রাজধানীর কামরাঙ্গীরচর থেকে অপহরণ করা শিশু সুমাইয়াকে নির্যাতন করা হতো। তাকে ঠিকমত খেতেও দেওয়া হয়নি। সুমাইয়া বিচারককে জানিয়েছেন, তাকে লাঠি দিয়েও পিটিয়েছে অপহরণকারী ‘বৃষ্টি আন্টি’ ওরফে সাবিনা আক্তার বৃষ্টি। বৃহস্পতিবার আদালতের খাস কামরায় বিচারকের সঙ্গে আলাপকালে সুমাইয়া এসব কথা জানায়।
এ ঘটনায় পুলিশের হাতে গ্রেফতার হওয়া অপহরণকারী সাবিনা আক্তার বৃষ্টি ও সিরাজ মিয়া ওরফে বাবুলের রিমান্ড আবেদন জানিয়ে আদালতে হাজির করা হয় বৃহস্পতিবার (২৭ এপ্রিল) দুপুরে। এ সময় শিশু সুমাইকেও উপস্থিত রাখা হয় আদালতে। রিমান্ড শুনানির একপর্যায়ে শিশুটির সঙ্গে কথা বলেন ঢাকা মহাগর বিচারক প্রণব কুমার।
মায়ের কোল থেকেই বিচারকের সঙ্গে কথা বলে শিশু সুমাইয়া। শিশুটিকে কতটা কষ্ট দেওয়া হয়েছে তা বিস্তারিত জানতে তার খাস কামরায় পারিবারিক পরিবেশ সুমাইয়ার কথা শোনেন বিচারক। এসময় বিচারক সুমাইয়ার কাছে জানতে চায় এতোদিন কোথায় ছিলে? সুমাইয়া উত্তর দেয়- বৃষ্টির (অপহরণকারী) আম্মুর কাছে।
বৃষ্টি ঠিকমত খাবার দিতো কি না জানতে চাইলে সুমাইয়া মাথা নেড়ে না সূচক জবাব দেয়। বিচারক শিশুটিকে বলেন, ‘কিচ্ছু দিতো না?’ তখনও ব্যথার যন্ত্রণা নিয়ে শিশু সুমাইয়া মাথা নেড়ে না সূচক উত্তর জানায়।
মায়ের কোলে সুবিধাজনক অবস্থানে বসার পর বিচারক সুমাইকে বলেন, ‘এখন ভাল লাগছে, তুমি বাসায় যাবে না?’ মায়ের সঙ্গে বাসায় যাওয়ার কথা জানালে সুমাইয়া মাথা নেড়ে যেতে হ্যাঁ সম্মতি দেয়। ‘পচা বৃষ্টি আন্টির সঙ্গে যাবে কি না’ জানতে চাইলে বিচারককে না সূচক জবাব দেয় সুমাইয়া।
শিশু সুমাইয়ার সঙ্গে কথা বলার পর রিমান্ড শুনানি শেষে অপহরণের দায়ে গ্রেফতার হওয়া দুই আসামি সাবিনা আক্তার বৃষ্টি ও সিরাজ মিয়া ওরফে বাবুলের তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। সুমাইয়া অপহরণের তথ্য উদ্ঘাটনের জন্য কামরাঙ্গীর চর থানার উপ-পরিদর্শক মো. রাজিবুল ইসলাম বৃহস্পতিবার সকালে ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করেন।
রিমান্ড শুনানি চলাকালে বিচারক বৃষ্টির কাছে শিশুটির ওপর নির্যাতন হয়েছে কি না জানতে চান। অপহরণকারী বৃষ্টি তা অস্বীকার করে। কেন অপহরণ করা হয়েছিল জানতে চাইলে বৃষ্টি বিচারককে বলেন, ‘আমার সঙ্গে তাদের আগে থেকেই পরিচয় ছিল।’ এরপর আর কোনও কথা বলেনি বৃষ্টি।
/এসএমএ/এমও/