সারা দেশে সব মানুষের মধ্যে বইয়ের প্রেম ছড়িয়ে দিতে, আড্ডার মূল বিষয়বস্তু বই করে তুলতে এবং বইয়ের আলো সবার মাঝে ছড়িয়ে দিতে ২০২২ সালের ৯ ফেব্রুয়ারি উন্মুক্ত লাইব্রেরি প্রতিষ্ঠা করেন ডাকসু সদস্য ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক তানবীর হাসান সৈকত। প্রতিষ্ঠাকালে তার উদ্দেশ্য ছিল প্রতিটি জেলায় উন্মুক্ত লাইব্রেরি প্রতিষ্ঠা করা। তারই অংশ হিসেবে প্রথমবারের মতো উন্মুক্ত লাইব্রেরির জেলা শাখা প্রতিষ্ঠা করা হলো নোয়াখালীতে।
বুধবার (৮ মে) নোয়াখালী জেলার চৌমুহনী পৌর পার্কে ‘উন্মুক্ত লাইব্রেরি, নোয়াখালী’র উদ্বোধন করা হয়। এই উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন উন্মুক্ত লাইব্রেরির প্রতিষ্ঠাতা তানভীর হাসান সৈকত। তিনি ফিতা কেটে লাইব্রেরির উদ্বোধন ঘোষণা করেন।
এ সময় তানভীর হাসান সৈকত বলেন, ‘উন্মুক্ত লাইব্রেরি প্রতিষ্ঠার পেছনে অন্যতম কারণ ছিল হিউম্যান ডেভেলপমেন্ট, আমাদের মনোজগতের উন্নয়ন। উন্নত দেশগুলোতে আমরা রাস্তার পাশে কিংবা উন্মুক্ত পার্কে মানুষকে বই পড়তে দেখি। কিন্তু আমাদের দেশে সেটি দেখা যায় না। উন্মুক্ত লাইব্রেরির মাধ্যমে আমরা বাংলাদেশেও সে ধরনের সংস্কৃতি তৈরির চেষ্টা করছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘তরুণদের মধ্যে যারা বই বিমুখ, উন্মুক্ত লাইব্রেরি তাদের জন্য নতুন দ্বার খুলে দেবে, নতুন পথ দেখাবে এবং নতুন করে ভাবতে শেখাবে। একইসঙ্গে উন্মুক্ত লাইব্রেরি আমাদের মগজের অন্ধত্বতা, ধর্মীয় গোঁড়ামি, মৌলবাদী চর্চা ও ঔপনিবেশিক মনোভাব দূরীকরণে ভূমিকা রাখবে।’
প্রধান অতিথির বক্তব্যে নোয়াখালী-৩ আসনের সংসদ সদস্য মামুনুর রশিদ কিরণ বলেন, ‘বই মানুষের জ্ঞান বৃদ্ধিতে সহায়তা করে, মানুষকে সমৃদ্ধ করে। লাইব্রেরি বা পাঠাগার একটি অঞ্চলের মানুষকে আলোকিত করে তুলতে পারে। নোয়াখালীর মাটিতে উন্মুক্ত লাইব্রেরির প্রতিষ্ঠা এই অঞ্চলের মানুষকে আলোকিত করে তুলবে বলে বিশ্বাস করি।’ এ সময় তিনি লাইব্রেরিটির যেকোনও প্রয়োজনে এবং সম্মৃদ্ধিতে পাশে থাকার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।
উন্মুক্ত লাইব্রেরির সাধারণ সম্পাদক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের দফতর সম্পাদক মোছাদ্দেক বিল্লাহ বলেন, ‘বাংলাদেশের প্রতিটি জেলা-উপজেলায় উন্মুক্ত লাইব্রেরি ছড়িয়ে পড়ার যে স্বপ্নটি আমরা লালন করছি, নোয়াখালী জেলায় উন্মুক্ত লাইব্রেরি প্রতিষ্ঠিত হওয়ার মধ্য দিয়ে আমাদের সেই স্বপ্ন বাস্তবায়ন হতে শুরু করেছে। আমি বিশ্বাস করি নোয়াখালীতে প্রতিষ্ঠিত উন্মুক্ত লাইব্রেরি এই অঞ্চলের মানুষের সামাজিক ও সাংস্কৃতিক বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে সক্ষম হবে।’
‘উন্মুক্ত লাইব্রেরি, নোয়াখালী’র উদ্যোক্তা রাকিবুল হাসান রাহির সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন চৌমুহনী পৌরসভার মেয়র মোহাম্মদ খালেদ সাইফুল্লাহ।