ইয়াবা ব্যবসায় জড়িত অভিযোগে পাঠাও চালকসহ গ্রেফতার ৪

গ্রেফতারকৃত চারজন

ইয়াবা ব্যবসা জড়িত অভিযোগে রাজধানী ঢাকায় পাঠাও চালকসহ চারজনকে গ্রেফতার করেছে র‍্যাব। শনিবার (২৩ জুন) রাতে রাজধানীর উত্তরা পশ্চিম থানাধীন ১২নং সেক্টরের ১৮ নম্বর সড়কের ১১ নম্বর বাসায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করা হয়। তাদের কাছ থেকে ২০ হাজার পিস ইয়াবা, ৮টি মোবাইল ও একটি মোটরসাইকেল জব্দ করা হয়েছে।

গ্রেফতারকৃতরা হলেন কক্সবাজারের ইফতেখারুল ইসলাম (২৫), উত্তরার ওই ভবনের কেয়ারটেকার অলি আহম্মেদ (২৪), ওষুধ কোম্পানির ইনফরমেশন অফিসার মোস্তফা কামাল এবং পাঠাও চালক রানা আহম্মেদ ওরফে রাজু (২৫)।

রবিবার (২৪ জুন) বেলা সাড়ে ১১টায় কাওরান বাজারে র‌্যাবের মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে র‌্যাব-৩ অধিনায়ক (সিও) লে. কর্নেল এমরানুল হাসান এসব কথা জানান। তিনি বলেন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তৎপর থাকায় ঢাকার মাদক ব্যবসায়ীরা ইয়াবার চালান আনতে কক্সবাজার যেতে চায় না। মাদক ব্যবসায়ী ও ক্যারিয়ারদের চলাচলও সীমিত হয়েছে। সম্প্রতি গোপন সংবাদের ভিত্তিতে আমরা জানতে পারি কতিপয় মাদক ব্যবসায়ী কক্সবাজারের উখিয়া থেকে ইয়াবার একটি চালান এনে ঢাকার উত্তরায় একটি ফ্ল্যাটে মজুত করেছে। এ তথ্যের ভিত্তিতে ওই বাসায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করা হয়।

জিজ্ঞাসাবাদে ইফতেখার জানিয়েছেন, তিনি উখিয়ার একটি কলেজের অনার্স দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র। মাদক ব্যবসার সঙ্গে জড়িত উখিয়ার স্থানীয় কিছু যুবকের বিলাসবহুল জীবনযাপন দেখে তিনিও ইয়াবা ব্যবসায় জড়িয়ে পড়েন। তিনি নিজে মাদক ব্যবসা করার পাশাপাশি কক্সবাজারের মাদক ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে বিপুল অংকের টাকার বিনিময়ে স্থানীয় যুবক ও রোহিঙ্গাদের ঢাকায় ইয়াবা নিয়ে যেতে উদ্বুদ্ধ করার কাজ করতো। কক্সবাজার থেকে রাজধানীর উত্তরা ও আশপাশের মাদক ব্যবসায়ীদের ইয়াবা সরবরাহের কাজ নিয়ন্ত্রণ করতো ইফতেখার।

উদ্ধার করা ইয়াবা ও মোবাইল ফোনঅলি আহম্মেদের বাড়ি উখিয়ার রাজাপালং গ্রামে। উত্তরার ফজিলত প্রোপার্টিজ নামে একটি নির্মাণাধীণ প্রতিষ্ঠানে সিকিউরিটি গার্ডের চাকরি করে সে। অলি যে ভবনে কেয়ারটেকারের কাজ করেন সেখানে ইয়াবা রাখতেন বলে জানিয়েছেন। এরপর মাদক ব্যবসায়ীদের কাছে তা তিনি পৌঁছে দিতেন।

মোস্তফা কামাল জানিয়েছেন, কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলায় শরীফ ফার্মাসিউটিক্যালসের মেডিক্যাল ইনফরমেশন অফিসার হিসেবে কাজ করেন তিনি। মোটা অঙ্কের টাকার লোভে তিনি ইয়াবা পরিবহনের কাজেও যুক্ত হয়ে পড়েন। কক্সবাজার থেকে ইয়াবার ঢাকায় একটি চালান পৌঁছাতে পারলেই তিনি পেতেন ২০ হাজার টাকা।

আর রানা আহম্মেদ রাইড শেয়ারিং অ্যাপস পাঠাও-এর একজন রাইডার। তিনি ইয়াবা মাদক ব্যবসায়ীদের কাছে পৌঁছে দিতেন।

র‍্যাব কর্মকর্তা এমরানুল হাসান বলেন, কক্সবাজারের ইয়াবা ব্যবসায়ীদের সঙ্গে ঢাকার কয়েকজন মাদক ব্যবসায়ীর যোগসাজশের তথ্য পেয়েছি। তাদের নামও জেনেছি। তদন্তসাপেক্ষে তাদের আইনের আওতায় নিয়ে আসা হবে।

তিনি বলেন, ‘পাঠাও চালকদের কয়েকজনের বিরুদ্ধে ইয়াবা ব্যবসায় জড়িত থাকার তথ্যও আমরা পেয়েছি। তাদের ব্যাপারে তথ্য পেতে আমরা পাঠাওয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করবো।’ মাদক পরিবহনে পাঠাও চালক ও রোহিঙ্গা নাগরিকদের ব্যবহারের তথ্য পাওয়ায় এ সংক্রান্ত মামলাটি র‌্যাব-৩ তদন্ত করবে বলেও জানান তিনি।