তরুণী ধর্ষণের ঘটনায় আনসার সদস্যদের বাঁচানোর চেষ্টা!

 

 

ধর্ষণএবার ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতাল এলাকায় কিশোরী ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে আনসার সদস্যদের বিরুদ্ধে। আর অভিযোগ অস্বীকার করলেও কর্তৃপক্ষ ঘটনায় জড়িত অভিযোগে নিরাপত্তা বাহিনী আনসারের ছয় সদস্যকে প্রত্যাহারের পর আরও ১০ জনকে দায়িত্ব থেকে সরিয়ে নিয়েছে। যদিও সূত্র বলছে, পুরনো কোনও অভিযোগ নতুন করে উঠে না আসে, সেই সতর্কতার জন্যই এই সদস্যদের সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। তবে বদলি হওয়া এই আনসার সদস্যদের কোথায় নিয়োগ করা সে বিষয়ে কিছু জানা যায়নি। এ প্রসঙ্গে মানবাধিকার নেত্রী এলিনা খান বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘তাদের বিরুদ্ধে নানা অনিয়মের যেসব অভিযোগ উঠেছে, সেগুলো এড়িয়ে যেতেই কৌশল হিসেবে বদলি করা হচ্ছে।’

দেশের কয়েকটি স্থানে ধারাবাহিক শিশু ও কিশোরী ধর্ষণের খবর যখন ক্ষোভের সঞ্চার করছে, ঠিক সেই সময় ২৭ অক্টোবর রাতে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের রেডিওলজি বিভাগের আউটডোরে এক কিশোরী ধর্ষণের শিকার হয়। এ খবর প্রকাশিত হওয়ায় নতুন করে প্রশ্ন উঠেছে, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এ ধরনের অপরাধে জড়িয়ে পড়ে কিভাবে? খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল এলাকায় এই আনসার সদস্যরা নানা অনিয়মের সঙ্গে জড়িয়ে পড়েছিলেন। এমনকি রোগীদের কাছ থেকে টাকার বিনিময়ে কিছু সুযোগ সুবিধা করে দেওয়া, দালালদের সঙ্গে শলাপরামর্শে রোগী ক্লিনিকে ভাগিয়ে নেওয়ার কাজও করে বলে অভিযোগ আছে।

ধর্ষণের ঘটনায় ঢামেকের সহকারী পরিচালক ডা. জাকির হোসেনকে প্রধান করে বৃহস্পতিবার তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্ত শুরুর আগেই সেখানকার সব আনসার সদস্যকে সরিয়ে নেওয়া প্রসঙ্গে মানবাধিকার নেত্রী এলিনা খান বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘এখন ঘটনা প্রকাশের পর তাদের গণমাধ্যমকর্মীসহ অন্যরা প্রশ্ন করবে।  আগে তাদের বিরুদ্ধে নানা অনিয়মের যেসব অভিযোগ উঠেছে, সেগুলো এড়িয়ে যেতেই কৌশল হিসেবে এই বদলি। তাদের লোকচক্ষুর আড়ালে নিয়ে গিয়ে কী লাভ? জড়িত আছে কিনা, সেটা তদন্ত করে উপযুক্ত শাস্তি দিতে হবে।’ তিনি আরও বলেন, ‘যেকোনও ঘটনায় আমরা দেখি স্থানীয় ওসিকে ক্লোজড করা হয়। তারা যায় কোথায়? কখনও কেউ খোঁজ করে না।’

মামলার অবস্থা এবং চাকরি ছেড়ে যাওয়া আনসার সদস্যদের বিষয়ে শাহবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবু বকর সিদ্দিক বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘ওই কিশোরী নিজেই বাদী হয়ে ধর্ষণের অভিযোগে মামলা করেছিল। তারা হলেন এপিসি একরামুল, আনসার সদস্য আনিসুল, আতিকুল, সিরাজ, বাবুল ও মিনহাজ। এর মধ্যেই আতিকুলকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার আদালত তার রিম্যান্ড মঞ্জুর করেছেন বলে খবর পেয়েছি।’ তিনি আরও বলেন, ‘বাকিদের নাম ঠিকানা অফিস থেকে পাওয়া গেছে। আটকের চেষ্টা অব্যাহত আছে।’

এ বিষয়ে জানতে আনসারের মহাপরিচালক মিজানুর রহমান খানের সঙ্গে টেলিফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করেও পাওয়া যায়নি।

/এমএনএইচ/