স্থগিতাদেশ খারিজ, তৃতীয় টার্মিনালের দরপত্র দাখিলে বাধা নেই

আদালতহজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর সম্প্রসারণ ও তৃতীয় টার্মিনাল নির্মাণ প্রকল্পের দরপত্র প্রক্রিয়া স্থগিতের জন্য হাইকোর্ট বিভাগের আদেশ খারিজ করে দিয়েছেন আপিল বিভাগের চেম্বার জজ আদালত। ফলে এক্ষেত্রে আর কোনও বাধা রইলো না। মঙ্গলবার (১৯ মার্চ) আপিল বিভাগের চেম্বার জজ আদালতে হাইকোর্ট বিভাগ কর্তৃক প্রদেয় স্থগিতাদেশের ওপর শুনানি শেষে আদালত এই সিদ্ধান্ত দেন।
শুনানিতে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের পক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম, ব্যারিস্টার ফজলে নূর তাপস ও ব্যারিস্টার মো. জাহাঙ্গীর হোসেন।
সোমবার (১৮ মার্চ) সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগে দায়েরকৃত এক রিট আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে হাইকোর্ট বিভাগ হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর সম্প্রসারণ ও তৃতীয় টার্মিনাল নির্মাণ প্রকল্পের দরপত্র প্রক্রিয়া স্থগিতের নির্দেশ দিয়েছিলেন। রিট পিটিশনে দাবি করা হয়েছিল, এই প্রকল্পের দরপত্র আহ্বানের ক্ষেত্রে সরকারের ক্রয় সংক্রান্ত কেন্দ্রীয় কারিগরি ইউনিটের (সিপিটিউ) বিধান মানা হয়নি।
তবে মঙ্গলবার চেম্বার জজ আদালতে শুনানির সময় বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের পক্ষে নিয়োজিত আইনজীবীরা আদালতে প্রকৃত ঘটনা তুলে ধরেন। তারা আদালতে প্রমাণ করেন, রিট পিটিশন দায়েরকারী ইচ্ছাকৃতভাবে আদালতের কাছে তথ্য গোপন করেছেন। প্রকৃতপক্ষে পাবলিক প্রকিউরমেন্ট ২০০৬-এর সেকশন ৩-এর জি’তে বলা আছে, ‘যদি কোনও দাতা সংস্থা বা দেশে ঋণ বা অর্থ সহায়তায় কোনও প্রকল্প বাস্তবায়িত হয় সেক্ষেত্রে সেই প্রকল্পে দরপত্রে পাবলিক প্রকিউরমেন্ট অ্যাক্ট ২০০৬-এর বিধি-বিধান প্রযোজ্য হবে না। সেক্ষেত্রে দাতা সংস্থা বা দেশ কর্তৃক প্রযোজ্য শর্ত প্রয়োগ হবে। হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর সম্প্রসারণ ও তৃতীয় টার্মিনাল নির্মাণ প্রকল্পে জাইকা অর্থায়ন করছে বলে আলোচ্য প্রকল্পের ক্ষেত্রে জাইকার শর্তই প্রাধান্য পাবে। দরপত্র আহ্বানের ক্ষেত্রে বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক) কোনও ধরনের অনিয়ম করেনি।’
হাইকোর্ট বিভাগের দায়েরকৃত রিট পিটিশনে তুরস্কের নির্মাণ প্রতিষ্ঠান টিএভি-গ্যাপইনসাতের দাবি, বেবিচক ইচ্ছাকৃতভাবে তাদের কাছে দরপত্র বিক্রি করেনি। প্রকৃতপক্ষে বাস্তব অবস্থা ছিল এমন— ‘প্রথমে দরপত্র কেনার জন্য আইএফও সনদের শর্ত ছিল। উল্লিখিত নির্মাণ প্রতিষ্ঠানের আইএফও সনদ না থাকায় প্রথমে বেবিচক তাদের কাছে দরপত্র বিক্রি করেনি। পরবর্তী সময়ে ওই শর্ত শিথিল করায় তাদের কাছে দরপত্র বিক্রয় করা হয়।’

তুরস্কের নির্মাণ প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে দায়েরকৃত রিটে ইচ্ছাকৃতভাবে আদালতের কাছে তথ্য গোপনের বিষয়টি ও এর পেছনে অসৎ উদ্দেশ্য চেম্বার জজ আদালতে তুলে ধরা হয়। সার্বিক শুনানি শেষে চেম্বার জজ আদালত এই মর্মে সন্তুষ্ট হন যে, ‘হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর সম্প্রসারণ ও তৃতীয় টার্মিনাল নির্মাণ প্রকল্পের দরপত্র আহ্বানের ক্ষেত্রে নিয়মের কোনও ব্যত্যয় হয়নি এবং অভিযোগকারীদের অভিযোগ আইনের ধারায় বাস্তবায়নযোগ্য নয়।’