কুড়িগ্রামের পাটাধোয়া বিলে শাপলার সৌন্দর্যকুড়িগ্রামের রৌমারী উপজেলার সদর ইউনিয়নের ঐতিহাসিক নীলের কুঠি এলাকার পাশে পশ্চিম মাদার টিলা গ্রাম। এখানে আছে পাটা ধোয়া (পাটধোয়া) নামের বিস্তীর্ণ একটি বিল। এখন এটি বর্ষায় জলে টইটম্বুর। লাল ও সাদা রঙের হাজারও শাপলায় পাটাধোয়া বিল এককথায় নান্দনিক।
স্থানীয়রা জানান, পাট চাষের পর সেগুলো কেটে বিলে জাগ দিয়ে রাখা হতো। এভাবে পাট পঁচিয়ে আঁশ ছাড়ানোর কাজ করেন কৃষকরা। এজন্য এটি ‘পাটাধোয়া বিল’ নামে পরিচিত। প্রায় ১০ একর এই জলাভূমিতে কয়েক বছর ধরে বর্ষা মৌসুমে ফোটে শাপলা ফুল। প্রতিবছর আগস্ট থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত এখানে শাপলার মৌসুম।
কুড়িগ্রামের পাটাধোয়া বিলে শাপলার সৌন্দর্যলাল ও সাদা রঙের অজস্র শাপলার অপরূপ সৌন্দর্য দেখতে প্রতিদিন সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত পাটাধোয়া বিলে ভিড় করে দর্শনার্থীরা। নৌকায় চড়ে বেড়ানোর সময় ছোটবড় সবার মধ্যে ছবি তোলার হিড়িক দেখা যায়।
ছুটিতে বিলে পরিবার নিয়ে ঘুরতে এসেছেন তানভীর আহমেদ। একসঙ্গে এত শাপলা দেখে মন ভরে গেছে তার। তবে তিনি বাংলা ট্রিবিউনের কাছে একটা আক্ষেপের কথা বলেছেন, ‘এখানে বসার জায়গা থাকলে সুবিধা হতো। তাহলে আরেকটু সময় নিয়ে প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করতে পারতাম।’
কুড়িগ্রামের পাটাধোয়া বিলে শাপলার সৌন্দর্যস্থানীয় সংবাদকর্মী মাসুদ রানা বাংলা ট্রিবিউনকে জানান, প্রতি বছর পাটাধোয়া বিলে হাজার হাজার শাপলা ফুল ফোটে। স্থানীয়দের পাশাপাশি দূর-দূরান্ত থেকে দর্শনার্থীরা এসে নৌকায় চড়ে এখানকার মনোরম সৌন্দর্য উপভোগ করে। এর মাধ্যমে নৌকা চালিয়ে স্থানীয় কিছু মানুষের জীবিকা নির্বাহের পথ তৈরি হয়েছে।
বিলের মাঝ দিয়ে একটি সড়ক রয়েছে। কিন্তু বর্ষাকালে এটি ডুবে যায়। আরেক স্থানীয় সংবাদকর্মী আনিছের মন্তব্য, ‘সড়কটি উঁচু করে এর পাশে বসার স্থান তৈরি করে দিলে পর্যটকদের আগ্রহ বাড়বে।’
কুড়িগ্রামের পাটাধোয়া বিলে শাপলার সৌন্দর্যউপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আল ইমরান আশ্বাস দিয়ে বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘বিলের মাঝ দিয়ে থাকা সড়ক উঁচু করার প্রকল্প হাতে নেওয়ার পরিকল্পনা চলছে। উপজেলা চেয়ারম্যানসহ প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী এক্ষেত্রে বেশ আন্তরিকতা দেখিয়েছেন।’
পাটাধোয়া বিল পর্যটনের জন্য বেশ সম্ভাবনাময় বলে মনে করেন ইউএনও। বিলের পরিবেশ উন্নয়নসহ দর্শনার্থীদের যাতায়াত নির্বিঘ্ন করতে ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানকে নির্দেশনা দিয়েছেন তিনি। এছাড়া দর্শনার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে থানা পুলিশকে বলা হয়েছে। তার আশা, ‘পাটাধোয়া বিল একটি পর্যটন এলাকায় পরিণত হবে।’