উপকূলীয় জেলা ঝালকাঠির দক্ষিণ জনপদ কাঠালিয়া উপজেলায় বিষখালী নদীর তীরে একযুগ আগে জেগে ওঠা নয়নাভিরাম ছৈলার চরে রয়েছে পর্যটনের অপার সম্ভাবনা। ভ্রমণপিপাসুদের পদচারণায় এখন প্রত্যন্ত অঞ্চলের প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ঘেরা ৭০ একর জুড়ে এই স্থান মুখর থাকে প্রতিদিন। স্কুল-কলেজের ছাত্রছাত্রীসহ অনেকে পরিবার-প্রিয়জন নিয়ে প্রকৃতির ভেতর বনভোজন করে।
প্রতিবছরের জানুয়ারি থেকে মার্চ পর্যন্ত পর্যটকদের ভিড় থাকে ছৈলার চরে। শীতকালে শুকনো চরকে মনে হয় গহীন অরণ্য। এ যেন নদীঘেরা ছৈলার বনের দ্বীপ।
কাঠালিয়া লঞ্চঘাট থেকে নৌপথে যেতে হয় ছৈলার চরে। সড়কপথে যাওয়ার কোনও ব্যবস্থা নেই। প্রতিকূল যাতায়াত ব্যবস্থা ও পর্যাপ্ত নিরাপত্তার অভাবে দূর-দূরান্তের পর্যটকদের উৎসাহ থাকলেও আসা হয় না। আর যারা বেড়াতে আসেন, তাদের দুশ্চিন্তা পিছু ছাড়ে না। নৌযান ভেড়ানোর ঘাট কিংবা সিঁড়ি না থাকায় পর্যটকদের হাঁটুসমান পানি ও কাদা ভেঙে চরে উঠতে হচ্ছে।
সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান গোলাম কিবরিয়া সিকদার বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘উপজেলা চেয়ারম্যান থাকাকালে আমি ব্যক্তি উদ্যোগে কিছু উন্নয়ন করেছিলাম। সরকারের কাছে চরটিকে পর্যটন স্পট ঘোষণার দাবি জানাই আমরা।’
সামাজিক আন্দোলন কাঠালিয়ার সভাপতি তুহিন সিকদার পর্যটকদের সুবিধার্থে কয়েকটি প্রয়োজনীয় বিষয় উল্লেখ করেছেন। যেমন– নদীর পাড়ে ঘাট, সড়কপথে কিল্লার পাড়ে সেতু, উন্নতমানের টয়লেট, স্বাস্থ্যকর পানীয় জল, পর্যাপ্ত বিশ্রামাগার ও নিরাপত্তা প্রহরী রাখা।
ঝালকাঠি জেলা প্রশাসন ২০১৫ সালে ছৈলার চরকে পর্যটন স্পট হিসেবে চিহ্নিত করলেও বাস্তবায়ন হয়নি। ঝালকাঠি জেলা প্রশাসক মো. জোহর আলী বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘পর্যটন স্পট হিসেবে ছৈলার চরকে তালিকাভুক্তির জন্য পর্যটন করপোরেশনকে একাধিকবার চিঠি দিয়েছি আমরা। এটি বাস্তবায়ন হলে পর্যটকদের সুবিধা অনুযায়ী সব ব্যবস্থা পাওয়া যাবে। উপজেলা প্রশাসনকে সাধ্যমতো উদ্যোগ নিতে বলেছি। উপজেলা প্রশাসন বা জেলা পরিষদের অর্থ দিয়ে আপাতত কিছুটা প্রয়োজন মেটানোর কাজ শুরু হবে।’