ক্ষমতাসীনদের প্রতি নমনীয়তা প্রদর্শনের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে দুদক: টিআইবি

01দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) বিরোধী দলের রাজনীতিকদের হয়রানি এবং ক্ষমতাসীন দল ও জোটের রাজনীতিকদের প্রতি নমনীয়তা প্রদর্শনের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। এছাড়া দুদক কাগজে-কলমে স্বাধীন ও শক্তিশালী বলেও মন্তব্য করেছেন ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান।
মঙ্গলবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর ধানমন্ডির মাইডাস সেন্টারে ‘বাংলাদেশ দুর্নীতি দমন কমিশনের ওপর ফলোআপ’ গবেষণা ফল প্রকাশ অনুষ্ঠানে তিনি এই মন্তব্য করেন।
ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ‘দুদক কাগজে-কলমে স্বাধীন হলেও বাস্তবে সেভাবে কাজ করতে পারছে না।’
ইফতেখারুজ্জামান আরও বলেন, ‘সরকারি কর্মকর্তাদের গ্রেফতারের ক্ষেত্রে পূর্বঅনুমতির বিষয়টি অসাংবিধানিক ও বৈষম্যমূলক। আমরা আশা করছি এই ধারাটি আদালতের মাধ্যমে বাতিল হবে।’
সংবাদ সম্মেলনে গবেষণাপত্র তুলে ধরেন টিআইবির রিসার্চ অ্যান্ড পলিসি বিভাগের প্রোগ্রাম ম্যানেজার শাম্মী লায়লা ইসলাম ও সিনিয়র প্রোগ্রাম ম্যানেজার শাহজাদা এম আকরাম।
গবেষণাপত্রে উল্লেখ করা হয়েছে, দুদকের কার্যক্রম ও ক্ষমতার ব্যবহারের কারণে এর স্বাধীনতা ও নিরপেক্ষতা প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছে ।
গবেষণাপত্রে উল্লিখিত বিশেষজ্ঞদের মতে, দুদক বিরোধী দলের রাজনীতিকদের হয়রানি করা এবং ক্ষমতাসীন দল ও জোটের রাজনীতিকদের প্রতি নমনীয় প্রদর্শনের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে, যার প্রমাণ পাওয়া যায় ২০১৮ সালের জাতীয় নির্বাচনের সময় দুদকের কার্যক্রম।
এতে আরও ধারণা করা হয়, দুদক রাজনৈতিকভাবে নিরপেক্ষ নয়। কারণ দুর্নীতির ঘটনা মোকাবিলায় এটি নিরপেক্ষ আচরণ পেতে সমর্থ হয়নি।
গবেষণাপত্রে কয়েকজন বিশেষজ্ঞ অভিযোগ করেন, কমিশন পক্ষপাতপূর্ণ ভূমিকা পালন করে এবং সবার বিরুদ্ধে সমানতালে পদক্ষেপ গ্রহণ করে না। তথ্যদাতাদের মধ্যে একটি সাধারণ ধারণা হচ্ছে, যাদের বিরুদ্ধে তদন্ত চলছে তাদের বেশিরভাগই বিরোধী রাজনৈতিক দলের অন্তর্ভুক্ত, যদিও কয়েক ক্ষমতাসীন দলের সদস্য।
গবেষণা বলছে, দুদকের কর্ম সম্পাদনের স্বাধীনতাও কিছুটা নিম্ন। কিছু ক্ষেত্রে দুদক সরকার ও ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দলসহ অংশীজনের চাপের সম্মুখীন হয়ে থাকে। কিছু ক্ষেত্রে সরকারের বিরূপ প্রতিক্রিয়া এড়ানোর জন্য দুদক স্বাধীনভাবে কাজ করা থেকে বিরত থাকে।