চিঠিতে বলা হয়েছে, বিষয়টির তদন্ত প্রতিবেদন চাওয়ার জন্য কমিশনে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে বিষয়টির তদন্ত করে ৩০ কার্যদিবসের মধ্যে কমিশনে প্রতিবেদন পাঠানোর জন্য মন্ত্রণালয়কে বলা হয়েছে।
দুদক জানায়, ব্রুনাইয়ে বাংলাদেশ হাইকমিশনের প্রথম সচিব (লেবার কাউন্সিলর) জিলাল হোসেন ও লেবার উইংয়ের কর্মকর্তা আবু নাঈমের বিরুদ্ধে দুর্নীতি ও শ্রমিক নির্যাতনের অভিযোগ আছে। এই দুই জনের সিন্ডিকেট প্রবাসী শ্রমিক বা ব্যবসায়ীদের স্বার্থ সুরক্ষা না করে উল্টো শোষণ করছেন। নিজেদের দুর্নীতি ও ব্যর্থতা ঢাকতে প্রবাসীদের হয়রানি করছেন। প্রবাসী মজুরি সংক্রান্ত জটিলতা কিংবা হয়রানির বিষয়ে হাইকমিশনে অভিযোগ করলে সমাধান পাওয়া যায় না। দুই কর্মকর্তার কর্মকাণ্ডের প্রতিবাদ করায় মানবপাচার ও চুরির মিথ্যা মামলার আসামি হয়ে দেশে ফিরতে হয়েছে অনেক শ্রমিককে।
দুদক জানায়, গত বছরের অক্টোবর থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত অর্ধশতাধিক প্রবাসী শ্রমিক ও ব্যবসায়ী দেশে ফিরেছেন বিভিন্ন মামলার আসামি হয়ে। অনেকের পাসপোর্ট বাতিল করা হয়েছে মানবপাচারসহ নানা অভিযোগে। ভুক্তভোগীরা সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে অভিযোগ করে প্রতিকার না পেয়ে দুদকের শরণাপন্ন হয়েছেন।
হাইকমিশনের কোনও কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগ করলে প্রবাসীদের পাল্টা আক্রমণ এবং নির্যাতনের শিকার হতে হয়েছে, এমন ১৫ প্রবাসীদের পাসপোর্ট নম্বরসহ নামের তালিকা পাওয়া গেছে। তালিকার একজন কামরুল হাসান। অন্যায়ের প্রতিবাদ করায় তাকে নির্মম নির্যাতনের শিকার হতে হয় ব্রুনাই হাইকমিশনের ভেতরেই। এ ঘটনা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হলে তোলপাড় সৃষ্টি হয়।
নির্যাতনের শিকার কামরুল হাসান হাইকমিশনের দায়ীদের বিরুদ্ধে মামলা করেন। পরবর্তী সময়ে মামলা ওঠানোর জন্য হাইকমিশন থেকে ভয়ভীতি দেখানো হয়েছে বলেও অভিযোগ রয়েছে।
২০১৮ সালের ৭ মার্চ অন্যায়ভাবে হাইকমিশন ভবনে মনির হোসেন নামে একজনকে নির্যাতন করা হয়। অনৈতিক দাবির প্রতিবাদ করায় তাকে পিটিয়ে আহত করা হয়। এ ঘটনায় মনির হোসেন বাদী হয়ে ব্রুনাই ব্রাকাস থানায় মেডিক্যাল রিপোর্টসহ ২০১৮ সালের ৮ মার্চ মামলা করেন। মামলায় নির্যাতনের তথ্য তুলে ধরা হয়। এরপর মামলা তুলে নেওয়ার জন্য বিভিন্ন সময়ে তাকে হুমকি দেওয়া হয়। কিন্তু হুমকির পরও মামলা তুলে না নেওয়ায় মানবপাচারের সাজানো অভিযোগ করা হয় তার নামে। পরে তাকে জোর করে দেশে ফেরত পাঠানো হয়।
প্রতিনিয়ত এমন নির্যাতনের ঘটনা ঘটছে বলে ব্রুনাই ফেরত বাংলাদেশিরা দুদককে জানিয়েছেন। তারা বাংলাদেশ হাইকমিশনের প্রথম সচিব জিলাল হোসেন ও লেবার উইংয়ের কর্মকর্তা আবু নাঈম সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে নির্যাতন ও হয়রানির অভিযোগ করেছেন।