উঁচু-নিচু টিলার মধ্যে চা বাগান। যেন সবুজে ছেয়ে গেছে চারদিক। চা বাগানের ভেতর দিয়ে বয়ে চলেছে পাহাড়ি ছড়া । এর দু’পাশে বালুচরের বির্স্তীণ এলাকা জুড়ে জেগেছে কাশবন। অপরূপ সাদা কাশফুলের বাতাসে দোল খাওয়ার দৃশ্য মনোরম।
ঢাকার বাসিন্দা আঞ্জুমান আরা মুন বলেন, ‘অধিকাংশ পর্যটন গন্তব্য বন্ধ। কী করবো কিছু খুঁজে পাচ্ছিলাম না! হঠাৎ গাড়িতে বসে চোখে পড়লো কাশবনে। গাড়ি থেকে নেমে বেশ কিছুক্ষণ উপভোগ করলাম। মনটা ভরে গেছে। খুবই ভালো লাগলো।’
সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী কামরুজ্জামান রানার কথায়, ‘সাদা ও সবুজের মিলনমেলার পাশ দিয়ে বয়ে চলা পাহাড়ি ছড়ার কূলে ঘুরে বেড়ানোর অনুভূতি অন্যরকম। কাশফুলের সাদা রঙে মনটা প্রফুল্ল হয়ে গেছে।’
লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যান এলাকা ঘুরে দেখা যায়, মূল ফটকে তালা। তবুও মোটরসাইকেল, সিএনজিচালিত অটোরিকশা, ব্যক্তিগত গাড়ি ও মাইক্রোবাসে অনেক পর্যটক আসেন। উদ্যানে ঢুকতে না পেরে চা বাগানের ভেতরে কাশবনে ঘোরাঘুরি করে ছবি তোলেন তারা।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে- লাউয়াছড়া উদ্যান ছাড়াও মাধবপুর লেক, মাধবকুণ্ড, হাকালুকি ও বাইক্কাবিল হাইল হাওর ইত্যাদি পর্যটন গন্তব্যে প্রবেশ নিষেধ রয়েছে। তবে অভিযোগ রয়েছে, নিরাপত্তাকর্মীরা কারও কারও কাছ থেকে বেশি টাকা নিয়ে ঢুকতে দেন। বিশেষ করে লাউয়াছড়া উদ্যানের ভেতর টাকার বিনিময়ে কৌশলে যেতে দেওয়া হচ্ছে।
বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের রেঞ্জ কর্মকর্তা মোনায়েম হোসেন বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘করোনাভাইরাসের সংক্রমণ প্রতিরোধে সরকারি নির্দেশনায় উদ্যানে পর্যটকদের প্রবেশ করতে দেওয়া হচ্ছে না। সবকিছু স্বাভাবিক হলে এবং সরকারি নির্দেশনা পেলে ফটক খুলে দেওয়া হবে।’
একই মন্তব্য মৌলভীবাজারের জেলা প্রশাসক মীর নাহিদ আহসানের, ‘লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যান, মাধবকুণ্ড জলপ্রপাত ও চা বাগানের আওতাধীন মাধবপুর লেক বন্ধ রয়েছে। সরকারি নির্দেশনা পেলেই এগুলো খুলে দেওয়া হবে।’
মৌলভীবাজারে দুটি পাঁচতারকা মানের হোটেল ও রিসোর্ট আছে। এর মধ্যে গ্র্যান্ড সুলতান টি রিসোর্ট অ্যান্ড গলফ বন্ধ রয়েছে। তবে দুসাই রিসোর্ট সীমিত আকারে খোলা হযেছে। বাকি সব হোটেল ও রিসোর্ট অতিথিদের সেবা দিচ্ছে।
ট্যুর গাইডের মন্তব্য, ‘বর্তমানে অধিকাংশ ট্যুর গাইড বেকার। বিদেশি পর্যটকরা না এলে আমাদের কর্মহীন হয়েই থাকতে হবে। দেশি পর্যটকদের প্রতি ১০০ জনের মধ্যে ৯৯ জনের ট্যুর গাইডের প্রয়োজন পড়ে না। কারণ তারা পথচারীদের কাছে জেনে পর্যটন স্পট খুঁজে বের করে নেন।’