হাসনাত করিমকে নিয়ে এখনও ধন্ধে পুলিশ

নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষক হাসনাত করিমেগুলশান হামলার ঘটনায় হাসনাত রেজা করিম জড়িত কিনা—এ বিষয়ে এখনও ধন্ধে রয়েছে পুলিশ। হেফাজতে নিয়ে গোয়েন্দা দফতর ও টাস্কফোর্স ইন্টারোগেশন (টিএফআই) সেলে সম্মিলিতভাবে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। কিন্তু হাসনাত করিম জড়িত কিনা—তা এখনও সুনির্দিষ্টভাবে জানতে পারেননি তদন্তে সংশ্লিষ্টরা। সোমবার ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) মিডিয়া সেন্টারে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবেও কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটের প্রধান ও ডিএমপি’র অতিরিক্ত কমিশনার মনিরুল ইসলাম এ বিষয়ে পরিষ্কার কিছু বলতে পারেননি।

মনিরুল ইসলাম বলেন, ‘হাসনাত করিম গুলশান হামলার ঘটনায় দায়ের হওয়া মামলার সন্দেহভাজন একজন আসামি। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। টিএফআই সেলেও তাকে পাঠানো হয়েছিল জিজ্ঞাসাবাদের জন্য। টিএফআই সেলের প্রাপ্ত তথ্য এখন পর্যন্ত আমরা পাইনি। সেটা পেলে এবং তদন্তকারী কর্মকর্তা জিজ্ঞাসাবাদে যতটুকু জানতে পেরেছেন, দু’টো মিলিয়ে আমরা একটা উপসংহারে পৌঁছাতে পারব।’

মনিরুল ইসলাম আরও বলেন, ‘তাহমিদ হাসিব খান গুলশান হামলার সঙ্গে জড়িত না মর্মেই আমাদের কাছে মনে হয়েছে। সেই হিসেবে তাকে এই মামলাতে গ্রেফতারও দেখানো হয়নি। সে মূলত পুলিশকে তথ্য না দিয়ে তথ্য চেপে যায়। পুলিশকে অসহযোগিতার কারণে তাকে ৫৪ ধারায় গ্রেফতার দেখানো হয়েছিল। সেই ব্যাপারে বিজ্ঞ আদালতে প্রসিকিউশনও দাখিল করা হয়েছে।’

সাংবাদিকদের অন্য এক প্রশ্নের জবাবে মনিরুল বলেন, ‘তদন্তে সাক্ষ্য-প্রমাণে যেটি উঠে এসেছে আমরা সেভাবেই কাজ করছি। আমরা পর্যালোচনা করে দেখেছি, পর্যালোচনা এখনও চলছে। যদি ভবিষ্যতেও তার সম্পৃক্ততা কোনও পর্যায়ে আসে, তাহলে তাকে আবার এই মামলায় গ্রেফতার দেখানো হবে।’

কী ধরনের তথ্য তাহমিদ জানতো এবং কী তথ্য সে গোপন করেছিল, জানতে চাইলে মনিরুল ইসলাম বলেন, সে যতটুকু তথ্য জানতো, সেই তথ্য জানার পর তাকে প্রাথমিকভাবে ছেড়ে দেওয়া হয়েছিল। পরে তাকে কয়েকবার নোটিশ করার পরও সে আর আসেনি। কারণ আরও কিছু প্রাপ্ত তথ্য যাচাই-বাছাই করার জন্য তাকে আমাদের দরকার হয়েছিল। কিন্তু সে সহযোগিতা না করায় তার বিরুদ্ধে  বক্তব্য  দাখিল করা হয়েছে আদালতে।’

তাকে নজরদারিতে রাখা হবে কিনা—এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, যেহেতু মামলার তদন্ত কাজ শেষ হয়নি, সেহেতু তদন্ত কাজ শেষ না হওয়া পর্যন্ত এ বিষয়ে সুনির্দিষ্ট কোনও সিদ্ধান্তে না পৌঁছানো পর্যন্ত বলার সুযোগ নেই, সে জড়িত কিনা। কাজেই আমরা পরবর্তী কার্যক্রম আইন অনুযায়ী চালাব। তদন্তের ক্ষেত্রে যারই সম্পৃক্ততা আসুক, তাকেই আইনের আওতায় নিয়ে আসা হবে।’

মনিরুল ইসলাম বলেন, ‘গুলশান হামলার ঘটনায় ব্যবহৃত অস্ত্র ও বিস্ফোরক আসার যে রুট, কোথা থেকে কিভাবে এসেছে, এ সংক্রান্ত বেশ কিছু তথ্য আমরা পেয়েছি। অর্থের উৎস সম্পর্কেও আমরা কিছুটা জানতে পেরেছি। কিন্তু এখনও পুর্ণাঙ্গ তথ্য আমাদের হাতে পৌঁছেনি। ফলে যাদের এখনও গ্রেফতার করা যায়নি, তাদের গ্রেফতার করতে পারলে এ বিষয়ে পুরোপুরি জানা যাবে। আর গ্রেফতার করতে না পারলেও যদি সুনির্দিষ্ট তথ্য দিয়ে শনাক্ত করতে পারি, তাহলে এ মামলার তদন্ত কাজ অধিকাংশই সম্পন্ন হবে বলে আমরা আশাবাদী।

 আরও পড়ুন: তাহমিদ গুলশান হামলার আসামি নয়: মনিরুল

/এমএনএইচ/