এখানে তেমন কিছুই নেই। ইমিগ্রেশন অফিসারের সামনে দাঁড়িয়ে আছে প্যান্টের পা ভাঁজ করে রাখা এক ‘দালাল’। আর কয়েকজন একই ধরনের লোকজন ভিড় করছে। ২০০-২৫০ টাকা ঘুষের বিনিময়ে কাজ সেরে দেন তারা। ইমিগ্রেশনে তিনজন কর্মকর্তা বসা। তাদের আচরণও তেমন সুবিধার মনে হলো না। তবে আমার ধারণা ভুলও হতে পারে। মানুষকে পড়ার জন্য বোধহয় তারা আলাদা তরিকা অনুসরণ করেন!
সিকিম ট্যুরের জন্য শুরুতে পাঁচজনের একটি দল গড়তে চেয়েছিলাম। এর মধ্যে একজন ভিসা হাতে পায়নি। একজন ব্যবসায়ী। সময় গণনা করে বলেছে, এখন যাওয়াটা তার জন্য লাভজনক নয়। ব্যবসায়ীদের অনেক কিছু মেনে চলতে হয়। ধরে নিয়েছিলাম তিনজন। কিন্তু সেটাও হয়নি। শেষের জন নতুন বিয়ে করেছে। ভিসা যেদিন পেয়েছে, সেদিন বউ কোনও ইঙ্গিত না দিয়ে বাবার বাড়ি চলে গেছে। অগত্যা ওই বন্ধুর সিকিম যাওয়া বাতিল।
কাগজটা আমার সঙ্গে নেই। বুঝলাম, আজ খবর আছে! ঘড়িতে সকাল মাত্র সাড়ে ৯টা। পত্রিকা অফিস মূলত শুরু হয় দুপুরে। এত সকালে ফোন করে এনওসি নতুন করে ম্যানেজ করা কঠিন। এর চেয়ে অপেক্ষা করবো কিনা ভাবছি। আমাদের কোনও তাড়া নেই। অপেক্ষা করলেও চলে। তবে তাড়া আছে যিনি আমাদের সহযোগিতা করছেন, তার। মাঝে মধ্যে মিহি সুরে ভয় দেখানোর চেষ্টা করছেন তিনি। যেমন– ‘এটা ছাড়া আপনাদের ভারতে যেতে দেবে না, আমার কাজ আছে যেতে হবে, তাড়াতাড়ি করেন’, ইত্যাদি।
দালালের মুখ নিমিষেই চুন হয়ে গেলো! এবার গেলাম ইমিগ্রেশন অফিসারের কাছে। তিনি এনওসি হাতে নিলেন। লোকটা যে কেমন নাছোড়বান্দা তা টের পেলাম। মনোযোগ দিয়ে খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে এনওসি পড়লেন। আমি অপেক্ষা করছি নতুন কোনও ভুল পাওয়ার। বেশিক্ষণ অপেক্ষা করতে হলো না, তিনি পাসপোর্ট হাতে নিয়ে বললেন, ‘যান!’
এরপর পা রাখলাম ভারতের মাটিতে। একটু দূরে খাকি পোশাক পরা দাদারা অপেক্ষা করছেন। বলা যায়, এখান থেকেই শুরু হলো সিকিম ভ্রমণ... (চলবে)
ছবি: আশিক মুস্তাফা