দূর থেকে দেখলে মনে হবে এটি বিশাল একটি বট বা ঝাউ গাছ। কিন্তু কাছে গেলে ধারণা বদলে যাবে। উচ্চতা আনুমানিক ৮০-৯০ ফুট। আর পরিধি ৩৫ ফুটের কম নয়। প্রকৃতির আপন খেয়ালে বেড়ে উঠে এটি ইতিহাস হয়ে দাঁড়িয়ে আছে।
স্থানীয় বয়োজ্যেষ্ঠদের মুখে শোনা যায়, গাছটির বয়স প্রায় ২০০ বছরেরও বেশি। এর বর্তমান মালিক দুই ভাই সাইদুর রহমান ও নূর ইসলাম। তারা বলতে পারেন না ঠিক কবে গাছটির চারা রোপণ করা হয়েছিল।
ধারণা করা হয়, উপমহাদেশ জুড়ে সূর্যপুরী জাতের এত বড় আম গাছ আর নেই। ফলে এটি দেখতে প্রতিদিন শত শত মানুষ ভিড় করেন। বিশেষ করে ছুটির দিনগুলোতে তাদের উপস্থিতি থাকে বেশি। বিদেশি অনেকেও এতে আকৃষ্ট হন।
জনপ্রতি ২০ টাকা করে টিকিট কেটে আম গাছ দেখতে ভেতরে প্রবেশ করতে হয়। টিকিটের টাকা থেকে যা আয় হয় তা দিয়ে দুই ভাইয়ের পরিবার চলে ও গাছটির পরিচর্যা করা হয়। আগামীতে দর্শনার্থীদের জন্য পিকনিক স্পট গড়ে তোলার পরিকল্পনা রয়েছে তাদের।
২০০ বছরের বেশি বয়স হলেও গাছটিতে আমের বাম্পার ফলন হয়। প্রতি বছর প্রায় ৮০ মণের বেশি আম পাওয়া যায়। এগুলোর মূল্য বাজারের অন্যান্য আমের চেয়ে দ্বিগুণ। আমের মৌসুমে গাছের পাশেই তা বিক্রি করা হয়। তখন এখানে বিভিন্ন ধরনের দোকান বসে। সুস্বাদু, সুগন্ধি, রসালো আর ছোট আটি সূর্যপুরী আমের বৈশিষ্ট্য।
উত্তরের শান্ত জনপদের সাক্ষী গাছটির শাখাগুলোর দৈর্ঘ্য আনুমানিক ৪০ থেকে ৫০ ফুট। গাছের প্রতিটি ডালে চাইলে অনায়াসে হাঁটাচলা ও বসা যাবে। কিন্তু গাছের সামনে নোটিশে লেখা, ‘গাছে ওঠা বা পাতা ছেড়া নিষেধ।’
যেভাবে যাবেন
সড়কপথে ঢাকা থেকে বালিয়াডাঙ্গীর দূরত্ব প্রায় ৪৫০ কিলোমিটার। বাসে চড়ে সরাসরি সেখানে যাওয়া যায়। আকাশপথে কিংবা ট্রেনে গেলে সৈয়দপুরে নেমে সড়কপথে দিনাজপুর গিয়ে তারপর বালিয়াডাঙ্গী যেতে হবে। সেখান থেকে ভ্যান, বাস বা মিশুক নিয়ে হরিণমারি বাজার হয়ে ঐতিহ্যবাহী সূর্যপুরী আম গাছের কাছে যাওয়া যাবে। তবে মাথায় রাখতে হবে, জায়গাটি শহর থেকে ভেতরে হওয়ায় ও জনপদ কম থাকায় সহজে গাড়ি পাওয়া যায় না। তাই যাওয়ার সময় গাড়ি রিজার্ভ করে নিলে ভালো।
ছবি: লেখক