মাগুরাবাসীর নতুন স্বপ্ন সিরিজদিয়া ইকোপার্ক

মাগুরার সিরিজদিয়া বাওরমাগুরার প্রাকৃতিক সৌন্দর্যমণ্ডিত জলাশয় সিরিজদিয়া বাঁওড় এককথায় নয়নাভিরাম। এখানে গড়ে তোলা হচ্ছে একটি ইকোপার্ক। তাই নতুনভাবে স্বপ্ন দেখছে জেলার বাসিন্দারা। এর মাধ্যমে তাদের দীর্ঘদিনের চিত্তবিনোদনের চাহিদা মিটবে। একইভাবে কর্মসংস্থান সৃষ্টিসহ অর্থনৈতিকভাবে উপকৃত হবেন স্থানীয়রা।

জেলা প্রশাসন সূত্র জানিয়েছে, সদর উপজেলার চাউলিয়া ইউনিয়নের সিরিজদিয়া গ্রামে সরকারি ১৫ একর জমি ও ১০০ একর জলাশয়সহ ১১৫ একর জমির ওপর ইকোপার্ক নির্মাণে প্রাথমিক কাজ শুরু হয়েছে। এটি শহর থেকে মাত্র আট কিলোমিটার দূরে।

মাগুরার সিরিজদিয়া বাওরপ্রাকৃতিক পরিবেশে আকর্ষণীয়ভাবে সাজানো হচ্ছে বিনোদন উদ্যানটি। ইতোমধ্যে বাঁওড়ের পাশ দিয়ে সড়ক নির্মাণ, রাস্তার পাশে বৃক্ষরোপণ, বিদ্যুৎ ব্যবস্থা স্থাপন, কটেজ তৈরি, বাওরে নৌ-চলাচলের ব্যবস্থা এবং পর্যটকদের নিরাপত্তায় বিভিন্ন কার্যক্রম হাতে নেওয়া হয়েছে।

শহরের ভিটাসাইর এলাকার শিক্ষিকা শামসুন্নাহার লাকির কথায়, ‘মাগুরায় এমন কোনও বিনোদন কেন্দ্র নেই যেখানে পরিবার নিয়ে বেড়াতে যেতে পারি। সিরিজদিয়া বাওরে ইকোপার্ক তৈরি হচ্ছে জেনে আমরা খুবই আনন্দিত। এর মাধ্যমে মাগুরাবাসীর দীর্ঘদিনের স্বপ্নপূরণ হবে।’

মাগুরার সিরিজদিয়া বাওরসিরিজদিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. ফিরোজ এলাহীর মন্তব্য, ‘এই অঞ্চল বরাবরই অবহেলিত। এলাকার মানুষ মোটেও সচ্ছল নয়। এতদিন শুধু বাঁওড়ে মাছ চাষই করা হয়েছে। এখন ইকোপার্ক তৈরি হচ্ছে জেনে সবাই নতুনভাবে স্বপ্ন দেখছে। এর মাধ্যমে স্থানীয়দের জীবন-জীবিকা ইতিবাচকভাবে বদলে যাবে।’

জেলার কৃষি ও প্রকৃতি বিষয়ে কাজ করে বেসরকারি সংস্থা পল্লী প্রকৃতি। এর নির্বাহী পরিচালক শফিকুর রহমান মনে করেন, সিরিজদিয়া বাঁওড় হলো মাগুরার প্রাকৃতিক সম্পদ। তিনি বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘এখানে ইকোপার্ক নির্মাণাধীন রয়েছে, এটা মাগুরাবাসীর জন্য আশার কথা।’

মাগুরার সিরিজদিয়া বাওরসংশ্লিষ্টদের প্রতি পল্লী প্রকৃতির নির্বাহী পরিচালকের অনুরোধ, ‘পার্ক বানাতে গিয়ে এখানকার প্রকৃতির ক্ষতিসাধন যেন না হয়। উদ্যোগটি প্রকৃতি ও জীববৈচিত্র্যের ওপর কোনও বিরূপ প্রভাব সৃষ্টি করবে না আশা রাখি।’

জেলা প্রশাসক ড. আশরাফুল আলমের আশা, সদর উপজেলার চাউলিয়া ইউনিয়নের সিরিজদিয়া বাঁওড় ইকোপার্ক ও রিসোর্ট পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে সারাদেশে জনপ্রিয়তা পাবে। তাই মনোরম করে গড়ে তোলা হচ্ছে এটি। তিনি বলেন, ‘দেশের অন্যতম পিকনিক স্পটে রূপ নেবে এই উদ্যান। পুরো কাজ সম্পন্ন হলে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলসহ সারাদেশের আকর্ষণীয় পর্যটন ও বিনোদন কেন্দ্রের তালিকায় স্থান করে নেবে এটি।’