হলি আর্টিজানে হামলা

রায়কে কেন্দ্র করে আদালত চত্বরে সর্বোচ্চ নিরাপত্তা

01গুলশানে হলি আর্টিজান রেস্তোরাঁয় হামলা মামলার রায় ঘোষণা করা হবে আজ। বুধবার (২৭ নভেম্বর) চাঞ্চল্যকর এই হামলার রায় ঘোষণা করবেন ঢাকার সন্ত্রাসবিরোধী বিশেষ ট্রাইব্যুনালের বিচারক মজিবুর রহমান। রায়কে কেন্দ্র করে আদালত চত্বর ও এর আশপাশের এলাকায় নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। আদালত চত্বরের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। যেকোনও ধরনের পরিস্থিতি মোকাবিলায় এমন নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
বিষয়টি নিশ্চিত করেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের এসি পেট্রোল কোতোয়ালি ইকবাল। তিনি বলেন, ‘হলি আর্টিজান হামলা মামলার রায়কে ঘিরে সর্বোচ্চ নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে।’


সরেজমিনে আদালত চত্বর ঘুরে দেখা যায়, ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতে মূল ফটকের প্রবেশ পথে রয়েছে বেশ সংখ্যক র‌্যাব ও পুলিশ। মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিল্ডিংয়ে প্রবেশ পথে রয়েছে তল্লাশির চৌকি। এছাড়া সংশ্লিষ্ট সন্ত্রাসবিরোধী বিশেষ ট্রাইব্যুনালের এজলাসের সামনে ব্যাপক আইনশৃঙ্খলা বাহিনী লক্ষ করা যায়।
03এর আগে গত ১৭ নভেম্বর রাষ্ট্রপক্ষ ও আসামিপক্ষের যুক্তি উপস্থাপন শেষে বিচারক রায় ঘোষণার জন্য ২৭ নভেম্বর নির্ধারণ করেন। এ পর্যন্ত মোট ১১৩ সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ করেছেন ট্রাইব্যুনাল।

২০১৮ সালের ২৬ নভেম্বর আট আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন আদালত। এর আগে ৮ আগস্ট তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র গ্রহণ করা হয়। একই বছরের ২৩ জুলাই মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা কাউন্টার টেরোরিজম বিভাগের পরিদর্শক হুমায়ূন কবির মুখ্য মহানগর হাকিম (সিএমএম) আদালতের জিআর শাখায় মামলার অভিযোগপত্র দাখিল করেন। ওই বছরের ২৬ জুলাই সিএমএম আদালত মামলাটি ট্রাইব্যুনালে বদলির আদেশ দেন। এরপর ৩০ জুলাই মামলার অভিযোগপত্র গ্রহণ ও আসামিদের উপস্থিতির জন্য আদালত এ দিন ধার্য করেন।
অভিযোগপত্রে আসামি ২১ জনের মধ্যে ১৩ জন মারা যাওয়ায় তাদের মামলা থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। নিহত ১৩ জনের মধ্যে ৮ জন বিভিন্ন অভিযানে এবং পাঁচ জন ঘটনাস্থলে নিহত হয়।
02অভিযোগপত্রে আট আসামি হলো−হামলার মূল সমন্বয়ক বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত কানাডার নাগরিক তামিম চৌধুরীর সহযোগী আসলাম হোসেন ওরফে রাশেদ ওরফে আবু জাররা, অস্ত্র ও বিস্ফোরক সরবরাহকারী নব্য জেএমবি নেতা হাদিসুর রহমান সাগর, নব্য জেএমবির অস্ত্র ও বিস্ফোরক শাখার প্রধান মিজানুর রহমান ওরফে বড় মিজান, জঙ্গি রাকিবুল হাসান রিগ্যান, জাহাঙ্গীর আলম ওরফে রাজীব ওরফে রাজীব গান্ধী, হামলার অন্যতম পরিকল্পনাকারী আব্দুস সবুর খান (হাসান) ওরফে সোহেল মাহফুজ, শরিফুল ইসলাম ও মামুনুর রশিদ। তারা সবাই কারাগারে।
ঘটনাস্থলে নিহত পাঁচ আসামি হলো−রোহান ইবনে ইমতিয়াজ, মীর সামেহ মোবাশ্বের, নিবরাস ইসলাম, শফিকুল ইসলাম ওরফে উজ্জ্বল ও খায়রুল ইসলাম ওরফে পায়েল।
এছাড়া বিভিন্ন ‘জঙ্গি আস্তানায়’ অভিযানের সময় নিহত ৮ আসামি হলো−তামিম চৌধুরী, নুরুল ইসলাম মারজান, তানভীর কাদেরী, মেজর (অব.) জাহিদুল ইসলাম ওরফে মুরাদ, রায়হান কবির তারেক, সারোয়ার জাহান মানিক, বাশারুজ্জামান ওরফে চকলেট ও মিজানুর রহমান ওরফে ছোট মিজান।

উল্লেখ্য, ২০১৬ সালের ১ জুলাই রাতে গুলশানের হলি আর্টিজান রেস্তোরাঁয় হামলা চালিয়ে বিদেশি নাগরিকসহ ২০ জনকে হত্যা করে জঙ্গিরা। এ সময় তাদের গুলিতে দুই পুলিশ সদস্য নিহত হন। পরে অভিযানে পাঁচ জঙ্গি নিহত হয়। ওই ঘটনায় সন্ত্রাসবিরোধী আইনে গুলশান থানায় মামলা দায়ের করে পুলিশ।