স্বাভাবিক হবে বলে মনে হয় না। সরকারি প্রণোদনাই কেবল আমাদের বাঁচাতে পারে।’
হোটেল নূরের মালিক তারেক আহম্মেদের কথায়, ‘করোনার কারণে আমরা হোটেল ব্যবসায়ীরা খুবই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছি। গত তিন মাস ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা থাকলেও কর্মীদের বেতন ঠিকই দিতে হয়েছে। এমন দুরবস্থা চলতে থাকলে পথে বসা ছাড়া উপায় নেই।’
পর্যটন খাত বাঁচাতে পদক্ষেপ নিতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন খাগড়াছড়ি শহরের হোটেল অরণ্য বিলাসের স্বত্বাধিকারী স্বপন চন্দ্র দেবনাথ। তিনি বলেন, ‘গত তিন মাস হোটেল বন্ধ, অথচ কর্মীদের বেতন, বিদ্যুৎ বিল, ব্যাংক ঋণ দিয়ে যেতে হচ্ছে। ব্যবসা পুরোপুরি বন্ধ থাকায় কর্মকর্তা-কর্মচারী ছাঁটাই করা ছাড়া অন্য কোনও রাস্তা নেই। সরকার অন্য খাতে প্রণোদনা দিলেও পর্যটন নিয়ে চিন্তা করছে না।’
পর্যটন নিয়ে খাগড়াছড়ির জেলা প্রশাসক প্রতাপ চন্দ্র বিশ্বাস পুরোপুরি আশার কথা বলেননি। তবে হোটেল মালিকদের সরকারি নির্দেশনার অপেক্ষায় থাকার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।