আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মনিরুজ্জামান রুবেল ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল মারুফা আক্তার শিউলি। রাষ্ট্র নিযুক্ত আসামিপক্ষে আইনজীবী ছিলেন অমূল্য কুমার সরকার। এছাড়া আসামিপক্ষে ছিলেন আইনজীবী একেএম ফজুলল হক খান ফরিদ, তাকে সহযোগিতা করেন আইনজীবী সাইফুর রহমান রাহী।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, পারিবারিক সম্পত্তির লোভে ২০০১ সালের ৩১ মে সন্ধ্যায় জামালপুর শহরের আমলাপাড়া এলাকার বাসিন্দা আমেরিকা প্রবাসী লুৎফর রহমানের ৭ বছরের শিশুপুত্র মোত্তাসিম বিল্লাহকে তার চাচাতো ভাই তোফায়েল আহমেদ হীরা বাসা থেকে ডেকে নিয়ে যায়। পরে জামালপুর সদরের নান্দিনা খড়খড়িয়া এলাকায় নিয়ে দণ্ডপ্রাপ্তরা শিশু মোত্তাসিম বিল্লাহকে বালিশ চাপা দিয়ে হত্যা করে একটি নির্মাণাধীন ভবনের মেঝেতে পুঁতে রাখে।
এরপর এ ঘটনায় পুলিশ তোফায়েল আহমেদ হীরাকে আটক করে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ করলে তার স্বীকারোক্তি অনুযায়ী অপহরণের ৭৯ দিন পর শিশু মোত্তাসিমের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। পরে অপহরণ ও হত্যার ঘটনায় শিশু মোত্তাসিমের খালু আশরাফ হোসেন বাদী হয়ে তোফায়েল আহমেদ হীরাসহ ৬ জনকে আসামি করে অপহরণ ও হত্যার অভিযোগে জামালপুর থানায় দু’টি মামলা দায়ের করেন।
এরপর ২০০৩ সালে শিশু মোত্তাসিম বিল্লাহ অপহরণ মামলায় তোফায়েল আহমেদ হীরা, সোহেল রানা ও আনোয়ার হোসেনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ডাদেশ দেন জামালপুর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন বিশেষ ট্রাইব্যুনাল।
এছাড়া হত্যা মামলায় ২০১৫ সালের ১৮ জানুয়ারি জামালপুরের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ ওয়াহেদুজ্জামান শিকদারের আদালত আসামি তোফায়েল আহমেদ হীরা, সোহেল রানা শিপন, আনোয়ার হোসেন, লোকমান আলী, আয়নাল হকের ফাঁসির রায় দেন।
এরপর দু’টি পৃথক বিচারিক আদালতের রায়ের ডেথ রেফারেন্স ও আপিলের ওপর হাইকোর্টে শুনানি হয়। শুনানি শেষে রবিবার হাইকোর্ট এ মামলার রায় ঘোষণা করেন।
দণ্ডপ্রাপ্তদের মধ্যে তোফায়েল আহমেদ হীরা, সোহেল রানা শিপন, আনোয়ার হোসেন পলাতক রয়েছে। তবে হাইকোর্টের রায়ে খালাস পাওয়া লোকমান ও আয়নাল কারাগারেই রয়েছে।