কালায়ুরে ঢুকলেই ভেসে আসে নানান রকমের মসলার সুগন্ধ। দক্ষিণ ভারতে গ্রামটি ভোজনরসিকদের স্বর্গ হিসেবে পরিচিত। এখানকার খাবারগুলোর স্বাদ অমৃতের মতো! কালায়ুর বিশেষত্বই হলো, গ্রামের প্রায় প্রতিটি বাড়িতে রান্নায় পারদর্শী কেউ না কেউ আছে। সারাভারতের সেরা পুরুষ রন্ধনশিল্পীদের প্রায় ২০০ জনের বসবাস গ্রামটিতে!
প্রায় ৫০০ শতাব্দী আগে এই অঞ্চলের বাসিন্দা ধনী বণিক সম্প্রদায় রান্নার কাজ দেয় নিম্ন বর্ণের ভানিয়ার গোষ্ঠীকে। তারা রান্নাবান্নায় দক্ষ ছিল। তাদের নিজস্ব বেশকিছু গোপন রেসিপি ছিল। ব্রাহ্মণ রন্ধনশিল্পীদের চেয়ে ভানিয়ারদের বানানো খাবারের সুনাম ছিল তুলনামূলক বেশি।
সেই সময় কৃষিকাজ তেমন লাভজনক ছিল না। পুরুষদের অন্য কোনও কাজে দক্ষতা না থাকায় রান্নার প্রতি আগ্রহ জন্মে। এভাবেই তাদের খাবার তৈরিতে পারদর্শী হওয়ার ঐতিহ্য শুরু হয়।
কালায়ুর গ্রামে রন্ধনশিল্পী হিসেবে সুনাম কুড়ানো চাট্টিখানি কথা নয়। কেননা সেখানকার সব পুরুষই রান্নায় পারদর্শী। ফলে খাবারের মানও উঁচু। যদিও রন্ধনশিল্পী হতে ইচ্ছুক ছেলেদের নির্দিষ্ট কোনও বয়সসীমা নেই। শক্ত ভিত্তি তৈরির জন্য অল্প বয়স থেকেই তারা প্রাথমিক প্রশিক্ষণ নিয়ে থাকেন। যেমন শাকসবজি কাটা, মাঠ থেকে সতেজ উপাদান সংগ্রহ করা ইত্যাদি। এভাবে আরও অনেক ধাপ পেরোনোর পর একজন মানুষ রান্নায় পারদর্শী হয়ে ওঠেন। কমপক্ষে ১০ বছর ধরে এই চর্চা অব্যাহত রাখতে হয়। এর মধ্যে অন্যান্য রন্ধনশিল্পীকে সহযোগিতা করেন তারা।
বলে রাখা ভালো, কালায়ুর গ্রামের পুরুষ রন্ধনশিল্পীরা কিন্তু নিজেদের পরিবারের জন্য রান্না করেন না! আর দশটা ভারতীয় পরিবারের মতো ঘরের রান্নাবান্নার দায়িত্ব সামলান সাধারণত নারীরাই।
সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া