র্যাব-১০ অধিনায়ক জাহাঙ্গীর হোসেন মাতুব্বর বাংলা ট্রিবিউনকে জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে তারা রাজধানীর নবাবপুরের ইব্রাহিম আবাসিক হোটেলে অভিযান চালিয়ে বনানীর ধর্ষণ ঘটনার প্রধান আসামি সাফাত আহমেদের গাড়ি চালক বিল্লালকে গ্রেফতার করা হয়।
মাসুদুর রহমান বাংলা ট্রিবিউনকে জানান, সন্ধ্যার পরই গুলশান এলাকা থেকে বডিগার্ড রহমত আলীকে গ্রেফতার করা হয়। এর আগে তার নাম জানা গিয়েছিল আবুল কালাম আজাদ। সে ধর্ষণ মামলার এজাহারভুক্ত ৫ নম্বর আসামি।
এর আগে ১১ মে রাতে সিলেট শহরের একটি বাড়ি থেকে সাফাত আহমেদ ও সাদমান সাকিফকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তারা দু’জনই বর্তমানে রিমান্ডে রয়েছে। রিমান্ডের তৃতীয় দিন চলছে তাদের। গত ১২ মে শুক্রবার সাফাতের ৬ দিন ও সাদমানের ৫দিন রিমান্ড মঞ্জুর করেছিলেন ঢাকার সিএমএম আদালত।
তদন্ত সংশ্লিষ্টরা জানান, ধর্ষণ ঘটনার অন্যতম অভিযুক্ত নাঈম আশরাফ ওরফে হালিমও রয়েছে নজরদারিতে। যেকোনও সময় নাঈমকেও গ্রেফতার করা সম্ভব।
রিমান্ডে সাফাত-সাদমানকে মুখোমুখি জিজ্ঞাসাবাদ
এদিকে ভিকটিম সাপোর্ট সেন্টারের নারী তদন্ত কর্মকর্তা ও গোয়েন্দা কর্মকর্তাদের জিজ্ঞাসাবাদে পাওয়া বিভিন্ন তথ্য মিলিয়ে দেখতে সাফাত ও সাকিফকে আলাদা আলাদা জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। পরে তাদের দু’জনের তথ্যের গরমিল বিষয়ে জানার জন্য মুখোমুখি বসিয়েও জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় বলে জানান সংশ্লিষ্টরা।
তদন্তে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, সাফাত বাঁচার জন্য সাদমান সাকিফসহ পলাতক বডিগার্ড ও চালকের ওপর দোষ চাপানোর চেষ্টা করছিল। এজন্য সাফাত ও সাদমানকে রিমান্ডের তৃতীয় দিনেও মুখোমুখি জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। এ সময় তারা ওই রাতের ঘটনাসহ আরও অনেক তথ্য দিয়েছে। যেসব তথ্য যাচাই-বাচাইয়ের জন্য একাধিক টিম কাজ করছে মাঠে।
এদিকে বনানী থানা পুলিশের দায়িত্বে অবহেলা, তদন্তে গাফিলতি ও আর্থিক অভিযোগের বিষয়ে পুলিশের গঠিত উচ্চ পর্যায়ের কমিটি এরইমধ্যে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে বনানী থানার ওসি ফরমান আলীকে। তবে এ বিষয়ে বিস্তারিত কোনও তথ্য দিতে রাজি হননি সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।
উল্লেখ্য, ধর্ষণের শিকার হওয়ার অভিযোগ এনে গত ৬ মে বনানী থানায় একটি মামলা দায়ের করেন বেসকারকারী বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই শিক্ষার্থী। তারা মামলার এজাহারে উল্লেখ করেন, ‘২৮ মার্চ পূর্বপরিচিত সাফাত আহমেদের জন্মদিনের দাওয়াত দিয়ে তাদের বনানীর ‘কে ব্লকের ২৭ নম্বর সড়কের ৪৯ নম্বরে রেইনট্রি নামের হোটেলে নিয়ে যায়। সেখানে দুই তরুণীকে হোটেলের একটি কক্ষে আটকে রেখে মাথায় অস্ত্র ঠেকিয়ে ধর্ষণ করে সাফাত ও নাঈম। এ ঘটনা সাফাতের গাড়িচালক বিল্লালকে দিয়ে ভিডিও করানো হয় বলেও উল্লেখ করা হয় এজাহারে।
/এআরআর/এসএমএন/জেইউ/টিআর/এমএনএইচ/