ভারত সরকারের হিসাবে, কোডিনহি গ্রামের দুই হাজার পরিবারে আছে ২২০ যমজ শিশু-কিশোর। খালি চোখে অস্বাভাবিক ঘটনাই বলা চলে। বিশ্বের সবচেয়ে রহস্যময় বিষয়গুলোর মধ্যে এটি অন্যতম। এর জট খুলতে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন ভারতীয় চিকিৎসকরা।
বিশেষজ্ঞদের মতে, গোটা বিশ্বে গড়ে যত যমজ জন্মে কোডিনহি গ্রামে এর চেয়ে প্রায় ছয় গুণেরও বেশি যমজ আলোর মুখ দেখে। কোডিনহির বাসিন্দারা তাই নিজেদের গ্রামের ডাকনাম রেখেছে ‘যমজ শহর’।
সাধারণত বেশি বয়সী নারীদের গর্ভে দুটি কিংবা তিনটি শিশু আসে। কিন্তু কোডিনহিতে ব্যতিক্রম চিত্র। এখানে ১৮ থেকে ২০ বছর বয়সেই মেয়েদের বিয়ে হয়ে যায়। আর তারা অল্প বয়সেই মা হন। তাদের উচ্চতা ৫ ফুট ৩ ইঞ্চির মধ্যে। গ্রামটির নারীদের উচ্চতা গড়ে ৫ ফুট।
গ্রামের অধিবাসীরা গ্রামের যমজ ও তাদের পরিবারকে আর্থিক সহায়তা প্রদানের জন্য ‘টুইন্স অ্যান্ড কিন অ্যাসোসিয়েশন’ (টাকা) নামক সমিতি প্রতিষ্ঠা করেছেন। কারণ যমজদের লালন-পালন করা ব্যয়সাপেক্ষ ব্যাপার। আর এসব সন্তানের মায়েদের তুলনামূলক বেশি পরিশ্রম করতে হয়। তাই শিক্ষাদানসহ বিভিন্নভাবে সহযোগিতা করে থাকে এই সংগঠন।
পাঁচ বছরের শাহালা পড়ে স্থানীয় প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। শিক্ষকরা প্রায়ই তার সঙ্গে যমজ বোন শাহানাকে গুলিয়ে ফেলেন। দুষ্টুমি করতে ইচ্ছে হলে তারা মানুষকে বিভ্রান্ত করে দেয়। সামিরা ও ফামিনা অষ্টম শ্রেণিতে পড়ার সময় দেখেছেন, তাদের আরও সহপাঠীদের মধ্যে আছে আট যমজ। অন্যান্য ক্লাসেও তারা যমজ শিক্ষার্থী দেখেছেন।
গ্রামবাসীদের মন্তব্য, কোডিনহিতে যমজ সন্তান জন্মানোর প্রবণতা তিন প্রজন্ম আগে শুরু হয়। তবে ড. শ্রীবিজু মনে করেন, ৬০-৭০ বছর আগে থেকে এমনটি হয়ে আসছে। তার মতে, এর সম্ভাব্য কারণ হতে পারে এখানকার মানুষের খাদ্যাভাস ও পানি। তিনি যোগ করেন, বংশগত কারণে অথবা গ্রামের বাসিন্দাদের ওপর অজানা দূষিত উৎসের প্রভাব থেকে স্থানীয় প্রকৃতি এমন হতে পারে।
সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া