পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে হেনস্তার শিকার বাংলা ট্রিবিউনের সাংবাদিক

কলার ধরে টানাটানি করায় সাংবাদিক আকবরের শার্ট ছিঁড়ে যায়মিরপুরে শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে হেনস্তার শিকার হয়েছেন বাংলা ট্রিবিউনের প্রতিবেদক চৌধুরী আকবর হোসেন। শুক্রবার (১৪ ডিসেম্বর) সকালে শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসের খবর সংগ্রহের জন্য মিরপুরের শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে গিয়েছিলেন তিনি। সংবাদ সংগ্রহের সময় বেসরকারি টেলিভিশন ‘চ্যানেল ২৪’-এর সাংবাদিক নাহিদ হোসেন তাকে হেনস্তা করেছেন বলে অভিযোগ করেছেন সাংবাদিক চৌধুরী আকবর হোসেন।

জানা গেছে, সকাল সাড়ে ৯টার দিকে ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বে ঐক্যফ্রন্টের নেতারা শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য আসেন। এ সময় বাংলা ট্রিবিউনের প্রতিবেদক চৌধুরী আকবর হোসেন সেখানে সংবাদ সংগ্রহের জন্য উপস্থিত ছিলেন। শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে ড. কামাল হোসেনের বক্তব্য নেওয়ার জন্য স্মৃতিসৌধের বেদিতে অন্য সংবাদকর্মীদের সঙ্গে সেখানে চৌধুরী আকবরও  অবস্থান করছিলেন।

সে সময় তাকে সরিয়ে সেখানে দাঁড়ানোর চেষ্টা করেন টেলিভিশন মাধ্যমের কয়েকজন সাংবাদিক। কেন সরিয়ে দেওয়া হচ্ছে জানতে চাইলে বাকবিতণ্ডা শুরু করেন তারা। একপর্যায়ে দুজন টেলিভিশন সাংবাদিকের সঙ্গে চৌধুরী আকবরের বাকবিতণ্ডা চলতে থাকে। সেখানে থাকা চ্যানেল ২৪-এর সাংবাদিক নাহিদ হোসেন অতর্কিতভাবে চৌধুরী আকবরের দিকে তেড়ে আসেন। নাহিদ শার্টের কলার ধরে চৌধুরী আকবরকে ধাক্কা দিতে থাকেন এবং তার শরীরে আঘাত করেন। এতে চৌধুরী আকবরের জামা ছিঁড়ে যায়। পরে অন্য সাংবাদিকরা নাহিদ হোসেনকে সরিয়ে দেন।

এ প্রসঙ্গে চৌধুরী আকবর হোসেন বলেন, ‘মিরপুরে শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে অনেক মানুষের ভিড় ছিল। তাই ড. কামাল হোসেনের বক্তব্য নেওয়ার জন্য আমি আগে থেকেই বেদিতে অবস্থান নিয়েছিলাম। আমাকে সরিয়ে দিয়ে সেখানে দাঁড়ানোর চেষ্টা করেন কয়েকজন টেলিভিশন সাংবাদিক। কেন আমাকে সরিয়ে দিচ্ছেন তা জানতে চাইলে তারা বাকবিতণ্ডা শুরু করেন। ঘটনাস্থলে নাহিদ হোসেনের সঙ্গে আমার কোনও ধরনের আলাপ বা বাকবিতণ্ডা হয়নি। কোনও কারণ ছাড়াই তার এ হামলায় আমি মর্মাহত। বিষয়টি নিয়ে আমি চ্যানেল ২৪-এ লিখিতভাবে অভিযোগ জানিয়েছি।’

আকবরকে মারধরের বিষয়ে নাহিদ হোসেন বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘আমার নামটা সেখানে আসলো কীভাবে বুঝতে পারছি না। আমি বুম হাতে নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছিলাম। সেখানে অনেক ভিড় ছিল।  আমি গিয়ে দেখি এক ক্যামেরা পারসনের সঙ্গে আকবরের কথা হচ্ছে।  আকবর ক্যামেরা পারসনকে বলছিলেন, “আরে ভাই ধাক্কা দিচ্ছেন কেন? মুখে বললেই তো আমি সরে যাই।”  এরপর ক্যামেরা পারসন বললেন, “সরেন সরেন।” তখন আকবর বলছেন, “আপনারা কাজ করতে এসেছেন, আমি কি কাজ করতে আসিনি?”  তখন শান্ত (তৌহিদ হায়দার খান) ভাই অশোভন ভাষায় কথা বলে আকবরকে সরিয়ে দেন। এরপর কয়েকজন ক্যামেরা পারসনও আকবরকে ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে দেন।’

নাহিদ হোসেন আরও বলেন, ‘আমার সঙ্গে তার কোনও কথা হয়নি। তার সঙ্গে আমার কোনও বাকবিতণ্ডা হয়নি। আমি তাকে মারব কীভাবে?’

এ প্রসঙ্গে চ্যানেল ২৪-এর বার্তাপ্রধান রাহুল রাহা বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘আমি ঘটনা সম্পর্কে এখনও কিছু জানি না। শনিবার দুপুরে আকবরকে অফিসে আসার জন্য বলেছি। তখন তার কাছ থেকে ঘটনা শুনে এ বিষয়ে বলতে পারব।’