উষ্ণ সংবর্ধনায় অবসরে গেলেন দেশের প্রথম নারী বিচারপতি

নাজমুন আরা সুলতানাআইনজীবী ও সহকর্মীদের উষ্ণ সংবর্ধনায় মধ্য দিয়ে অবসরে গেলেন দেশের প্রথম নারী বিচারপতি নাজমুন আরা সুলতানা। বৃহস্পতিবার (৬ জুলাই) প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহার নেতৃত্বে আপিলের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম ও জয়নাল আবেদিনের বক্তব্যের পর বক্তব্য রাখেন তিনি।
নিজের শেষ কার্যদিবসে বিচারকাজ ও পেশাজীবনে আইনজীবীদের সহায়তা পাওয়ার কথা উল্লেখ করে বক্তব্য রাখেন বিচারপতি নাজমুন আরা সুলতানা। তিনি বলেন, ‘বিচারকাজ পরিচালনার জন্য বিজ্ঞ আইনজীবীদের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ। আমার যা অর্জন তা আপনাদের জন্যই। আপনাদের কাছ থেকেই অনেক শিখেছি।’
আদালতে প্রথম আসার স্মৃতিও রোমন্থন করেছেন দেশের প্রথম নারী বিচারপতি। তিনি বলেন, ‘প্রথম যেদিন আদালতে যাই, সেদিন বিচারকাজ চলার সময় মন্ত্রমুগ্ধের মতো দেখে ভেবেছিলাম, আমিও কি কোনোদিন বিচারক হতে পারবো? পরে জেনেছি, বাংলাদেশে কখনও কোনও নারী বিচারক হননি। আল্লাহর রহমতে এ দেশের প্রথম নারী বিচারক হিসেবে দায়িত্ব পালন করলাম।’
নাজমুন আরা সুলতানার বাবার ইচ্ছে ছিল মেয়ে ব্যারিস্টার হবে। কিন্তু বাবা মারা যাওয়ায় মায়ের পক্ষে সেই ইচ্ছে পূরণ করা সম্ভব হয়নি বলে জানান অবসরে যাওয়া এই বিচারপতি। তার কথায়, ‘আমার মায়ের সাহসিকতার কারণেই আজ এই জায়গায়।’ সবশেষে সবাইকে ধন্যবাদ জানিয়ে এজলাস ছেড়ে যান তিনি।

এর আগে অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলমের লিখিত বক্তব্যে নাজমুন আরা সুলতানা একজন দক্ষ বিচারপতি হিসেবে প্রশংসিত হয়েছেন। তিনি অনেক ঐতিহাসিক রায় দিয়েছেন উল্লেখ করেন অ্যাটর্নি জেনারেল। নাজমুন আরা সুলতানার কর্মময় জীবনের কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘বেগম রোকেয়ার স্বপ্ন বাস্তবে রূপ পেয়েছে আপনার মাধ্যমে। বিচারপতি হিসেবে প্রজ্ঞা, মেধা, সততা এবং অভিজ্ঞতা দিয়ে বিচার বিভাগকে সমৃদ্ধ করেছেন আপনি। আপনার দেওয়া যুদ্ধাপরাধের রায় আমাদের গর্বিত করে। দেশের প্রথম নারী বিচারপতি হিসেবে আপনার নাম সমুজ্জ্বল থাকবে।’

/এমটি/ইউআই/জেএইচ/