এ এক অনিন্দ্যসুন্দর চিত্র। দক্ষিণাঞ্চলের পূর্ব উপকূলীয় জেলা লক্ষ্মীপুরে কমলনগরের ঐতিহ্যবাহী বড় বাজার মতিরহাটে সৈকতের আমেজ পেতে প্রতিদিন সমবেত হন অনেকে। লোকমুখে জায়গাটি ‘মতিরহাট মেঘনা সৈকত’ নামে পরিচিত। অনেকে এর নাম দিয়েছেন ‘মিনি কক্সবাজার’।
দিনভর নদীর বুক চিরে আসা ঢেউ আছড়ে পড়ে তীরে। সেই জলে পা ভিজিয়ে হাঁটেন ভ্রমণপিপাসুরা। অনেকে নৌকায় চড়ে ঢেউয়ের তালে তালে মেতে ওঠেন ভ্রমণের আনন্দে। ভাসতে ভাসতে তাদের চোখে পড়ে রূপালি ইলিশ শিকারে ব্যস্ত একদল জেলেকে।
শুধু বেলাভূমি নয়, মতিরহাটে নির্মাণ করা বেড়িবাঁধে দাঁড়ালে মেঘনার স্বচ্ছ জল মনকে সিক্ত করে দেয়। যতদূর চোখ যাবে, কেবল মেঘনার বিস্তীর্ণ জলরাশি চোখে পড়ে। জাহাজ, লঞ্চ, ফেরির মতো নৌ-যান নিয়মিত চলাচল করে এর বুকে।
দুপুরে এসে দাবদাহ এড়াতে অনেকে মেঘনায় নেমে পড়েন গোসলে। কেউ কেউ নদীর জলে লাফ দিয়ে আনন্দ খোঁজেন। নদীর পাড়ে বসে গানের সুর তোলার দৃশ্যও চোখে পড়ে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সেগুলো লাইভে দেখান ঘুরতে আসা মানুষেরা। পেছনে নদীর জল রেখে সেলফি আর ছবি তোলা তো চলেই।
ঈদ কিংবা বিভিন্ন উৎসবে অথবা শুক্রবারসহ ছুটির দিনের বিকেলে মতিরহাটে থাকে উপচেপড়া ভিড়। স্থানীয়দের পাশাপাশি আশেপাশের জেলা থেকে ভ্রমণপিপাসুরা সিএনজি, মোটরসাইকেল, প্রাইভেট কার, মাইক্রোবাসসহ অন্যান্য যানবাহনে চড়ে মতিরহাটে ঘুরতে আসেন।
ঢাকার সদরঘাট থেকে লঞ্চে চাঁদপুর আসতে হবে প্রথমে। এরপর লক্ষ্মীপুর জেলা শহরের ঝুমুর ইলিশ স্কয়ার। সায়েদাবাদ বাস টার্মিনাল থেকে সড়কপথে ঝুমুরে এসে সেখান থেকে লক্ষ্মীপুর-রামগতি আঞ্চলিক সড়ক বাস অথবা সিএনজিতে তোরাবগঞ্জ যেতে হবে। তারপর মতিরহাট সড়কে সিএনজি করে মেঘনার পাড়ে বেলাভূমিতে চলে আসুন।
চট্টগ্রাম থেকে লক্ষ্মীপুরের যেকোনও গাড়িতে একইভাবে মতিরহাট আসা যাবে। বন্দরনগরীতেও লঞ্চ আছে। ভোলা ও বরিশাল থেকে লঞ্চে মতিরহাট আসা যায়। তবে ফেরি দিয়ে কেবল ভোলা থেকে আসতে পারেন ভ্রমণপিপাসুরা। এক্ষেত্রে সড়কপথের সুবিধা নেই।
যেখানে থাকবেন
দূর-দূরান্ত থেকে আসা ভ্রমণপ্রেমীদের জন্য মতিরহাটে কোনও রিসোর্ট কিংবা হোটেল গড়ে ওঠেনি। তবে জেলা শহরে উন্নতমানের বেশকিছু গেস্ট হাউজ রয়েছে। কেউ চাইলে এগুলোতে থাকতে পারেন।
ছবি: লেখক