ন্যাশনাল জিওগ্রাফিকের পুরস্কার জিতলো বিশ্ব ইজতেমার ছবি

স্ট্রিটস অব ঢাকা২০১৯ সালের ন্যাশনাল জিওগ্রাফিক ট্রাভেল ফটোগ্রাফার অব দ্য ইয়ার প্রতিযোগিতায় তৃতীয় হলো ঢাকায় তোলা একটি আলোকচিত্র। শহর (সিটিস) বিভাগে ‘স্ট্রিটস অব ঢাকা’ শীর্ষক একটি ছবির জন্য পুরস্কার জিতেছেন আলোকচিত্রী সন্দ্বীপনি চট্টোপাধ্যায়।

‘স্ট্রিটস অব ঢাকা’য় ফুটে উঠেছে বিশ্ব ইজতেমার সময় বাংলাদেশের রাজধানীর অদূরে একটি সড়কে ধর্মপ্রাণ মুসল্লিদের ইবাদতের দৃশ্য। তাদের একপাশে সারি সারি যানবাহন দাঁড়িয়ে আছে। টঙ্গীর তুরাগ নদীর তীরে প্রতি বছর ইজতেমায় সমবেত হন লাখ লাখ মুসল্লি।

এবারের প্রতিযোগিতা হয়েছে তিন বিভাগে। এগুলো হলো প্রকৃতি, শহর ও মানুষ। এতে জমা পড়ে হাজার হাজার আলোকচিত্র। সেগুলোর মধ্য থেকে সেরা বাছাইয়ের জন্য বিচারক প্যানেলে ছিলেন বিশেষজ্ঞ আলোকচিত্রী ও ন্যাশনাল জিওগ্রাফিকের কর্মীরা।

শহর বিভাগে প্রথম হয়ে গ্র্যান্ড প্রাইজ জিতেছেন ওয়েইমিন চো। তার তোলা চোখধাঁধানো ছবিটির শিরোনাম ‘গ্রিনল্যান্ডিক উইন্টার’। এতে উঠে এসেছে পৃথিবীর বৃহত্তম দ্বীপ গ্রিনল্যান্ডের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চল আপারনাভিকে তুষারঢাকা মৎস্যজীবীদের গ্রামের রঙিন আবহ।
একই বিভাগে দ্বিতীয় হয়েছে সানফ্রান্সিসকো বিমানবন্দরের ওপর থেকে তোলা ইয়াসেন টডোরভের ‘ইন দ্য এজ অব এভিয়েশন’। 

ওয়েইমিন চো পুরস্কার হিসেবে পেয়েছেন ৭ হাজার ৫০০ মার্কিন ডলার। এছাড়া ফেসবুকের মালিকানাধীন সামাজিক নেটওয়ার্কিং সেবা ইনস্টাগ্রামে ন্যাশনাল জিওগ্রাফিক ট্রাভেল অ্যাকাউন্টে তার ছবি পোস্ট করা হয়েছে।

প্রকৃতি বিভাগে প্রথম পুরস্কার পেয়েছেন টামারা ব্লাফকে হাইক। তার ছবির নাম ‘টেন্ডার আইস’। স্পেনের মনফ্রাগুয়ে ন্যাশনাল পার্কের আকাশে উড়তে থাকা একটি শকুনের কোমল দৃষ্টি উঠে এসেছে এতে।
এই বিভাগে দ্বিতীয় স্থানে আছে যুক্তরাষ্ট্রের হাওয়াই অঙ্গরাজ্যের ওয়াহু দ্বীপের ঢেউয়ের ছবি ‘ড্রিমক্যাচার’। তিন নম্বরে জায়গা করে নিয়েছে নিউজিল্যান্ডের সাউথ আইল্যান্ডের কাইকুরা শহরে খাবারের সন্ধানে থাকা একটি ডলফিনকে তুলে ধরা ‘ডাস্কি’। প্রকৃতিতে সম্মানসূচক স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে সুইজারল্যান্ডের বারনিজ ওভারল্যান্ডের লেক ব্রিঞ্জে একদল বুনো ছাগলের ছবি ‘কিং অব দ্য আল্পস’। 
মানুষ বিভাগে সেরা হয়েছে ফ্রিল্যান্স ফটোগ্রাফার ওয়াইফেঙ লি’র তোলা ‘শোটাইম’ শীর্ষক ছবি। চীনের শানশি প্রদেশের লিচাঙ কাউন্টিতে অপেরা পরিবেশনার জন্য প্রস্তুত একদল শিল্পীকে দেখা যাচ্ছে এতে। এটি তুলতে তাদের সঙ্গে দিনভর কাটিয়েছেন তিনি।

২ হাজার ৫০০ ডলার করে পুরস্কার পেয়েছেন ওয়াইফেঙ লি ও টামারা ব্লাফকে হাইক। প্রতি বিভাগ থেকে তিন জন করে সব মিলিয়ে ৯ জন বিজয়ী হয়েছেন। এছাড়া দুই আলোকচিত্রীকে সম্মানসূচক স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে।
মানুষ বিভাগে দ্বিতীয় স্থানে আছে হংকংয়ের চয় হুঙ হাউসের একটি পাবলিক পার্কে সূর্যোদয়ের পরপর তোলা ছবি ‘ডেইলি রুটিন’। তৃতীয় হয়েছে ‘হর্সেস’। এর বর্ণনা হলো, প্রতি বছর স্পেনে সেন্ট অ্যান্থনি একটি উৎসব চলাকালে আভিলা প্রদেশে লাস লুমিনারিয়াস নামে পশুদের শুদ্ধিকরণ অনুষ্ঠান হয়ে থাকে। এতে আগুনের ওপর দিয়ে ঘোড়া নিয়ে লাফ দেয় অশ্বারোহী। অষ্টাদশ শতক থেকে এই রীতি অনুসরণ করা হয়। 
একই বিভাগে সম্মানসূচক স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে ভারতের দিল্লির যমুনা নদীর তীরে সূর্যোদয়ের মুহূর্ত ফুটিয়ে তোলা ছবিকে। এর শিরোনাম ‘মুড’। এতে দেখা যাচ্ছে, দর্শনার্থীরা যখন হাজার হাজার সিগালের কূজন উপভোগ করছে তখন এক বালক নীরবে ভাবছে।

ন্যাশনাল জিওগ্রাফিক হলো ওয়াল্ট ডিজনি টেলিভিশনের মালিকানাধীন আমেরিকান পে টেলিভিশন নেটওয়ার্ক ও জনপ্রিয় চ্যানেল। এটি দ্য ওয়াল্ট ডিজনি কোম্পানি ও ন্যাশনাল জিওগ্রাফিক সোসাইটির যৌথ উদ্যোগ।
সূত্র: সিএনএন


আরও পড়ুন-
বেড়াতে গিয়ে তোলা ছবিগুলো পেলো ন্যাশনাল জিওগ্রাফিকের স্বীকৃতি