হাঁসাইগাড়ি বিলে ভ্রমণপ্রেমীদের কোলাহল

নওগাঁর হাঁসাইগাড়ি বিলনওগাঁ সদর উপজেলার হাঁসাইগাড়ি বিল ভ্রমণপ্রেমীদের কোলাহলে মুখর হয়ে উঠেছে। উন্মুক্ত এই স্থানে অন্যরকম প্রশান্তি পাচ্ছেন তারা। করোনাভাইরাসের কারণে জেলার পর্যটন কেন্দ্রগুলো বন্ধ থাকায় ঈদের ছুটিতে এখানে ভিড় বেড়েছে তাদের।

নওগাঁ সদর উপজেলার প্রত্যন্ত এলাকা হাঁসাইগাড়ি বিল। এর মাঝ দিয়ে বয়ে গেছে পাকা রাস্তা। এটি সদর উপজেলার হাঁসাইগাড়ি ও দুবলহাটি ইউনিয়নকে যুক্ত করেছে। বছরের অধিকাংশ সময় বিলে পানি থাকে। বর্ষা মৌসুমে জলে টইটম্বুর থাকে। নির্মল হাওয়ার মাঝে পানির ছলাৎ ছলাৎ ঢেউ এসে পাকা রাস্তায় আছড়ে পড়ে। 

সূর্যাস্তের সময় পশ্চিমাকাশের লাল আভা পানিতে পড়ার দৃশ্য মনোমুগ্ধকর। সন্ধ্যায় রাস্তায় দাঁড়িয়ে থাকা সোলার ল্যাম্পপোস্টগুলো জ্বলে ওঠে। অন্ধকারে সেগুলো দেখলে মনে হবে যেন জোনাকিরা খেলছে!

হাঁসাইগাড়ি বিলে দর্শনার্থীরাবিলে শ্যালোমেশিন চালিত নৌকায় চড়ে পরিবার-পরিজন নিয়ে আনন্দ উপভোগ করেন অনেকে। দর্শনার্থীদের আনাগোনার ফলে পাশেই বসেছে গ্রামীণ মেলা।

শহরের উকিলপাড়া নিবাসী সুরুজ মিয়া এই বিলের কথা অনেক শুনেছেন। এবারই প্রথম পরিবার নিয়ে নৌকায় ভ্রমণ করলেন তিনি। তার কথায়, ‘ছোট বাচ্চারা খুব আনন্দ করলো। সময় পেলেই এখানে পরিবার নিয়ে বেড়াতে আসবো।’
মাস্টারপাড়ার বাসিন্দা আইজার রহমান বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘চাকরির জন্য ঢাকাতেই বেশিরভাগ সময় কাটাতে হয়। ঈদের ছুটিতে বাড়িতে বেড়াতে আসি। হাঁসাইগাড়ি বিলে নির্মল বাতাস পেয়ে প্রাণ জুড়িয়ে গেলো। এখানে এসে অনেক ভালো লেগেছে।’
দর্শনার্থীদের নিরাপত্তা, রাস্তাঘাটসহ অবকাঠামোর উন্নয়ন হলে বিলটির মাধ্যমে পর্যটনের বিকাশ হতে পারে বলে মনে করেন পার-নওগাঁ নিবাসী আবজাল আলী। তার মন্তব্য, ‘নওগাঁয় এত সুন্দর একটা জায়গা আছে তা এখানে না এলে জানতাম না। মনে হচ্ছে কক্সবাজারে এসেছি বুঝি!’

হাঁসাইগাড়ি বিলে দর্শনার্থীরানওগাঁ সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সোহরাওয়ার্দী হোসেন বাংলা ট্রিবিউনকে জানান, হাঁসাইগাড়ি বিলে দর্শনার্থীদের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিতের জন্য ভীমপুর তদন্ত কেন্দ্র কাজ করে যাচ্ছে। এছাড়া নওগাঁ সদর মডেল থানা সবসময় প্রস্তুত রয়েছে।

এদিকে হাঁসাইগাড়ি বিলের পানি প্রায় রাস্তা ছুঁই ছুঁই করছে। অনেক স্থানে ব্লকগুলো সরে গিয়ে খানাখন্দের সৃষ্টি হয়েছে। বিলের মাঝ দিয়ে বয়ে যাওয়া রাস্তাটি দ্রুত সংস্কার করা না হলে বিলীন হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা।